পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3е е তাহাকে ধরা পড়িতে হইত। যামিনীকে ধন্যবাদ দেওয়৷ উচিত কি না সে ভাবিয়াই পাইল না। এমন অবস্থায় কি করা উচিত, কিছুই তাঙ্গর জান ছিল না, সুতরাং পেয়ালাটি টানিয়া লইয়া সে নতমস্তকে পান করিতে লাগিল । মনের ভিতর তাহার যে-সঙ্গীত বাজিতে লাগিল বষ্টিরের চেহারায় তাহ বিন্দুমাত্র প্রকাশ পাইল না । নৃপেন্দ্রবাবু চ খাইতে থাইতে বলিলেন,"অবশেযে নসই আনতে হবে । তারা ও সব সময়ে সে খুব রিলায়েবল হয় ত নয়, যদি এ পরিচাস্ত হয় । হয়ত আমরা ঘুমটি দেখে, সেও দিব্যি ঘুম দেবে। এসব কেসে এতটা ‘রীস্ক' নে ৫য়া ও প্রতাপ বলিল, “সে ত ঠিক । আত্মীয়া কেউ হলেই সব চেয়ে ভাল হয় ।” নৃপেন্দ্রবাবু বলিলেন, “ত। আর পাচ্ছি কই ? বিপদের সময় সাহায্য করবে এমন আত্মীয় আমার কেউই নেই ।” প্রতাপ একটুক্ষণ কি যেন ভাবিয়া লইল, তাহার পর বলিল, “আমাকে দিয়ে যদি কোনে কাজ হয়, আমি খুব আনন্দের সঙ্গে করতে রাজী আছি । রাত্রে হলেই আমার পক্ষে ভাল, কারণ দিনে আমার অনেক কাজ থাকে।" নৃপেন্দ্রবাবু বলিলেন, “আপনি সারাদিন এত খাটেন, কতটুকু মাত্র আপনার বিশ্রামের সময়, সেটা ৪ কেড়ে নিলে আপনার উপর বড় অবিচার করা হবে।" প্রতাপ বলিল, “কিছুমাত্র না। রাত-জাগ অভ্যাস আমার খুব বেশরকমই গাছে। দু-ঘণ্টা ঘুমুতে পেলেই অামার ঢের হবে ।" নৃপেন্দ্রবাবু একটু থামিয়া বলিলেন, “যদি আপনার বেশ কষ্ট ন হয়, তাহলে আসবেন আজকেই । পোকাকে পড়াতে আসবার সময়ই বাড়িতে ব’লে আসবেন যে, রাত্রে এখানে থাবেন আর থাকবেন । বাড়ির ওদের কোনে অসুবিধা হবে না ত ?” কাহাদের কথা মনে করিয়৷ ভদ্রলোক এ কথা জিজ্ঞাসা করিতেছেন, প্রতাপ তাহা আন্দাজ করিয়াই শীতের দিনেও ঘামিয়া উঠিল। নতমস্তকে বলিল, “আমি কলকাতায় একলাই থাকি, আমার পিসিমার বাড়িতে। আমার মা ভাই, ব্লুেন, সকলে দেশে থাকেন।” এত কথা বলিবার তাহার কোনো প্রয়োজন ছিল না । 44 ، مسی: শক্ত । নিজের ఎ9ంతు | কিন্তু যামিনীও যদি নৃপেন্দ্রবাবু যাহ। ভাবিয়াছিলেন, তাহাই ভাবিয়া থাকে ? সৰ্ব্বনাশ! কিন্তু এ কথা প্রতাপের মনে আসিল না যে যামিনী যাহাই ভাবুক, প্রতাপের ভাগ্যের তাহাতে কিছু পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবন নাই । কিন্তু এ জগতে আশ অবিনাশী, বিশেষ করিয়া প্রেমিকের মনে । নৃপেন্দ্রবাবু বলিলেন, “তবে আজ রাত্রে আপনাকে একটু খাটাব । একটু রেস্ট না নিয়ে আর পারছি না । তথ। থাকবে আপনার সঙ্গে। ও বেশ চালাক চতুর, সব কাজই করতে পারে, খালি একজন চালিয়ে নেবার লোক থাকা দরকার ।" প্রতাপ বলিল, “বেশ । আজ শুধু কেন, যে ক'দিন দরকার আমি আসতে পারব।” নৃপেন্দ্রবাবু চা খায় শেষ করিয়া উঠিয়া পড়িলেন । বলিলেন “ধূকি, মনে রাখিস্ প্রতাপবাবু আজ রাত্রে এখানে খাবেন । দেপিস, ভূলে ঘাসনে যেন । তোর যা ভোল। মন |" যামিনী মৃদুকণ্ঠে বলিল, “ন বাবা, ভুলব কেন ? কাজের কথা আমি কবে ভূলি ?" প্রতাপকে ৪ বাধ্য হইয়। উঠিতে হইল । নৃপেন্দ্রবাবু উঠিয় পড়িয়াছেন, সে আর কি করিয়া বসিয়া থাকে ? তাহা ছাড়া স্কুলের ৪ তাহার বেলা হইয়া যাইতেছিল। রাস্ত দিয়! যাইতে যাইতে প্রতাপ ভাবিতে লাগিল, এই কয়টা দিনের ভিতরে তাহার জীবনের কি আমূল পরিবর্তন হইয়া গেল। যাহার আগে তাহার জগং জুড়িয়া ছিল, তাহারা কেমন করিয়া, কথন যে তাহার নিজেরই অগোচরে পিছনে সরিয়া গিয়াছে, তাহ প্রতাপ বুঝিতেই পারে নাই। নবাগত মহিমময়ী সম্রাজীকে যেন সকলে সভয়ে আসন ছাড়িয়া দিয়াছে। প্রতাপের মনোজগতে যামিনী ভিন্ন এখন আর কাহারও স্থান নাই, তাহার চিন্তা ভিন্ন আর কোনো চিন্তা নাই। এই য়ে অতি মধুর ধ্যান তাহার সমস্ত অস্তিত্বকে অধিকার করিয়া বসিয়াছে, কয়েকটামাত্র দিন আগে ইহার সম্বন্ধে সে একে- , বারেই অজ্ঞ ছিল। যাহা কিছুর জন্য সে এতদিন সংগ্রাম করিয়াছেসে সব এখন চেষ্টা করিয়া তাহাকে মনে আনিছে