পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশ্বিন স্বাগত ማዕፃ আরম্ভ করেছিল আর তার টাকার, থাই কেবলই বাড়ছিল। সে কখনও মুখ খুলতে পারবে না। আমার মনে হয় আর কেউ কিছু খোজ করচে । —আর কে খোজ করবে ? খোজ করবার মধ্যে ত আমরা, আর কেউ করতে যাবে কেন ? তা ছাড়া আমরা ত বেশ জানি ডুবে মীর গিয়েচে তার আবার নতুন ক’রে সন্ধান কি ? —সেই ত কথা, কিন্তু তাহ’লে এ দুটো লোক সে কথা পাড়বে কেন ? তাই আমি লিখেছিলাম, বুঝলেন কি-না ? —কোন দুটো লোক ? —তারা নিজের কিছু জানে না, তাদের শোনা কথা । তার কলকেতার কোন বড় আড়তদারের লোক, গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে চাল কিনচে, বুঝলেন কি-না ? —অন্ত খবর নিচ্চে কি-না তা তুমি কেমন ক’রে জানলে ? বনবিহারী চক্ষু বুজিয়া দাত বাহির করিল। তাহার ভাবগতিক দেখিলে তাহাকে নিঃশবপদসঞ্চারী হিংস্র পশুর ন্যায় মনে হইত। বলিল,--আমি কি না-জেনে কিছু বলি ? তাদের চিঠিপত্র আমি সব দেখেচি, বুঝলেন কি-না ? কথাটা মিথ্যা । সে দেখিয়াছিল একখান টেলিগ্রাম, কিন্তু একটু বাড়াইয়া বলিতে দোষ কি ? সে যে কেমন পাকা লোক ত্রিলোচন বুঝিতে পরিবেন। ত্রিলোচন বলিলেন,—আমাদের এখন কি করা উচিত ? —আমি সব জেনে আপনাকে বলব, ভাবনার কোন কথা নেই। কিন্তু এটা নতুন কাজ, বুঝলেন কি-না? আমাকে অনেক ঘুরতে হবে, অনেক খরচ হবে। —কাল তুমি আর একবার এস, তোমাকে কি করতে হবে বলব, টাকাও দেব । বনবিহারী গ্রামে বাসা দেখিতে গেল। পথে যাইতে দেখিল একটা ঘরের দরজা খোলা, ঘরের ভিতর বসিয়া ক্ষেত্রনাথ ও কিশোরীমোহন। পঞ্চবিংশ পরিচ্ছেদ ত্ৰিলোচন ও বনবিহারী বনবিহারী দাড়াইল না। ঘরের ভিতর আলোক জলিতেছিল, পথে অন্ধকার, সুতরাং যাহারা ঘরে বসিয়াছিল তাহার। বনবিহারীকে দেখিতে পাইল না । এই দুই ব্যক্তি এখানে কেন আসিয়াছে ? তাহারা নানাস্থানে ঘুরিতেছে স্বতরাং সুবর্ণপুরে আসা কিছু আশ্চৰ্য্য কথা নয়, কিন্তু ঠিক এই সময় ইহার এখানে কেন আসিয়াছে ? বনবিহারী যে এখানে আসিবে তাহ ত তাহারা জানে না, জানিবার কোন সম্ভাবনাও নাই । বনবিহারী তাহাদিগকে কিছু বলে নাই আর সে যেখানে যাইবে এই ফুই ব্যক্তিও যে সেইখানে যাইবে এমন কোন কথা নাই। বনবিহারীর পিছনে পিছনে ফিরিয়া তাহদের কি লাভ ? সুবর্ণপুরে এক ঘর বড় জমিদারের বাস বটে, কিন্তু এখান হইতে ত চালের চালান যায় না। তবে ইহার। কি অভিপ্রায়ে এখানে আসিয়াছে ? ডাকঘরে ছদ্মবেশে গিয়। গঙ্গাধর যে বনবিহারীর চিঠির ঠিকান দেখিয়াছিল সেকথা একবারও বনবিহারীর মনে হইল না। যে বুদ্ধি তাহার যোগাইয়াছিল তাহা যে আর কাহারও মনে হইতে পারে তাহ সে ভাবে নাই। ধূৰ্ত্ত অপর সকলকে নিৰ্ব্বোধ মনে করে | বাসায় গিয়া বনবিহারী কত কি ভাবিতে লাগিল । একবার ভাবিল এই দুই জন পুলিসের লোক, কিন্তু পুলিসের লোক কি জানে যে তাহার কোন রূপ অমুসন্ধান করিবে ? হয়ত ইহাদের এখানে আসিবার কোন উদ্দেশ্য নাই, তাহদের পথে পড়িয়াছে বলিয়া দুই এক দিন থাকিবে । - সকাল বেল উঠিয়া বনবিহারী বেড়াইতে বেড়াইতে ধে-বাড়িতে ক্ষেত্রনাথ ও কিশোরীমোহনকে দেখিয়াছিল সেই দিকে গেল। তাহারা দুইজনে বাড়ির সম্মুখে পাইচারি করিতেছিল। বনবিহারী অত্যস্ত বিস্ময়ের ভাণ করিয়া কহিল,-" এই যে আবার দেখা । এখানেও