পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

でラl@ ক তই ভেবেছেল । এগুলো ওঁর খেয়ালকে একট; গোছের চেহারা দেবার জন্যে আমরা এখন বানিয়ে নিয়ে ভাবছি। ওঁর ত ধারণ ছেলেমেয়েদের মিশতে পুরাটাই আসল কথা, বিবাহট৷ গৌণ। উনি বলেন, স্বামীদের দেশের ছেলেমেয়েরা যে লজ্জা না করে পুরস্পরের সঙ্গে মিশতে পারে না সেইটেই তাদের আসল লজ, আর তার কারণটা তার মতে এই যে পরস্পরের সঙ্গে চিন্তায় ও ব্যবহারে সহজ স্বাভাবিকতার সীমা রক্ষা ক’রে চলতে তারা অভ্যস্ত নয়। আর আমাদের সামাজিক অস্বাস্থ্য কেবল নয়, আমাদের দেশের ছেলেমেয়েদের শারীরিক অস্বাস্থোর মূলেও নাকি সেই জিনিসটাই সব-চেয়ে বেশী আছে।” অজয় কহিল, “শুনতে খুবই ভালো শোনাচ্ছে, কিন্তু সুভদ্র ত তার মতামত ব’লেই খালাস, তার ঝু কিট সামলাতে হচ্ছে বুঝি একলা আপনাকে ?” সুলত। তাড়াতাড়ি কহিলেন, “ন, না, সে আবার কি কথা ? এখানে যাদের দেখছেন, তাদের মধ্যে এমন একজনও নেই যাকে আমাদের বাড়ীতে অত্যন্ত খুশীর সঙ্গে আমরা ডাকতে না পারি। স্বভত্রবাবুর ক্লাবের কথা শুনে এরা সবাই কেমন উৎসুক হয়ে উঠল তা ত আপনি দেখেন নি ? বেশ বোঝা গেল, এ জিনিষের একটা সত্যিকারের অভাবই এদের জীবনে ছিল । ওরা সবাই সুখন আগ্রহ করে আসতে চাইল তখন তাদের কি ব’লে আমি না বলতে পারি? আর তা বলুবই বা কেন ? স্থ ভদ্রবাবুর ক্লাবই এটা বদি কেবল হ’ত তাহলে ওরা অনেকেই হয়ত আস্ত না, সেইসঙ্গে এটা আমার বাড়ী ব’লেই আসছে। এ ত আমার পক্ষে খুব আনন্দেরই কথা ।” ফরাসী-বিপ্লবকে উপলক্ষ্য করিয়া সুভদ্রদের যে-তর্ক gরু হইয়াছিল তাহ তখন এমন অবস্থায় পৌছিয়াছে যে আর-একটু হইলে সেইখানেই ছোটখাট একটা বিপ্লব বধিয়া যায় । অজয় কহিল, "মুভদ্রের আসল উদ্দেশ্য যাই হোক, স্ত্রীপুরুষের সামাজিক মিলনের চেয়ে পুরুষেপূরুষে অসামাজিক বিরোধটাই অন্ততঃ আজকের প্রোগ্রামে ং ড দেখছি।” শৃঙ্খল \ు:ృS) স্বলতা একটু হাসিলেন, কহিলেন, “এ বিষয়ে আপনার বন্ধুর অভিমতটা বুঝি আপনি জানেন না ? তিনি বলেন, ‘তোমাদের জাতের কেউ শুনছে না জানলে বৌদি, তর্ক ক’রে আমাদের স্থখই হয় না।’ ওঁর বিবেচনায় এ দেশে ছেলেদের কোনও শক্তি যে যথেষ্ট স্মৃষ্টি পায় না সে কেবল আমরা মেয়েরা তাদের চারপাশ ঘিরে ব’সে তাদের বাহুবা দিতে উপস্থিত থাকি না ব’লে ।” অজয় কহিল, “সেটা হয়ত সত্যি, কিন্তু স্বভদ্রের তর্কশক্তিটি স্ফূৰ্ত্তি না পেলে পৃথিবীর তাতে খুব বেশী ক্ষতি হ’ত ব’লে কি তার বিশ্বাস ?” স্থলত কহিলেন, “ওঁর মতে মামুষের মধ্যে তার শক্তির রূপ সব মিলিয়ে একটাই । তার কাছ থেকে সত্যিকারের কাজ আদায় করতে হ’লে সেইসঙ্গে তার খুশী মত অনেকখানি বাজে কাজ করবার স্থবিধা তাকে দিতে হয় ।” অজয় কহিল, "মুভদ্র তাহলে বলতে চান, মামুষের মধ্যে তার খুশাটাই একটা খুব বড় জিনিষ ?” একটু থামিয়া একেবারে অজয়ের চোগে চোখে চাহিয়৷ স্থলত বলিলেন, “আপনি কি তা মনে করেন না ?” অজয় মুখ নীচ করিয়া নিঃশব্দে বসিয়৷ রহিল। খুশী বলিয়৷ কোনও জিনিষকে কোথায়ও তামল না দিয়াই ত জীবনের এতখানি পথ সে চলিয়। আসিয়াছে, কত সুখ হইতে ইচ্ছা করিয়। নিজেকে নিজে সে বঞ্চিত করিয়াছে । এ কি নিদারুণ কঠোর অহঙ্কার স্বভাবে দিয়| বিধাত । তাহাকে পৃথিবীতে পাঠাইয়াছেন, নিজেকে ভালবাসে বলিয়াই নিজেকে উপবাসী রাখিয়া দেওয়া ছাড়া তাহার উপায় থাকে না । পাছে কোথাও তাহার পাওয়ার দাবিকে কেহ অগ্রাহ করে, চাহিতে গিয়া কোথাও পাছে প্রত্যাখ্যাত হইতে হয়, এই ভয়ে নিজের ন্যায্য পাওনাকেও চিরকাল সে ছাড়িয়া ছাড়িয়া আসিয়াছে । আজ অভ্যাস তাহাকে এমনই করিয়া গড়িয়াছে, যে, যে-দান আপনি আসিয় তাহার দ্বারে করাঘাত করে তাহাকেও আহবান করিয়া ভিতরে লইতে সে কুষ্ঠিত হয় । সে ত্যাগী, কোনও কিছুর জন্য তাহার অপেক্ষা নাই, নিজের এই