পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৬ S99డు লোকেরা যখন জিজ্ঞাসা করিবে যে, মহারাজ অনস্তযুশের স্বভাৰ্মিত কি, তিনি কোন ভাল কথা বলিয়া গিয়াছেন ? তখন আমরা কি বলিব ? তিনি বলিলেন ‘এই কথা বলিতে হইবে—মহারাজ অনস্তত্বশ চারিটি মহাদ্বীপের রাজৈশ্বৰ্য্য লাভ করিয়াছিলেন। র্তাহার কোনে মনোরথ ব্যর্থ হয় নাই । সমস্ত বিষয় উপভোগ করিয়াছিলেন। ইন্দ্রের অৰ্দ্ধাসন লাভ করিয়াছিলেন । কিন্তু তথাপি তৃষ্ণ র্তাহাকে পরিত্যাগ করে নাই। কামোপভোগে অতৃপ্ত থাকিয়াই তিনি মৃত্যু লাভ করিয়াছেন । সুতধারা দিয়। অগ্নিকে শাস্ত করিতে গেলে তাহ শান্ত না হইয়। আর ৪ প্রবল হইয় উঠে । তেমনি বিষয়ভোগের স্বারা বি7য়ত্বঞ্চাকে নিবৃত্ত করিতে গেলে তাহ নিবৃত্ত না হইয়। বরং আরও বাড়িয়াই চলে । এবং ইহা যতই বাড়ে দুঃখ অশান্তি ও ততই বাড়ে । এই তৃষ্ণ এত অনর্থ করে বলিয়াই ইহাকে রিপু ব৷ শত্ৰু, মহাশ ফ্ল বলিয়৷ উল্লেখ করা হয়। কেবল তাহাই নহে, ইহাকে সাক্ষাৎ মৃত্যুই বলা হয়। মৃত্যুর অপর নাম মার। মৃত্যু ৪ মার শব্দের কেবল আকারে ভেদ, অর্থে কোনো ভেদ নাই। বুদ্ধদেব যতক্ষণ এই মারকে বিজয় করিতে পারেন নাই । ততক্ষণ র্তাহার বুদ্ধত্ব লাভ হয় নাই । এই মারের সঠিত তাহাকে তুমুল সংগ্রাম করিতে হইয়ছিল । তিনি তাহাকে পরাভূত না করিয়া থাকিতে পারেন নাই, কারণ তিনি বুঝিয়াছিলেন, এবং ঠিকই বুধিয়ছিলেন, সমস্ত দুঃখের মূল ঐ মার। মরকে সংহার করিতেই হইবে । তিনি তা হাতে সমর্থ হইয়াছিলেন । বুদ্ধের এই মার-বিজয় তাহার জীবনের বার্তাহার প্রচারিত ধর্মের মূল তত্ত্ব, পরম তত্ত্ব। তাই তাহার জীবনচরিতে এই ঘটনাটিকে অতি প্রধান স্থান দিয়া বর্ণনা করা হইয়াছে, এবং ভাহা খুবই ঠিক করা হইয়াছে । কঠোপনিষদে সাক্ষাৎ যমের সহিত নচিকেতার সংবাদে এই তত্ত্বটিই বিভিন্ন ভাষায় ও বিভিন্ন আকারে বল। হইয়াছে। ভোগেচ্ছার ক্ষয় ন হইলে শিবকে পাওয়া যায় না। তাই মদনভস্ম হওয়ার পূৰ্ব্বে পাৰ্ব্বতীর শিবের সহিত ধোগ হয় নাই। এ কথা কুমারসম্ভবের পাঠকের জানেন । মারকে মৃত্যুকে ভস্ম করিয়াছিলেন বলিয়াই মহাদেব মৃত্যুঞ্জয় । মৃত্যুঞ্জয় ও মারজিৎ একই, তাই বুদ্ধদেবকে যখন মারজিং বলা হয় তখন বুঝিতে হয় ধে তিনি মৃত্যুঞ্জয় । মদনভস্ম ন হইলে যে, বস্তুত মঙ্গল হয় ন। কালিদাস অভিজ্ঞানশকুন্তলে তাই স্বম্পষ্ট দেখাইয়। গিয়াছেন। দুৰ্য্যন্ত ও শকুন্তলা প্রথমে মদনের প্রেরণায় মিলিত হইয়াছিলেন, কিন্তু তাহ কল্যাণের জন্য হয় নাই বরং তাঁহাতে অকল্যাণই দেখ। গিয়াছিল। কিন্তু পরে যখন উভয়েরই হৃদয় মদনের প্রভাব হইতে সম্পূর্ণ মুক্ত, তখন তাহদের শুভসং{ে{গ দেখা গিয়াছিল । হৃদয় হইতে তৃষ্ণর ক্ষয় হইলেই মুক্তি, ভারতের সাধনার আগাগোড় সৰ্ব্বত্রই পুনঃপুন এই কথাই দেখিতে পাওয়া যায়। যেমন সমস্ত নদীর একমাত্র দিকে গতি, তেমনি দেখা যায় ভারতীয় সমস্ত সাধনায় সমুদ্রেরই গতি একমাত্র এই দিকে—ত সে সাধন বৈদিকই ইউক আর অবৈদিকই হউক। বিস্তুত আলোচন। এখানে সম্ভবপর নহে। আমি আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে বুঝিছি তাঁহারই উল্লেখমাত্র করিলাম । ঘাঁহাই হউক, এই তৃষ্ণার ক্ষয়ের যেরূপ જુનિ.નફે অধিকাংশ লোকের মনে একট। আতঙ্কের ভাব হয় ; কথা| মলে হয় তবে তো সবই গেল, কিছু ভোগ করা হইল না, অথচ মন চায় ভোগ করিতে ; তবে তে| চারিদিকের এই সর-বাড়ী, লোক-জন, আত্মীয়-স্বজন, স্ত্রী-পুত্ৰ, ধন-ধান্ত সবই ছাড়িয়া দিয়া সন্ন্যাসী সাজিয়া বনের মধ্যে গিয় বাস করিতে হয় । তাহতে সুখ কোথায় ? অপর পক্ষে, যাহারা তত্ত্ববিদ, র্যাহারা সাধন করিয়৷ ভাবিয়া-চিন্তিয় দেখিয়া-শুনিয়া বস্তুতত্ত্বকে প্রত্যক্ষ অনুভব করিয়াছেন, তাহfর বরিবার বলিতেছেন, তাপত্তচিত্তে বিষয়-সম্ভোগ করিয়! ধৃত রকমের যত সুখই পাওয়া ধায়, ব। স্বগে সুত রকম যত মুখ হয়, ঐ উভয় প্রকারই মুখ তৃষ্ণণক্ষয়জনিত মুখের যোল ভাগের এক ভাগেরও সমান নহে । গুড়, চিনি, মধু, সন্দেশ সবই মধুর, কিন্তু সবই একরূপ মধুর নহে, প্রত্যেকেরই মাধুর্য্য ভিন্ন-ভিন্ন । এখানে যদি সরস্বতীকেও প্রশ্ন করা যায় যে, ঐ জিনিসগুলি কেমন মধুর, আর উত্তর দিবার জন্য তঁহাকে সহস্র বংসরও সময় দেওয়া হয়, তবে তিনিও পৃথক পৃথকৃ করিয়া বলিয়া দিতে পরিবেন না, গুড় এইরূপ মধুর,