পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

છેડે’ S99áు বাঙ্গালা নাট্য-সাহিত্যে অজ্ঞাত নহে। যে নাট্যগ্রন্থে শ্রব্যকাব্যোচিত বর্ণনাদির আতিশর্য্য দেখিতে পাওয়া যায় বাঙ্গালায় কোথাও কোথাও তাহারই নাম দেওয়া হইয়াছে দৃশুকাব্য। অবশ্ব এই নাম সৰ্ব্বত্র ব্যবহৃত হয় নাই । গিরিশচন্দ্র তাহার ‘অভিমন্ত্যবধকে দৃশুকাব্য আখ্যা দিয়াছেন ; কিন্তু ‘পাণ্ডবের অজ্ঞাতবাস’, ‘লক্ষ্মণবর্জন প্রভূতি এই জাতীয় অন্যান্ত গ্রন্থকে তিনি নাটক বলিয়াই অভিহিত করিয়াছেন। যে-অর্থে দৃশুকাব্য শব্দটি ব্যবহৃত হইয়াছে সেই অর্থে কোন কোন স্থলে অভিনয়কাব্য এই শব্দের প্রয়োগও দেখিতে পাওয়া যায়। তবে এই প্রসঙ্গে নাট্যকাব্য শব্দটিরই সমধিক প্রচার । বাঙ্গাল সহিত্যে রূপক শব্দের অর্থ শুধু নাট্যগ্রন্থ নহে । যে গ্রন্থে রূপক বা allegory-র আশ্রয় লওয়া হইয়াছে—বাঙ্গালায় তাহারই নাম রূপক। সংস্কৃতে রূপক, উপরূপক এই দুইভাগে নাট্য-সাহিত্যকে বিভক্ত করা হইয়াছে। বাঙ্গালায় রাজকুজ্ঞ রায় প্রণীত নাটকের উৎপত্তিবিষয়ক গ্রন্থ ‘নাট্যসম্ভবের’ নাম উপরূপক দেওয়া হইয়াছে। এই নামকরণের হেতু অজ্ঞাত । বাঙ্গালায় নাটিক শব্দ ক্ষুদ্র নাটক এই অর্থে ব্যবহৃত হয়। সংস্কৃতের ন্যায় বাঙ্গালা নাটিকার রস ও অস্কাদি বিষয়ে তেমন কোনও বিশেষ নিয়ম দেখিতে পাওয়া যায় না । প্রহসন বাঙ্গালা ও সংস্কৃতে প্রায় অনুরূপ অর্থেই ব্যবহৃত হয়। তবে সংস্কৃত নিয়মানুসারে প্রহসনের অঙ্ক-সংখ্যা এক। বাঙ্গালায় কিন্তু প্রহসনের একাধিক অঙ্কও দেখিতে পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ রামনারায়ণ তর্করত্ন কৃত তিন অঙ্কের প্রহসন ‘চক্ষুদান’-এর উল্লেখ করা যাইতে পারে। বস্তুত: বাঙ্গালা কোন প্রকার নাট্যভেদেই সংস্কৃতের ন্যায় অঙ্ক-সংখ্যার নিয়ম নাই। সংস্কৃত নাটকের সাধারণ নিয়মানুসারে অঙ্ক-সংখ্যা পাচ হইতে দশ।* বাঙ্গালায় কিন্তু এরূপ কোনও নিয়ম নাই । বাঙ্গালায় নাটকের অস্ক-সংখ্যা সাধারণতঃ পাচ, কিন্তু ইহার বেশী বা কম সংখ্যাও অনেক

  • অপেক্ষাকৃত আধুনিক কালে সংস্কুতেও একাঙ্ক, দ্ব্যক্ষ, ত্রাঙ্ক ও 5छूद्रक নাট দেখিতে •lteristo (Keith-Sanskrit Drama,

નૃ. ૭૪૬ ) সময় দেখা যায় । হাস্যরসবহুল নাট্যগ্রন্থ বাঙ্গালায় কেবল প্রহসন এই সংজ্ঞা দ্বারাই ধে নির্দিষ্ট হয় এমন নহে। এই অর্থে বহু সংজ্ঞার ব্যবহার দেখিতে পাওয়া যায় । যথl,—হাসক, পঞ্চরং বা পঞ্চরঙ্গ, রঙ্গনাট্য, নাট্যরঙ্গ, কৌতুকনাট্য, ব্যঙ্গনাট্য প্রভৃতি। অমৃতলাল বস্ব তাহার ‘অবতার’-এর আখ্যা দিয়াছিলেন—‘প্র-পর-অপ-সং-হসন’ ; প্র-হসন এই ক্ষুদ্র নামে তিনি সস্তুষ্ট হইতে পারেন নাই। নাট্যরাসকের প্রকৃত স্বরূপবিষয়ে সংস্কৃত নাট্যশাস্ত্রে প্রচুর মতভেদ দেখিতে পাওয়া যায়। বঙ্গদেশে স্বপ্রচলিত সাহিত্যদর্পণের মতে—নাট্যরাসক একাঙ্ক, বহুতাললয়বিশিষ্ট, উদাত্তনায়ক ও পীঠমৰ্দ্দ উপনায়কযুক্ত, শৃঙ্গাররসান্বিত, হাস্যরসবহুল ও রাসকসজ্জিকা নামী নায়িকা যুক্ত। আর নাট্যদর্পণকারের মতে যে-গ্রন্থে রমণীগণ সংগ্রহে নৃত্য দ্বারা বসন্তকালে নরপতির কার্য্যাবলী প্রকাশ করে তাহারই নাম নাট্যরাসক । রাজকৃষ্ণ রায় তাহার পতিব্রতা’ নাট্যগীতির ভূমিকায় নাট্যরাসকের এক অতি স্পষ্ট লক্ষণ নির্দেশ করিয়াছেন । তিনি লিখিয়াছেন—‘নাট্যরাসক বা নাট্যগীতির প্রকৃত অর্থ আদ্যন্ত স্বরনিবদ্ধ সঙ্গীতময় অভিনেয় গ্রন্থ ’ অমৃতলালের ‘সতী কি কলঙ্কিনী বা কলঙ্কভঞ্জন’ ও গিরিশচন্দ্রের "অকাল বোধন নাট্যরাসক নামে অভিহিত হইয়াছে। কয়েকটি নূতন নাম বাঙ্গালা নাট্যসাহিত্যে দেখিতে পাওয়া যায়। যথা—আলঙ্কারিক নাটক ( হরিদাস চট্টোপাধ্যায় প্রণীত—যোগ, ১২৯৭ সাল ) । প্রেমের মধ্য দিয়াও মুক্তিলাভ করা যায় ইহাই এই গ্রন্থের প্রতিপাদ্য । নবনাটক নামে একটি ভেদও কেহ কেহ অঙ্গীকার করিয়াছেন বলিয়া মনে হয়। সাধারণতঃ, রামনারায়ণ তৰ্করস্ত্রের একখানি নাটকের নামই ধরা হয় নবনাটক। তবে, ইহা নাটকখানির নিজ সংজ্ঞ অথবা জাতিসংজ্ঞ, সে-সম্বন্ধে সন্দেহ করিবার যথেষ্ট কারণ অাছে। গ্রন্থের প্রচ্ছদপট ও আখ্যাপত্রে বহুবিবাহ প্রভৃতি কুপ্রথা বিষয়ক