বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Woo a {{Pপ্রবাসনী ; S994ు সেকালে বঙ্গের ইংরেজ শাসনকর্তারা বাংলা প্রেসিডেন্সীকে এই প্রকারে শোষণ করার প্রতিবাদ করিতেন। ১৭৬৮ সালে গবৰ্ণর ভেরেলষ্ট লিখিয়াছিলেন – “প্রত্যেক তরফ হইতে এই প্রেসিডেন্সীর উপর যে টাকার দাবি করা হইয়াছে, তাহাতে ইহার খাজানাখানার টাকা বড় কমিয়া গিয়াছে, এবং এই অঞ্চল হইতে এত বেশী অর্থ রপ্তানীর অবশ্যম্ভাবী ফল আমাদিগকে ভীত করিয়াছে।” পূর্বেই বলিয়াছি, কোম্পানীর আমলে প্রথম প্রথম বাংলা প্রেসিডেন্সী বলিতে বিহার-উড়িাও বুঝাইত, এবং পরে ১৮৩৫ পর্যন্ত এলাহাবাদ প্রদেশও বুঝাইত। কিন্তু বরাবর খাস্ বাংলা হইতেই বেশী রাজস্ব আদায় হইত। ১৮৬১ সালেও বঙ্গের রাজস্ব শোষণ চলিতেছিল। বাংলার তাৎকালিক ছোটলাট জন পীটার গ্র্যান্ট লেখেন : “ভারতে ব্রিটিশ-সাম্রাজ্যের আরম্ভ হইতে এই রেওয়াজ চলিয়া আসিতেছে, যে, বাংলাকে সাম্রাজ্যিক রাজস্বের তাহার হায্য অংশ অপেক্ষ বেশী দিতে হয়, এবং সৈন্যদলদ্বারা রক্ষণাবেক্ষণ, পুলিস, রাস্তা ও অন্যান্য পূৰ্ত্তকাৰ্য্য, ইত্যাদি বাবতে তাহাকে সামাজ্যিক তহবিল হইতে তাহার হায্য পাওনার সিকিও প্রতিদান করা হয় না । তিনি এই অবশ্যম্ভাবী রীতি তখনও প্রচলিত দেখিতেছেন, এবং যে-প্রদেশের সহিত র্তাহার সম্পর্ক তাহার পক্ষে অনিষ্টকর প্রণালীবদ্ধ ("systematic” ) এই সকল বৈষম্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করিতেছেন।” বঙ্গের প্রতি অবিচারের কথা লর্ড কারমাইকেল প্রভৃতি গবর্ণরেরাও বলিয়াছেন, কিন্তু কোন ফল হয় নাই। ভারতবর্যের অন্যান্য প্রদেশের লোকের এই অবিচারের প্রতিকার-চেষ্টায় আমাদের সহিত যোগ দিবে, এরূপ অশা নাই বলিলেই চলে। বাঙালীকেই ইহার জন্য লড়িতে হইবে । সমগ্রভারতের স্বাধীনতালাভ প্রচেষ্টায় যোগ দেওয়া রাষ্ট্রনীতি-ক্ষেত্রে অবশ্ব বাঙালীর প্রথম ও সৰ্ব্বপ্রধান কৰ্ত্তব্য। রাজস্ব বিষয়ে এবং ভারতবর্ষীয় ব্যবস্থাপক সভায় যথেষ্ট প্রতিনিধির সম্বন্ধে বাংলার প্রতি ন্যায্য ব্যবহার পাইবার চেষ্টা কুরা কেবল ঐ প্রধান কৰ্ত্তব্যেরই নিম্নস্থানীয়। “যে-কোন এবং প্রত্যেক উপায় অবলম্বন” বাংলা গবন্মেণ্টের সরকারী গেজেট কলিকাতা গেজেটে গত ২৮এ এপ্রিল নিম্নমুদ্রিত বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশিত হইয়াছে :– In exercise of the power conferred by subsection (1) of Section 13 of the Bengal Criminal law Amendment Act, 1930, the Governor-in-Council is pleased to make the following rule: . . . If any detenu under the Bengal Criminal Law Amendment Act, 1930, disobeys or negle ts to comply with any order made, direction given or condition prescribed by virtue , of any rule, made under Section 13 of the said Act, the authority which made the order, gave the direction or prescribed the condition, may use any and every means necessary to enforce compliance with such order.” - বিনা বিচারে যাহাদিগকে জেলে বা অন্যত্র আটক করিয়া রাখা হয় তাহাদিগকে “ডেটেন্ডু" বলা হয় । এই ডেটেল্পদিগকে কর্তৃপক্ষের ভুকুম, নির্দেশ, ও নিয়ম পালন করিতে বাধা করিবার নিমিত্ত সকৌন্সিল গবর্ণর বাহাদুর এই নিয়ম জারি করিয়াছেন। আমাদের বিবেচনায় ডেটেকদিগকে আজ্ঞাতুবন্ত্ৰী করিবার নিমিত্ত্বে তাহাদের উপর ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তিকেই তাহার স্বেচ্ছাতুরূপ কাৰ্য্য করিবার এরূপ অনির্দিষ্ট পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া উচিত হয় নাই । এরূপ ক্ষমতা দেওয়া না-থাকা সত্ত্বেও হিজলীতে যেরূপ কাগু ঘটিয়াছিল, তাহ সরকারী অমুসন্ধান-কমিটীর রিপোর্ট অনুসারেই অতি ভীষণ— তদ্বিষয়ক বেসরকারী সংবাদ ও গুজব না-ই ধরা গেল । গবন্মেণ্ট যেরূপ পূর্ণ ক্ষমতা দিলেন, তাহার ফলে হিজলীর কাগু অপেক্ষাও গুরুতর কিছু ঘটিতে পারে না কি ? সার্কাসের বন্ত ও হিংস্র পশুদিগকে হুকুম মানাইবার জন্য যে-কোন উপায় অবলম্বিত হইতে পারে বটে ; কিন্তু পশু ও অন্ত ইতরপ্রাণীদের প্রতি নিষ্ঠুরতা নিবারণের জন্য যে-আইন আছে, সার্কাসের পশুশিক্ষাদাতারা তাহা লঙ্ঘন করিলে তাহাজের দণ্ড হয়। সুতরাং গবন্মেস্ট যদি প্রপূরক আর একটি নিয়ম জারি করেন, যে, ডেটহুদের উপর ক্ষমতাপ্রাপ্ত “কতৃপক্ষ” পশুদের প্রতি নিষ্ঠুরতা নিবারণের আইন মানিতে বাধ্য থাকিবেন, তাহা হইলে ভাল হয় ।