পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$8 S99ఉు ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জ কোন বিদেশী শক্তির—সম্ভবতঃ জাপানের কিংবা চীনের—প্রভূত্বের অধীন হইয়া পড়িবে। আমেরিকার প্রতিপত্তি কমিবার আশঙ্কা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। যদি ফিলিপিনোর স্বাধীনতার যুদ্ধে আমেরিকাকে হারাইয়া দিয়া আমেরিকার অধীনতাশুস্থল ছিন্ন করিত, তাহ হইলে এ-কথা উঠিতে পারিত বটে, যে, আমেরিকার সামরিক শক্তি কমিয়া গিয়াছে । কিন্তু ফিলিপিনোদিগকে স্বাধীনতা দিবার প্রস্তাবের কারণ যুদ্ধে আমেরিকার পরাজয় নহে। তাহাদিগকে স্বাধীনতাদান ন্যায়সঙ্গত এবং আমেরিকার পক্ষে ও হিতকর ও সুবিধাজনক বুঝিয়। আমেরিকার বর্তমানে প্রবল রাজনৈতিক দল আলোচ্য আইন বিধিবদ্ধ করিবার চেষ্টা করিতেছে । ইহাতে ঐ বৃহৎ রাষ্ট্রের প্রতিপত্তি হ্রাস না পাইয়। বরং বাড়িবে। ফিলিপিনোর স্বাধীন হইলে, পরে তাহদের দেশ জাপান বা চীনের দ্বার কিংবা অন্য কোন প্রবল দেশের দ্বারা কবলিত হইতে পারে, এই আশঙ্ক সম্পূর্ণ অমূলক না হইলেও, পরদেশ-জয়ের প্রথাটা ক্রমশঃ পরিত্যক্ত হইয়া আসিতেছে, ইহা সত্য—জাপানকর্তৃক চীন জয় করিবার চেষ্টা সত্ত্বেও ইহা সত্য । সুতরাং আমেরিক ফিলিপিনোদিগকে স্বাধীনতা দিলেও আর কেহ তাহাদের দেশ দখল করিবেই, ইহা অবশ্যম্ভাবী বলা যায় না। তদ্ভিন্ন,"যেহেতু কোন-না-কোন জাতি ফিলিপিনোদের উপর দস্থ্যতা করিয়া তাহাদের দেশ দখল করিবেই, অতএব আমরা দসু্যতালব্ধ পরদেশ ফিলিপাইন্স ছাড়িয়া দিব না,” ইহ চোরডাকাতের মুখে শোভা পাইতে পারে, সভ্যতাভিমানী জাতির মুখে শোভা পায় না। দ্যায়সঙ্গত যাহা তাহা তোমরা কর, অন্যের ভবিষ্যতে কি করিবে তাহার জন্য তোমাদের অতিরিক্ত মাথাব্যথা ভণ্ডতার লক্ষণ। পাছে ফিলিপিনোর অন্য কোন জাতির অধীন হইয়া দুর্দশাগ্রস্ত হয়, তাহদের প্রতি দয়াবশতঃ এই আশঙ্কায় আমেরিক ফিলিপাইন্সের উপর আধিপত্য রক্ষা করিতেছে, ইহা নিছক মিথ্যা কথা । মুখের বিষয়, বৰ্ত্তম প্রবল আমেরিকান রাজনৈতিক দল পরোক্ষভাবেও এরূপ কোন মিথ্যা কথার প্রশ্রয় দিতে চান না । 哆 శ్రీ - శ్రీ ভারতবর্ষ ও ফিলিপাইন্স ফিলিপিনোর স্বাধীন হইলে তাহাতে পরোক্ষভাবে ভারতবর্গেরও হিত হইবে । অনেক ইংরেজ আছে—যেমন ভূতপূৰ্ব্ব রেভারেণ্ড ও বর্তমানে মিস্টার এডোয়ার্ড টমসন—যাহার বলে, ভারতবর্ষে ইংরেজ-রাজত্বের সমালোচনা করিবার অধিকার আমেরিকানদের নাই, কেন-না তাহারাও পরদেশ নিজেদের অধীন করিয়া রাখিয়াছে। ফিলিপাইন্স স্বাধীন হইয় গেলে এই ইংরেজদের মুখ বন্ধ হইয়। যাইবে । কিন্তু ফিলিপিনোর আমেরিকার অধীন থাকিতে কেন যে রেভারে গু ডক্টর সাগুলোগুের মত আমেরিকান ভারতবর্গের স্বাধীনতার পক্ষে দু-কথা বলিতে পরিবেন ন, তাই বুঝা কঠিন। আমেরিকান গবন্মেণ্ট বা ব্রিটিশ গবন্মের্ণ অন্যায়কারী হইলে ব্যক্তিগত ভাবে একজন আমেরিকন বা একজন ইংরেজ ন্যায়ের পক্ষ সমর্থন করিতে কেন অনধিকারী হইবেন ? ইহাও মনে রাখিতে হইবে, যে, সাণ্ডাল্যাণ্ড সাহেব ফিলিপিনোদিগকে আমেরিকার অধীন রাখার বিরুদ্ধেও লিখিয়াছেন । আর একটা কথা মনে রাখিতে হইবে । ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জ তেত্রিশ বৎসর হইল আমেরিকার অধীন হইয়াছে, ভারতবর্ষের কোন-না-কোন অংশ ইংরেজদের অধীন হইয়াছে প্রায় দুই শত বৎসর। সিপাহীবিদ্রোহকে যদি কোন ইংরেজ স্বাধীনতার যুদ্ধ মনে করে এবং সেই যুদ্ধে ইংরেজদের জয় ও মহারাণী ভিক্টোরিয়াকে ভারতসম্রাজ্ঞী বলিয়া ঘোষণা ভারতবর্ষে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভিত্তির শেষ দৃঢ় গাথুনী মনে করে, তাহ হইলে তাহাও চুরাশি বৎসরেরও অধিক দিনের কথা । যেদিক দিয়াই দেখা যাক, ফিলিপিনোরা যতদিন আমেরিকানদের অধীন আছে, ভারতীয়েরা তার চেয়ে অনেক বেশী দিন ইংরেজদের অধীন আছে। কিন্তু অল্পতর সময়ের মধ্যে আমেরিকানরা ফিলিপিনোদিগকে ভারতীয়দের চেয়ে বেশী রাষ্ট্ৰীয় অধিকার ও ক্ষমতা দিয়াছে, এবং তাঁহাদের দেশে ভারতবর্ষ অপেক্ষ শিক্ষার অধিকতর বিস্তার সাধন করিয়াছে। অতএব ং!