পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ গীতোক্ত প্রত্যেক মার্গের পৃথক আলোচনার পূৰ্ব্বে ধারণভাবে কতকগুলি কথা বলা যাইতে পারে। কৃষ্ণের বক্তব্যের অধিকাংশই অর্জুনের প্রশ্নের উত্তর । ভয়ের কথোপকথনে পর পর অর্জুনের মনে যে-সব প্রশ্ন তছে তাহাতে অস্বাভাবিকতা এবং অসংলগ্নতা কিছুই ; একাগ্রমনে গীতা পাঠ করিলে সাধারণ পাঠকের নেও এই সব প্রশ্নই যথাক্রমে উঠিবে। আমি বিভিন্ন ধ্যায়ের ব্যাখ্যায় এই সকল প্রশ্নের পারম্পৰ্য্যের ধারা দেখাইবার চেষ্টা করিয়াছি। গীতাকার এত নিপুণভাবে এই প্রশ্নোত্তরমালা সন্নিবেশিত করিয়াছেন যে, হঠাৎ মনেই হয় না যে অর্জনের সমস্যাপূরণ ব্যতীত শ্ৰীকৃষ্ণের উত্তরে অন্য কোন উদ্বেগু সাধিত হইয়াছে। স্বক্ষদৃষ্টিতে দেখা পাইবে যে প্রশ্নোত্তর ছলে গীতাকার তৎকালপ্রচলিত সাধনমার্গগুলির আলোচনা করিতেছেন। দ্বিতীয় অধ্যায়ে সাধারণভাবে জ্ঞানীদের উপদেশ, বেদোক্ত ক্রিয়াকলাপ ও সমাজধর্মের আলোচনা আছে ; শ্রীকৃষ্ণের অনুমোদিত বুদ্ধিযোগও এই অধ্যায়ে ব্যাখ্যাত হইয়াছে। তৃতীয় অধ্যায়ে যজ্ঞকথা ও স্বধৰ্ম্মের বিবরণ আছে। সমাজধর্মের আচরণে কুর কৰ্ম্ম করিতে হয় তাহা পরিত্যাগ করিয়া যজ্ঞাদি ভাল কাজই কেন না করি এই প্রশ্নের উত্তরে যজ্ঞকথা ও স্বধৰ্ম্মের বিচার স্বাভাবিক ভাবেই আসিয়াছে। স্বধৰ্ম্মপালনে ক্রর কৰ্ম্ম করিতে হইলে দোষ হয় কি না ইহার আলোচনায় কৰ্ম্ম কি, অকৰ্ম্ম কি, বিকৰ্ম্ম কি ইত্যাদি প্রশ্ন চতুর্থ অধ্যায়ে আসিছে ; দুষ্কৰ্ম্ম হইতে ধৰ্ম্ম কিরূপে রক্ষা পায় তাহার ব্যাখ্যায় অবতারবাদ আসিয়াছে এবং পূৰ্ব্বাধ্যায়ের যজ্ঞকথারও বিশদ আলোচনা আছে; কৃষ্ণ দেখাইলেন স্বধৰ্ম্মান্থমোদিত হইলে কুর কৰ্ম্মেও দোষ হয় না, অপর পক্ষে উপযুক্তভাবে অহুষ্ঠিত না হইলে যজ্ঞরূপ ভাল কাজেও দোষ হয়। কি করিয়া এই দোষ কাটাইতে হয় কৃষ্ণ তাহা নির্দেশ করিলেন। ভাল, মন্দ ইত্যাদি সকল রকম কৰ্ম্মেই যখন বন্ধন আসিতে পারে তখন কৰ্ম্মের হাঙ্গামার মধ্যে না গিয়া সৰ্ব্বকৰ্ম্ম পরিত্যাগ করিয়া সংস্থাসী হই না কেন—এই প্রশ্নের উত্তরে পঞ্চম অধ্যায়ের অবতারণা। পঞ্চম অধ্যায়ে, সম্ভাস মার্গ আলোচিত হইয়াছে ও সেই স্বত্রে জানার্থ ও কর্মধার কথা উঠিয়াছে। সন্যাসীদের কথা ইঞ্জে যতিদের কথা ও যতিদের কথা হইতে যোগীদের কথা পঞ্চম অধ্যায়ের শেষে সহজভাবে উঠিয়াই ষষ্ঠ অধ্যায়ের বক্তব্যের স্বচনা করিয়াছে। কৃষ্ণ দেখাইলেন প্রকৃত সংন্যাসী যোগীই হন । ষষ্ঠ অধ্যায়ে যোগের । ইহাকে কৰ্ম্মযোগান্তর্গত পাতঞ্জল মার্গ বলা যাইতে পারে ) আলোচনায় আসন ইত্যাদি শারীরিক যোগ ও ধ্যান চিত্তবৃত্তি-নিরোধ রূপ মানসিক যোগের বিবরণ আসিয়াছে। যোগীর তাবৎ ইন্দ্রিয়গ্রাহ ব্যাপারের প্রকৃত জ্ঞানলাভ হয় ও আত্মদর্শন হয় ও তখন তিনি স্বষ্টির যথার্থ তত্ত্ব উপলব্ধি করিতে পারেন। এই সম্পর্কেই সপ্তম অধ্যায়ের দার্শনিক তত্ত্বের আলোচনা । কাপিল ংখ্যোক্ত সমস্ত বিষয় এই অধ্যায়ে বর্ণিত হইয়াছে ; কৃষ্ণ যেমন যজ্ঞ, সংন্যাস, যোগ ইত্যাদি প্রচলিত মার্গ ঈষৎ পরিৰ্ত্তিত পরিবর্জিত আকারে অনুমোদন করিয়াছেন, কাপিল সাংখাও সেইরূপ ঈষৎ পরিবর্তন করিয়া গ্রহণ করিয়াছেন । কাপিল সাংখ্যোক্ত প্রকৃতি, জীব ও তৎসহ কৃষ্ণের যোজিত ব্ৰহ্মতত্ত্ব হইতে অধিভূত, অধিদৈব, অধ্যাত্ম ও অধিযজ্ঞবাদ আসিয়াছে। তথনকার দিনে অধিভূতবাদ ইত্যাদি যে এক বিশেষ সাধনমার্গের অঙ্গ ছিল সে বিষয়ে সন্দেহ নাই । ৭.৩০ ও ৮২ শ্লোক দেখিয়া মনে হয় মৃত্যুকালে ব্রহ্মস্মরণ এই মার্গেরই এক অঙ্গ। মনে যে চিন্তা লইয়া মানুষের মৃত্যু হয় পরজন্মের গতি সেই অনুসারে হইয়া থাকে, এই বিশ্বাসও এই মার্গান্তর্গত। অন্তকালে যোগাসন আশ্রয় করিয়া ওঁকারের ধ্যান করিতে করিতে দেহত্যাগের উল্লেখ ইহার পরেই আসিয়াছে। এই উপায়ে দেহত্যাগের চেষ্টা এখনও যোগীদের মধ্যে দেখা যায়। অধিযজ্ঞবাদের বিচার ও ওঁকারের ধ্যান অষ্টম অধ্যায় ভুক্ত । ওঁকারের ধ্যানে পুনর্জন্ম হয় না ও সমস্ত জগৎ পুনরাবৰ্ত্তনশীল এই কথায় ( ৮১৫-১৬), পরবর্তী শ্লোকের অহোরাত্র বিদ্যার উল্লেখের জুখিধ হইল। শুক্লকৃষ্ণগতি দেবযান পিতৃযান পথ ইত্যাদির কথা এই মার্গের পরেই উল্লিখিত অষ্টম অধ্যায় পর্যক্ষ তৎকালপ্রচলিত,বিf 4 డౌ " భీ , - , {xg