পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশ্বিন শানহন্তুং ) সৈন্যসামন্ত সহ রাজ্যবৰ্দ্ধনকে উত্তরাপথে প্ৰৱণ করিয়াছিলেন (উত্তরাপথ, প্রাহিণোৎ ) । হর্ষও জ্যবৰ্দ্ধনের সঙ্গে সঙ্গে অনেক দূর গিয়াছিলেন । ন জাবৰ্দ্ধন যখন হিমালয় প্রদেশে ( কৈলাসপ্রভাভাসিনী +ফুভে ) প্রবেশ করিলেন, তখন হর্ষ তাহার সঙ্গ ত্যাগ করিয়া হিমালয়ের পাদদেশে বনে শিকার থেলিতে *ারম্ভ করিলেন । ইতিমধ্যে রাজধানী হইতে খবর আসিল, মহারাজ প্রভাকরবদ্ধন প্রবল জরে আক্রান্ত গুইয়াছেন । এই খবর পাইবা মাত্রই হর্ষ ঘোড়ায় চড়িয়া স্থাষ্ট্ৰীশ্বর যাত্রা করিলেন এবং সারা দিন রাত্রি চলিয়৷ পরদিন মধ্যাহ সময়ে তথায় পহু ছিলেন । হর্ষ চিকিৎসকণের সহিত কথা কহিয়া বুঝিতে পরিলেন র্তাহার পিতার মৃত্যু নিকট, এবং পরদিন প্রত্যুষে রাজ্যবৰ্দ্ধনকে স্থার্থীশ্বরে আনিবার জন্য দ্রুতগামী উল্প-আরোহী পাঠাইলেন । রাজ্যবৰ্দ্ধন তৃণগণকে জয় করিয়া ফিরিয়া আসিয়া আর পিতাকে দেখিতে পাইলেন না । তখন তিনি হর্ষকে বলিলেন যে, তাহার পিতৃসিংহাসনে বসিবার সাধ নাই, তিনি হর্ষকে রাজ্য দিয়া তপোবনে আশ্রয় লইতে চাহেন। হর্ষ অবশ্ব এই প্রস্তাবে সম্মত হইলেন না, এবং বলিলেন, “আপনি তপোবনে গেলে আমিও আপনার অনুসরণ করিব, এবং তপশ্চরণ করিয়া ভ্রাতৃআজ্ঞা-লঙ্ঘনজনিত পাপের প্রায়শ্চিত্ত করিব।” রাজ্যবৰ্দ্ধন এবং হর্ষ যখন এইরূপ আলোচনায় রত ছলেন এমন সময় সংবাদক নামক রাজ্যশ্রীর পরিচারক ক্টাদিতে কাদিতে সভাস্থলে প্রবেশ করিয়া বলিলেন,— “দেব, পিশাচগণের ন্যায় নীচমনা লোকেরাও প্রায়শঃ ছিদ্ৰ দেখিয়া আক্রমণ করে । অবনীপতি প্রভাকরবর্দ্ধন ) দেহত্যাগ করিয়াছেন এই সংবাদ যেদিন প্রচারিত হইয়াছে সেই দিনই দেব গ্রহবর্ম দুরাত্মা লালবরাজ কর্তৃক স্বীয় স্বরুতের সহিত জীবলোক হইতে অপসারিত হইয়াছেন, এবং রাজকুমারী রাজ্যশ্ৰী চৌরস্ত্রীর মত লৌহনিগড়বদ্ধ-চরণে কান্যকুঞ্জের কারাগারে নিক্ষিপ্ত গুইয়াছেন। জনরব এই, রাজসেনা নায়কশূন্য মনে করিয়া অতিশয় দুমতি ( মালব-রাজ ) জয় করিবার শশাঙ্কের কলঙ্ক-রাজ্যবৰ্দ্ধম-হত্য අ8ම් অভিলাষে এই রাজ্যও আক্রমণ করিবেন । এই আমার বক্তব্য ; ( এখন ) প্ৰভু যাহা হয় করুন।” এই সংবাদ পাইয়। সেই দিনই রাজ্যবৰ্দ্ধন মালবরাজকে শাস্তি দিবার জন্য যুদ্ধযাত্র করিলেন। দশ হাজার অশ্বারোহী লইয়া মাতুলপুত্র ভক্তি র্তাহার অতুসরণ করিলেন । সামস্ত রাজগণ এবং হস্তীসেনা স্থার্থীশ্বরে রহিল। কিছু দিন পরে রাজ্যবৰ্দ্ধনের প্রিয়পাত্র অশ্বারোহী সেনার নায়ক কুন্তল স্থার্থীশ্বরে ফিরিয়া আসিলেন । এবং— “তস্মাচ্চ হেলালির্জিতমালবানীকমপি গোঁড়াধিপেন মিথ্যোপচারোপচিত্তবিশ্বাস মুক্তশস্ত্রমেকাকিনং বিশ্রদ্ধং স্বভবন এব ভ্রাতরং ব্যাপাদিতমশ্রেণীত ।” “র্তাহার নিকট হইতে ( হর্ষ ) শুনিতে পাইলেন, তাহার ভ্রাত। ( রাজ্যবৰ্দ্ধন) অতি সহজে মালবসেনা পরাজিত করিয়৷ থাকিলেও, মিথ্য স্তুতিবাকো বিশ্বাস স্থাপন করিয়া একাকী নিরস্তু নিঃশঙ্ক গোঁড়াধিপের ভবনে গিয়া তথায় গৌড়াধিপকর্তৃক নিহত হইয়াছেন।” হর্ষের দুইখানি তাম্রশাসন পাওয়া গিয়াছে। একখানি বঁাশখেরায় প্রাপ্ত এবং হুষের রাজত্বের ২২ সালে অর্থাৎ ৬২৮ বা ৬২৯ খৃষ্টাব্দে সম্পাদিত ;* আর একখানি মধুবনে প্রাপ্ত এবং হর্ষের ২৫ সালে, ৬৩১–৬৩২ খৃষ্টাবে, সম্পাদিত ণ এই দুইখানি তাম্রশাসনেই রাজ্যবৰ্দ্ধন সম্বন্ধে এই শ্লোকটি আছে— রাজানো যুধি দুষ্টবাজিনইব শ্ৰীদেবগুপ্তাদয় কৃত্বা যেন কশ্যপ্রহারবিমুখা: সৰ্ব্বে সমসংযতাঃ । উৎখায় দ্বিমতে বিজিত্ব বসুধাং কৃত্ব। প্রজানাং প্রিয়ং প্রাণানুজ ঝিতবানরাতিভবনে সত্যামুরোধেন যঃ ॥ “কশাঘাতে অসম্মত দুষ্ট ঘোড় (যেমন সংযত হয় ), তেমনই তিনি শ্ৰীদেবগুপ্তাদি নরপতিগণকে যুদ্ধে সমান ভাবে সংযত ( পরাভূত) করিয়াছিলেন ; শত্ৰুগণকে উৎখাত করিয়া, পৃথিবী জয় করিয়া, এবং প্রজাগণের প্রিয়কাৰ্য্য সাধন করিয়া (তিনি ) শত্রুর গৃহে সত্যাকুরোধে প্রাণত্যাগ করিয়াছিলেন ।” "সত্যাহ্বরোধে” অর্থ অবত "প্রতিজ্ঞাহরোধে"। এই প্রতিজ্ঞ কাহার ? রাজ্যবৰ্দ্ধনের, না তাহার শত্রুর ? “হর্ষচরিতে”র “মিথ্যোপচারোপচিতবিশ্বাসের” সহিত একবাক্যতা সাধনের জন্য ডাক্তার কিলহৰ্ণ এই “সত্য” আরোপ করিয়াছেন শক্রতে, এবং “সত্যাচুরোধে”র অম্বুবাদ করিয়াছেন • Erophia indica, vol. iv, p. 210. TT i Epigraphia Indica, Vol. VI, p. 157.