পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૮૨ ના {EE , এর বেশী আর কোন আকাঙ্ক্ষা তাদের নেই। তার উপর যদি দু-একটি মেয়ে রইল, তাহ’লে আর ভাবনা কি ? একেবারে আহার-নিদ্রা ঘুচে যাবে মেয়ের বিয়ের ভাবনায় । সমাজ হয়েছে অতি অপকৃষ্ট । অন্য দেশের ভাল কিছু নেবে না, নিজের দেশের ভাল যা-কিছু ছিল, তা ভুলে গেছে, বাকি কতকগুলো কুপ্রথা অঁাকড়ে খালি পড়ে t” প্রতাপ ভাবিল নৃপেন্দ্রবাবুর এ নিতান্তই অকারণ বলা কথা, কন্যাদায় কি জিনিষ তাহা তিনি জানেনও না এবং ইহজীবনে তাহ জানিবারও কোন সম্ভাবনা র্তাহার নাই। র্তাহার কন্যার জন্য কত মানুষে বরং আসিয়া তাহারই সাধ্যসাধনা করিবে। কাহার অদৃষ্টে সে অপূৰ্ব্ব রত্ব জুটিবে কে জানে ? প্রতাপের বুকের ভিতর হৃৎপিণ্ডটা যেন সশব্দে আছাড় থাইতে লাগিল । পাগলের মত এ সব যা-ত ভাবিয়া তাহার লাভ কি ? তবু নিজেকে কিছুতেই সে সংযত করিতে পারে না । মিহির খানিকক্ষণ এধার-ওধার অস্থিরভাবে ঘোরাঘুরি করিয়া, কখন এক সময় চট করিয়া ঘর হইতে বাহির হইয়া গেল। নৃপেন্দ্রবাবু নীরবে বসিয়া পান চিবাইতে লাগিলেন এবং প্রতাপ বসিয়া আকাশ-পাতাল ভাবিতে লাগিল। পাশের ঘরে চাকরের সশবে বাসনকোসন সরান, টেবিল পরিষ্কার করা প্রভৃতি নিত্য কৰ্ম্মগুলি করিয়া যাইতে লাগিল । ছোট্ট, আসিয়া খবর দিল, আয় খাইবার জন্য নীচে আসিবে, এখন বাবুর একবার উপরে যাওয়া দরকার। নৃপেন্দ্রবাবু হাই তুলিয়া উঠিয়া পড়িয়া প্রতাপকে বলিলেন, "চলুন, যাওয়া যাক। আজ রাত্রে আপনার একটু দুঃখভোগ আছে। সারা রাত জাগতে হবে না, শেষের দিকে আমি এসে আপনাকে রিলিভ করব-এখন " প্রতাপ বলিল, “তার কিছু দরকার নেই। একরাত জাগা আমার পক্ষে মোটেই বেশী কিছু নয়। মেসে, হোষ্ট্রেলে যখন থেকেছি তখন কারও অস্থখ-বিমুখ হ’লে আমি অন্তের পালাতে ইচ্ছে ক’রে নিজে জেগেছি। রাতে ফু আমার কম। গরমকালে ত রাতের পর রাতzমিয়ে কাটিয়ে ३ि ** - S99āు নৃপেন্দ্রবাবু বলিলেন, “আপনার ছাত্রটিকে যদি কম ঘুমনোর বিদ্যাটা একটু শিখিয়ে দেন ত মন্দ হয় না। বেশী ঘুমনোর জন্তে সে তার মায়ের কাছে প্রায়ই বকুনি খায় ।” উপরতলায় দুজনে উঠিয়া আসিলেন। গৃহিণীর ঘরের দরজা খোলা, তবে রঙীন মোট পর্দায় আবৃত। আয় কিস্মতিয়া পরদাটা ধরিয়া দাড়াইয়া ছিল, নৃপেন্দ্রবাবুকে দেখিয়াই পরদা ছাড়িয়া ধীরে ধীরে সিড়ি দিয়া নামিয়া গেল । ল্যাশুিঙে একটি ছোট টেবিল এবং তাহার সামনে একটি ইজিচেয়ার । নৃপেন্দ্রবাবু বলিলেন, “এইখানে বসে বিশ্রাম করুন, আয়া আধঘণ্টার মধ্যেই আসবে। এই কাগজটায় কখন কি দিতে হবে সব লেখা আছে, তাকে ব’লে ব’লে দিলেই সে সব ঠিক ক’রে যাবে। ঘুমিয়ে পড়ার উৎপাত ওর নেই, ভগবান ওকে ঘুম জিনিষটা দিতে একেবারেই ভুলে গেছেন। আপনাকে বই-টই কিছু পাঠিয়ে দেব ?” প্রতাপ তাড়াতাড়ি বলিল, “ন, না, কিছু দরকার নেই। পড়তে গেলেই বরং আমার বেশী ক’রে ঘুম পাবে।” নৃপেন্দ্রবাবু বলিলেন, “আচ্ছ, তবে আমি খোকার ঘরে একটু শুয়ে পড়ি গে। দরকার হ’লেই আমাকে ডাকৃবেন।” তিনি মিহিরের ঘরের দরজা খুলিয়া অদৃশ্য হইয়া গেলেন । প্রতাপ ইজিচেয়ারে বসিয়া এধার-ওধার তাকাইয়া দেখিতে লাগিল । আর একদিন সে উপরে উঠিবার সুযোগ পাইয়াছিল বটে, কিন্তু সেদিনকার দারুণ উদ্বেগ ও উত্তেজনায় কোনদিকে আর তাকাইয়া দেখে নাই। তাহার পাশেই বড় ঘরখানি গৃহিণীর ঘর বুঝাই গেল, সামনে যেখানে নৃপেন্দ্রবাবু চুকিয় গেলেন, তাহা মিহিরের ঘর। আর বাম দিকের ঐ যে ঘরখানি, যাহার রেশমী পরদার ভিতর দিয়া আলোর ধারা রঙীন হইয়া ল্যাণ্ডিঙে ছড়াইয়া পড়িতেছে, উহাই কি যামিনীর ঘৱ ? কোন সাড়াশৰ নাই, যামিনী কি জাগিয়া আছে { ঘুমাইতেছে? জাগিয়াই আছে বোধ হয়, না ইলু