পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ዓ¢\” S99āు কি চালের দর জানতে হবে ? এদিকে ত চাল বেশী জন্মায় না, বুঝলে কি-না? গঙ্গাধর ওরফে ক্ষেত্রনাথ বলিল,—ত আমরা জানি নে, পথে পড়ল তাই দু-দিন রয়েচি। তুমি যে এখানে আসবে তা কই ত বল নি । বনবিহারী একটু ভাবিল, ভাবিয়া বলিল,—এখানে একটা চাকরির চেষ্টায় এসেছি, বুঝলে কি-না ? হরিনাথ অথবা যাহাকে বনবিহারী কিশোরীমোহন বলিয়া জানিত কহিল,—কোথায় চাকরি ? –এই স্ববর্ণপুরের জমিদারীতে। দেওয়ান আমাকে জানেন, একটু অঙ্কগ্রহও করেন, বুঝলে কি-না ? বনবিহারীর এই উত্তর উত্তম জুটিয়াছিল। দেওয়ান ত্রিলোচনকে সে কেন চিঠি লিখিয়াছিল হরিনাথ ও গঙ্গাধর বুঝিতে পারিল । বনবিহারী উমেদার, অর্থাৎ তাহার টাকার টানাটানি । এই কারণেই আর একটা পুরস্কার পাইবার জন্য অত ব্যস্ত হইয়াছিল। গঙ্গাধর বলিল,-বেশ, বেশ । ও রকম চাকরি খুব ভাল, আমাদের মতন টাে টাে ক'রে বেড়াতে হবে না। একটু বেলা হইতেই বনবিহারী ত্রিলোচনের কাছে গেল। কাৰ্ত্তিক দেখিল, এ ব্যক্তির পক্ষে অবারিতদ্বার, সে আসিলেই ত্রিলোচন তাহাকে অত্যন্ত আগ্রহের সহিত ডাকিয়া বসান, তাহার সহিত বিশ্রদ্ধ আলাপ করেন । এ লোকটাকে জবা করিবার ইচ্ছা কান্তিককে পরিত্যাগ করিতে হইল । বনবিহারী চাপা গলায় ত্রিলোচনের দিকে মুখ বাড়াইয়া দিয়া বলিল,—সেই যে দুটো লোকের কথা কাল রাত্রে বলেছিলাম তারা এখানে এসেচে, বুঝলেন কি-না ? ত্রিলোচনের গোল মুখ লম্বা হইয়া গেল, ভাঙা গলায় জিজ্ঞাসা করিলেন,—বল কি ! তাদের এখানে কি কাজ ? এখানে চাল কোথায় ? --তারা বলচে পথে পড়ে ব’লে এখানে দু-দিন রয়েচে । তবু সন্দেহ হয়, বুঝলেন কি-না ? —ওরা কে, কি মতলবে ঘুরচে তাত জানতে হবে। তোমাকু ছাড়া ত আর কাউকে বলতে পারি নে। —তা ত বটেই। আমি সব জেনে আপনাকে বলব, বুঝলেন কি-না? আর যদি ওদের সরাতে হয় ? ত্রিলোচন দুই হাত নাড়িয়া সবেগে কহিলেন,-ন, না, আমাদের গ্রামে ওসব কিছু হবে না। জানবার মধ্যে তুমি আর খামাচরণ, আর কেউ কিছু জানতে পারে না। কোন প্রমাণ নেই। এর কোথায় কি শুনেচে, কোথাকার ঘটনা তাও জানে না। শুমাচরণ কিছু প্রকাশ করে-না-করে সে দায় তোমার । —তার জন্ত আমি ভাবিনে, এখন এই দুটো লোকের সঙ্গে আমাকে থাকতে হবে অথচ এর কিছু জানতে পারবে না । এদের কাছে বলেচি আপনার কাছে চাকরির জন্য এসেচি, বুঝলেন কি-না ? —সে কথা ভাল। ওদের বুঝিও শীঘ্রই তোমার একটা ভাল চাকরি হবে। এখন তোমার কত টাকা চাই ? —পাচশো টাকার কম হবে না । হবে, বুঝলেন কি-না? ত্রিলোচন পাঁচশো টাকা বাহির করিয়া দিয়া বলিলেন,—যদি এমন খবর আনতে পার যাতে আমি নিশ্চিন্ত হই তাহলে সত্যিই তোমার একটা পাকাপাকি কিছু ক'রে দেব। —আমাকে দিয়ে পরিশ্রমের কম্বর হবে না, বুঝলেন কি-না ? বলিয়া বনবিহারী উঠিয়া গেল। ষড়বিংশ পরিচ্ছেদ সুতার খেই বৈকাল বেল গঙ্গাধর ও হরিনাথ স্ববর্ণপুর গ্রামে এদিক-ওদিক ঘুরিয়া বেড়াইতেছিল । একটা মাঠে গ্রামের তরুণ বয়স্ক যুবকেরা ফুটবল খেলা করিতেছে দেখিয়া তাহার দাড়াইল। মাঠের পাশে অড়রের ক্ষেত, চারিদিকে অড়রের হলদে ফুল ফুটিয়াছে। দর্শকদের মধ্যে কাৰ্ত্তিক ছিল, সে দুইজন নূতন লোক দেখিয়া তাহদের কাছে আসিল । হরিনাথ ও গঙ্গাধর একটু দূরে দাড়াইয় ছিল, তাহদের কাছে আর কেহ ছিল না। কাৰ্ত্তিক জিজ্ঞাসা করিল,—আপনারা কোঁখেকে আসছেন ? কত ঘুরতে