ভাত্র গণ্ডগোল বাধেই । নৃপেন্দ্রবাৰু উপস্থিত থাকিলে তাহ বেশীদূর অগ্রসর হয় না, তিনি তাড়া দিয়া থামাইয়। দেন। না হইলে যামিনীর চোখে প্রায় জল আসিয়। দায় । মা, থাকিলে মিহিরকে বড় বেশী কড়া শাসনে থাকিতে হয়, এখন যেন মিহির যামিনীর উপর দিয়া তাহারই শোধ তুলিতেছে । আজ পিতা পুত্রে এক সঙ্গে খাইতে আসাতে যামিনীর আর বেশী ভোগ ভূগিতে হইল না। নৃপেন্দ্রবাবু জিজ্ঞাসা করিলেন, “তোমাকে বড় শুকনো দেখাচ্ছে যে মা, শরীর “ক ভাল নেই ?” ঘামিনী বলিল, “ন। বাবা, শরীর ত কিছু খারাপ নেই । ঢাক্তার নন্দীকে কি পুরীতে যাওয়ার কথ। কিছু বলেছ ?” নৃপেন্দ্রবাবু বলিলেন, “বলেছি, তবে তিনি এ সপ্তাতে মতে পারবেন না। ভয়ের বিশেষ কারণ নেই বলছেন, নতন দু-তিনটে ওষুধ লিখে দিলেন, সেগুলো আজ পাঠাচ্ছি, দেখি খেয়ে কেমন থাকেন। একলা থাকার দরুণ নাভাস হয়ে পড়েছেন আর কি ? উপায় থাকলে একবার গিয়ে দেখে আস্তাম।” যামিনী বলিল, “সকলে মিলে গেলে হয় একবার ।” নৃপেন্দ্রবাবু বলিলেন, “সে কি আর সম্ভব । তোমাদের সব পড়া কামাই হবে, তোমার মা তাতে বরং আরও বিরক্তই হবেন ।” নৃপেন্দ্রবাবু চলিয়া গেলেন, মিহির ও মিনিট পাচেক পরে বিদায় হইল। যামিনী স্বান করিতে উপরে চলিয়া গেল । দুপুর বেলাট খানিক ঘুমাইয়া খানিক পড়াশুনা করিয়। তাহার এক রকম কাটিয়া গেল। কিন্তু ঘড়িতে তিনটা বাজিয়া যাওয়ার পরেই আবার তাহার মন অস্থির হইয়া উঠিল । সময়ট আর যেন কাটিতে চায় না। বার যে সে উপর-নীচ করিল, জানালার পরদা সরাইয় নীচের রাস্তাট। দেখিয়া আসিল, তাহার আর ঠিক ঠিকানা নাই। হতভাগ চাকরগুলার দিবানিদ্রার ঘটা দেখ না, এখনও তাঁহাদের উঠিবার সময় হইল না । সমস্ত বাড়িটার ভিতর যামিনী একলা জাগিয়া । মিহির এই স্কুল হইতে আসিয়া পড়িল বলিয়া, তাহার পর চা জলথাবার ঠিক না কত गोङ्घ-क्षण ৬৫৩ পাইলে সে যামিনীরই প্রাণ অতিষ্ঠ করিয়া তুলিবে । কিন্তু ঘড়িতে সাড়েতিনটাও যেন আর বাজিতে চাহে না, ঘড়ির কাট। দুইটাও কি নড়িতে ভুলিয়া গিয়াছে। নিজের অধীরতায় নিজেই লজ্জিত হইয়া যামিনী শেষে চেয়ার টানিয়া বসিয়া পড়িল । একখানা বই খুলিয়া পড়িতে আরম্ভ করিল। ইহার দশ পৃষ্ঠা সে পড়িবেই, ত একলাইনও তাঙ্গার ভাল লাগুক আর নাই লাগুক, একটা বর্ণও তাহাব মস্তিষ্কে প্রবেশ করুক আর নাই দশ পুষ্ট! শেষ হ ওয়ার আগে ঘড়ির দিকে সে একবার ৪ তাকাইলৈ না । যাক, এই উপায়ে সময় খানিকট। কাটিয়া গেলই । যামিনীর পড়া শেষ হইবার আগেই নীচে কলঘরে হুড়হুড় করিয়া জল পড়িতে লাগিল, ভজহরি ও ছোট্ট র সড়ি পাওয়া গেল, এবং যামিনী বই তুলিয়। রাখিতে-নারাথিতেই মিহিরের পায়ের শব্দে সিড়ি মুখরিত হইয় डेन्जेिल । বই খাত। বিছানার উপর ছুড়িয়া ফেলিয়। মিহির তাহার দরজার কাছে আসিয়া চীংকার করিয়৷ ডাকিল, “দিদি, চা খেতে আসবে না ?" যামিনী বলিল, “তুই বা । ছোট তোকে চা দেবে এখন । আমি যাচ্ছি একটু পরে " জানালার কাছে পথের দিকে একদৃষ্টে তাকাইয়। সে দাড়াইয়া রহিল। কিন্তু যাহার প্রত্যাশায় তাহার বিশাল চক্ষু দুইটি আগ্রহাকুল হইয়া উঠিয়াছিল, তাহার দেখা মিলিল না। চাবিট বাজিল, ক্রমে সাড়ে চারিটাও বাঞ্জিয় গেল, প্রতাপের দেখা নাই । যামিনীর চোপে জল আসিয়া পড়িল, বুকের ভিতরটা ব্যথায় মোচড় দিতে লাগিল । ইংরস্ত্রেীতে পড়িয়াছিল, “the course of true love never did run smooth,” Roso SIRTÉ 1 zoo হইতে শুধু নিরাশা আর বেদন, ইহার অবসান কোথায় হইবে কে জানে ? যামিনীর আর দাড়াইতে ইচ্ছা করিল না, ধীরে ধীরে গিয়া সে নিজের বিছানায় শুইয়া পড়িল । কতক্ষণ এইভাবে সে পড়িয়া ছিল, তাহা তাহার নিজের ধারণ ছিল না । হঠাৎ শুনিল দরজার নিকট করুক |
পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৭৩
অবয়ব