পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سbأوون) পথে ঐ গ্রাম পড়েছিল । আর আমাদের যে কাজ, রেলের ধার ছেড়ে অনেক দূর যেতে হয় । বনবিহারী আর কথা কহিল না, আর একটা সিগারেট ধরাইয়া টানিতে লাগিল। গঙ্গাধর যেন আপনার মনে আস্তে আস্তে বলিল,—সেখানে একটা ভয়ানক কথা শুনলাম । বনবিহারী কোন কথা কহিল না, সিগারেটের ধোয়৷ গঙ্গাধরের মুখের দিকে বাহির করিতে লাগিল । গঙ্গাধর বিরক্তি প্রকাশ করিল না। পূৰ্ব্বের মত কহিল,—গ্রামের কাছে না কি মোটরে আগুন ধ’রে দুটো লোক পুড়ে মরেছিল ? মুখের ধোয় বাতির করিয়া, দাত বাহির করিয়া, বনবিহারী বলিল,—অমন কত মরে । দু-জন মরেছিল, তোমরা ঠিক শুনেছিলে, বুঝলে কি-না ? হরিনাথ ক্রমাগত বনবিহারীকে দেখিতেছিল । গঙ্গাধর বলিল,—ত ঠিক বলতে পারি নে। কেউ কেউ বলছিল একজন রক্ষে পেয়েছে। কত দিনকার কথা, লোকের ঠিক মনেও না থাকতে পারে। হঠাৎ হরিনাথ কথা কহিল। গঙ্গাধরকে বলিল,—ঐ রকম কি একটা কথা আমরা কলকেতায় শুনেছিলাম, না ? কারা না কি বলেছে ঠিক খবর পেলে অনেক টাকা দেবে ? গঙ্গাধর বলিল,—আমারও মনে পড়চে বটে। বনবিহারী মুখের সিগারেটের শেষটুকু ফেলিয়৷ দিয়া বলিল,—পুড়ে মরেছে তার আবার খবর কি, বুঝলে কি-না ? যদি একজন রক্ষে পেয়ে থাকে তাহ’লে সে ঘরে ফিরে গিয়ে থাকবে । হরিনাথ বলিল,—তাহ’লে কেউ টাকা দিতে চাইবে কেন ? হয়ত সে ঘরে ফিরে যায়নি । বনবিহারী তাহার চাপা হালি হাসিল । মাথা নীচু করিয়া, কোমরে হাত দিয়া গলার ভিতর কি রকম একটা শব্দ করিল। বলিল,—রক্ষে পেয়েছে অথচ ঘরে ফিরে যায়নি, বেড়ে মজার কথা, বুঝলে কি-না? মাঝখান থেকে কারা হয়ত লোপাট করেচে। --তার মানে কি? - ... * * S99áు —মানে গঙ্গাজল , এই ধর না, সে যদি মেয়েমানুষ হয়, বুঝলে কি-না ? এমন মাল পেলে কে আবার ফিরে দেয় ? হরিনাথের মুখ লাল হইয়া উঠিল, গঙ্গাধর তাহাকে চোখ টিপিল। ঠিক এই সময় গাড়ি মোসিনগঞ্জে আসিয়৷ পছছিল । বনবিহারী বাক্স টানিয়া লইয়া নামিল । একটা মুটের মাথায় বাক্স চাপাইয়া দিয়া চলিয়া গেল। হরিনাথ ও গঙ্গাধরও সেই ষ্টেশনে নামিল। তাহাদের সঙ্গে দুইটা ব্যাগ ছিল । একটা মুটেকে জিজ্ঞাস করিল,—এখানে কোথাও বাসা পাওয়া যাবে ? মুটে বলিল,—ই বাবু, লবীন ঘটকের বাড়ি বাসাঘর পাবে । ষ্টেশনের বাহিরে আসিয়া লোকটা নিশ্চয় কিছু জানে । গঙ্গাধর বলিল,—তাতে আর কোন সন্দেহ নেই, আর লোকটা মার্কা-মারা । বুঝলে কি-না’র খোজ করলেই ওকে পাওয়া যাবে। হরিনাথ বলিল,—ও উনবিংশ পরিচ্ছেদ প্রভাবতীর সিদ্ধান্ত একবার সেই যে প্রভাবতীর সঙ্গে দেখা হইয়াছিল, কলবাহিনী চঞ্চল লীলাময়ী জাহ্নবীতটে লুষ্ঠিতঅঞ্চল স্বাগতার সহিত কথোপকথনে নিরত, তাহার পর আর তাহাকে দেখিতে পাওয়া যায় নাই। প্রভাবতী দেখিতে শুনিতে ভাল, স্ববুদ্ধি, কিন্তু এখন সে নিতান্ত আড়াল পড়িয়াছে। কেবল যে অন্তঃপুরবাসিনী সে কারণে নয়, ঘটনাস্রোত তাহাকে এক পাশে রাখিয়া বহিয়া যাইতেছিল, তরঙ্গের উচ্ছ্বাস বা জলকণা তাহাকে স্পর্শ করিতেছিল না। প্রভাবতীর কলিকাতায় অনেক দিন থাকা ঘটে নাই। শাশুড়ীর সঙ্গে গ্রামে ফিরিয়া গিয়াছিল । তাহার কয়েক দিন পরেই শুনিল হরিনাথ আর গঙ্গাধর আবার কোথায় চলিয়া গিয়াছে। গঙ্গাধরের একখানা চার ছত্রের চিঠি, লিখিয়াছে চিঠিপত্র বরাবর লিখিতে পারবে না, মা যেন 'ম! ভাবেন। কোথায় যাইবে কোথায় থাকিবে তাহার