পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sur々 555శు কোথাও কেহ ওলাউঠায় ভূগিতেছে, কাহারও ম্যালেরিয়া, কেছ ষ। জমিদারের অত্যাচারে সর্বস্বাস্ত । কোথাও একদল অনাথ শিশুকে দেখিবার কেহ নাই। কাহারও বা পৃথিবীর সর্বশেষ সম্বল একখানি খড়ের ঘর দুইদিন হইল আগুনে পুড়িয়া ভস্মাবশেষ হইয়া গিয়াছে। কাহারও জন্য কিছুই তৎক্ষণাৎ করিতে পারিল না, কিন্তু মুরিয়া ঘুরিয়া স্বভত্ৰ সকলের সংবাদ লইল । যে মেয়েটি ওলাউঠায় ভূগিতেছিল তাহার স্বামী কিছুতেই স্বভত্রের সঙ্গ ছাড়িতে চাহিতেছিল না, স্বভদ্র তাড়া দিয়া তাহাকে ফিরিয়া পাঠাইল । তারপর অজয়কে ইস্কুল দেখাইল, ছেলেদের খেলিবার মাঠ, ধ্বসিয়পড়া বহুপ্রাচীন দেবমন্দির, রথতলা। কিন্তু অজয় সে-সমস্ত কিছুই দেখিল না, তাহার সমস্ত চৈতন্য জুড়িয়া চতুৰ্দ্দিকৃকার নগ্নত, নিঃস্বত, ব্যাধিজীৰ্ণতা কি এক আসন্ন অকল্যাণের আভাসের মত নিদারুণ অবসাদের স্বরে বাজিতে লাগিল। অদৃষ্টের কাছে আত্মসমর্পণ করিয়াছিল, স্বল্প পরিচয়েই স্বভত্রকেও তাহার ভাল লাগিয়াছিল, কিন্তু এই পীড়িত পল্লীর বাতাসে তাহার নিঃশ্বাস রুদ্ধ হইয়া আসিতেছিল। যত শীঘ্র সম্ভব খাওয়া-দাওয়া সারিয়া গ্রাম ছাড়িয়া চলিয়া যাইবে স্থির করিয়া সুভদ্রকে তাড়া দিয়া সে বাড়ী ফিরাইয়া লইয়া আসিল । দীঘির ঘাটে জনসমাবেশের মধ্যে গা খুলিতে পরিবে ন, এজন্য সেদিন আর স্বান করিল না। ছুটিতে যতদিন দেশের বাড়ীতে থাকে, তোলা জলে স্নান করা তাহার অভ্যাস । খাইতে বসিয়া মনের অন্ধকার অচিন্তিত উপায়ে অনেকখানি কাটিয়া গেল। লক্ষ্য করিল, যে-দুইখানি হাত অন্ন পরিবেষণ করিতেছে তাহদের মধ্যে স্নিগ্ধতা যেন আর ধরিতেছে না। পা-দুইখানি হগঠিত স্বন্দর স্বড়োঁল, আর তাহাদের মধ্যে এমন একটি জিনিষের প্রকাশ আছে যাহাতে মাথা আপন হইতেই সেই কুহুম-কোরকের মত অঙ্গুলিরাজির উপর লুষ্ঠিত হইতে চায়। মাথা নীচু করিয়াই যতটুকু সে দেখিতে পাইল, তাহাতেই তাছার মনে হইল, কি এক অপরিসীম স্বদ্ধতার তুপত সেই দেহটিকে আপনার স্বামল দীপ্তিতে বেষ্টন করিয়া রহিয়াছে। তাহার অন্নে চক্ষের নিমিষে অমৃতের স্বাদ কোথা হইতে আসিয়া লাগিল । সুভদ্র সকালে প্রভা প্রভা বলিয়া ডাকিয়াছিল, নিজের মনে নামটা সে কয়েকবার উচ্চারণ করিল। হঠাৎ শুনিল, সুভদ্র বলিতেছে, “আমিও আজকেই যাব ঠিক করেছি, বাবা।” তাহার পিতা হাতের গ্রাস মুখের কাছে ধরিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “আজকেই ? কিন্তু ভাইফোটার ত আর দেরী নেই ?” বাড়ীতে মুভদ্রের প্রতিপত্তি সাধারণ ছিল না। সুদর্শন ছাড়া তাহার কথার উপর সহজে আর-কেহ কথা কহিত না। কিন্তু তখন ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার আর পাচ-ছয় দিন মাত্র বাকী, প্রভা তখন হইতেই নানাভাবে সেজন্য প্রস্তুত হইতেছে, ছুটি ফুরাইতেও বেশ কিছুদিন দেরি। তাছাড়া কলিকাতায় স্বভদ্রের পড়াশোনা নামে মাত্রই, রোগী দেখা এবং রোগ সম্বন্ধে গবেষণায় সে সময় কাটায় তাহার দশগুণ। এ-সমস্ত জড়াইয়া হঠাৎ চলিয়া যাওয়ার প্রস্তাবট স্বভদ্রের নিজের কানেও অত্যন্ত দুরূহ শোনাইল । কিন্তু হৃদয়ের শাসন মানিয়া চলা কোনও কালে তাহার স্বভাব নহে, সে কখন কেন যে কি করে হৃদয়বান লোকে সেইজন্যই তাহার অর্থ খুজিয়া পায় না। হাতের গ্রাসট নামাইয়া রাখিয় তাহার পিতা আবার কহিলেন, “প্রভাকে বলেছ ?” স্বভদ্র কহিল, “প্রভা জানে, মাকেও বলেছি।” তাহার পিতা কহিলেন, "আচ্ছ।” কিন্তু বেশ বোঝা গেল, ইহার পর আর তাহার আহারে রুচি রহিল না । খাওয়ার পর স্বভদ্র নিজের ঘরে প্রভাকে ডাকিয়া অজয়ের সঙ্গে আলাপ করিয়া দিল। পিতা দেখিতে না পান সে-বিষয়ে বিধিমত সতর্কতা অবলম্বন করিল। প্রভা কহিল, "দাদা বৃথাই পুরুষ-মানুষ, অল্পেতেই এত ভয় পায় ।” অজয় সঙ্কোচ কাটাইয়া মুখ তুলিয়া চাহিতেই একটি শ্যামল গভীর দৃষ্টির স্নিগ্ধতা, তাহার দৃষ্টিকে অভিনন্দিত, করিল। সে বুঝিল না, সেই মুখটিতে, সেই দৃষ্টির ཨཱ་ཨཱ་ § 3. *g,