পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Verš. S99āు কহিতেছে—“হাড় কখানা গঙ্গায় দি ভাই !" একটু থামিয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, “কবে মরেছেন ? সৎকার করলে কে ?” সাধন সহজ ভাষায় কহিল, “হপ্ত থানেক !” তাহার পর মৃত্যুর একটা সংক্ষিপ্ত বিবরণ আমাকে জানাইল । প্রয়াগে আসিয়াই তাহার কলেরা হয় এবং সঙ্গের লোকজন হাসপাতালে খবর দিয়া তলপীতলপ লইয়। প্রস্থান করে। হাসপাতালেই বুড়ীর ঈশ্বরপ্রাপ্তি হইয়াছে। সাধন শ্ৰীদাম মাঝির মুখে খবর শুনিয়া দেখিতে আসিয়াছিল । কথা না কহিয়া হাসপাতালে গিয়া সংবাদ লইলাম । কথা যথার্থ। কলেরা হইয়। তিরিশে তারিখে দাখি নামে একটা বাঙালী বুড়ীর মৃত্যু হইয়াছে। কোন জাতের স্ত্রীলোক না জানাতে কেহ সৎকার করিতে রাজী হয় নাই ; এগার নম্বরের প্লটে মাটি দেওয়া হইয়াছে। এগার নম্বরের প্লট দেখিতে গেলাম । তখনও জন কুড়ি লোকের মাটি দেওয়া হইতেছিল। ডোমের কাছে প্রশ্ন করিয়া বুঝিলাম যে, দাখিঠাকুরাণীকে উদ্ধার করা অসম্ভব, যে-হেতু তাহার পরেও প্রায় শখানেক তীৰ্থকামী ওই একই স্থানে বিশ্রাম করিতে আসিয়াছে। গঙ্গার দিকে চাহিলাম, বহুদূর । তবে ভরসা আছে কোন কালে মাতা জাহ্নবী ভাঙনের আনন্দে নৃত্য করিতে করিতে এগারে নম্বরের প্লটে আসিয়া পৌছিবেন, সেইদিন বৃদ্ধার মনস্কাম পূর্ণ হইবে । সেই ভাঙনের দিনের প্রতীক্ষা করিয়া দাখিটাকুরাণীর অস্থি কয়খানি বসিয়া থাকিবে তাহাতে আমার সন্দেহ রহিল না । কালো মেয়ে শ্ৰযতীন্দ্রমোহন বাগচী চোখের অরুচি সেরে যায় যার কালে চোখদুটি চেয়ে— পাড়ায় সবাই বলে তায় কালে মেয়ে ! কথাটি ন কয়—চুপ ক’রে রয়, মনে মানি পরাভব ; নয়ন-জুড়ানো নীল মেঘে ঢাকি বরষার বৈভব। দীঘি-জলে-পড়া অরুণের আভা ঝলি উঠে সারা দেহে, কালোর ঝরণা ঝরে’ পড়ে পিঠ বেয়ে ; টানা ভুরুদুটি শেখেনি ভ্ৰকুটি, তারি গাঢ় ছায়াতলে ঘন নীল দুটি অপরাজিতায় ব্যথার শিশির জলে ! সন্ধ্যামেঘের সায়রের জলে সদ্য যেন-বা নেয়ে চলেছে গোধূলি পুরবীর গান গেয়ে ; মোহমাখ সেই বেদনার স্বরে দিনাস্তু নেমে আসে, সরস কুলায়ে পরশ বুলায়ে বাধিবারে বাহুপাশে । ঝিঙাফুলে-বেড়া ঘরের বেড়াটি ধরিয়া নিরাল সাঝে চেয়ে থাকে বাল উদ্ধ আকাশমাঝে ! আঁধারের বুকে ফুটে উঠে তার—তারি পানে চেয়ে চেয়ে নিঃশ্বসি’ ধীরে ঘরে ফিরে যায় রূপহীনা কালে মেয়ে। চোখের বালাই সেরে যায় যার চোখদুটি পানে চেয়ে, জগতের হাটে সেই হ’ল কালে মেয়ে । বালির বর্ণ সাদা বলে তাই কালে মাটি ফেলে চাই— রূপার মতন রূপেরই মূল্য, রসের মূল্য নাই ! ।