পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মিশ্র নির্বাচন হইলে, নিৰ্ব্বাচিত মুসলমানধৰ্ম্মাবলম্বী প্রতিনিধি কেবল মুসলমানদের প্রতিনিধি হইবেন না, তিনি অন্যান্য ধৰ্ম্মাবলম্বী নির্বাচকদেরও ভোটে নির্বাচিত হওয়ায় তাহদেরও প্রতিনিধি এবং তাহদের নিকটও দায়ী হইবেন । এইরূপ হিন্দুধৰ্ম্মাবলম্বী বা খৃষ্টিয়ধৰ্ম্মবলম্বী প্রতিনিধিও অন্যান্য ধৰ্ম্মাবলম্বী নিৰ্ব্বাচকদিগের ভোটের জোরে নির্বাচিত হওয়ায় তাহদেরও প্রতিনিধি এবং তাহদের নিকটও দায়ী হইবেন.। গণতান্ত্রিক প্রথা প্রবৰ্ত্তিত হইলে ব্যবস্থাপক সভায় এক একটা দল, হিন্দু খ্ৰীষ্টিয়ান মুসলমান শিখ, এরূপ নামে অভিহিত না হইয়া, অন্যান্য সভ্য দেশের মত লিবার্যাল, ন্যাশন্যালিষ্ট, ডিমোক্র্যাটিক, রিপাব্লিকান, ইণ্ডিপেণ্ডেণ্ট, লেবার ইত্যাদি নামের ভারতীয় কোন-না-কোন প্রতিশব্ব দ্বারা অভিহিত হইবেন ; কোথাও চিরতরে হিন্দু বা মুসলমান ব। অন্য সাম্প্রদায়িক প্রভুত্ব স্থাপিত হইবে না । কোন-নাকোন রাজনৈতিক দলের প্রভুত্ব কিছু কালের জন্য হইবে, তাহা পরিবর্তনীয় হইবে, এবং সেই দলে সব ধৰ্ম্মাবলম্বী লোকই থাকিবে । আসন-সংরক্ষণ এবং স্বতন্ত্র নির্বাচন চাহিবার কারণ ঈর্ষ্য ভয় ও সন্দেহ। এই ঈর্ষা ভয় ও সন্দেহের ফল এই হইতেছে, যে, ইহার "সুযোগ” গ্রহণ করিয়া ইংরেজরা সমুদয় ভারতীয়কে স্বরাজ হইতে বঞ্চিত রাখিতেছে, ভারতীয় হিন্দু মুসলমান খ্ৰীষ্টিয়ান শিখ কেহই চূড়ান্ত ক্ষমতা পাইতেছে নী—তাহাদের সকলের সমষ্টিও চূড়াস্ত ক্ষমতা পাইতেছে না। গণতান্ত্রিক প্রথার উৎকর্ষ ও সুবিধা এই, যে, ইহাতে দলের সংথ্যা এবং দলভুক্ত লোকেরা অপরিবর্তনীয় থাকে না। বড় দল, ছোট দল উভয়েই আরও বড় হইতে পারে, কিংবা কর্মিষ্ঠত, বুদ্ধিমত্ত, দেশের কাজে মনোযোগ প্রভৃতির অভাবে আরও ছোট হইয়া যাইতে পারে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রচলিত হইলে কেন্দ্রীয় গবন্মেন্টের ব্যবস্থাপক সভায় জন্মস্থা-বিশেষে মুসলমান খ্ৰীষ্টিয়ান শিখ ও পার্সী প্রভিনিধিদের সম্মিলিত সংখ্যা কখন কথন হিন্দুএভিনিধিদের সংখ্য অপেক্ষ অধিক হওয়া মোটেই \দাঙ্গানি হইৰে না। এইরুপ কখন কখন হিষ্ণু S99ఉు প্রধান প্রদেশগুলির ব্যবস্থাপক সভায় অহিন্দু প্রতিনিধিদের সংখ্যা হিন্দু প্রতিনিধিদের সংখ্যা অপেক্ষা বেশী হওয়া এবং মুসলমান প্রধান প্রদেশগুলিতে অমুসলমান প্রতিনিধিদের সংখ্যা বেশী হওয়া অসম্ভব হইবে না । বস্তুত: গণতান্ত্রিক প্রথায় নির্বাচিত প্রতিনিধিদিগকে নিজ নিজ স্বার্থ রক্ষার জন্যই দেশের সকল সম্প্রদায়ের লোকদিগকে সন্তুষ্ট রাখিবার চেষ্টা করিতে হইবে । নতুবা যাহাদের মঙ্গলে তাহারা মনোযোগী হইবে না, পরবর্তী নির্বাচনে তাহাদের ভোট তাহারা পাইবে না। সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রথা অনুসারে প্রতিনিধি নিৰ্ব্বাচিত হইলে ইহা খুব সম্ভব, যে, বাংলায় ও পঞ্চাবে অনেক সময়, অধিকাংশ সময়, হয়ত বা বরাবর, তথাকার ব্যবস্থাপক সভায় হিন্দু প্রতিনিধিদের সংখ্যা কম হইবে। তথাপি আসন-সংরক্ষণের ও স্বতন্ত্র নির্বাচনের দাবির উদ্ভাবক হিন্দুরা নহে। তাহারা ভারতীয় মহাজাতির মঙ্গলের জন্য গণতান্ত্রিক প্রথারই পক্ষপাতী। সাম্প্রদায়িক ভাগবাটোয়ারার উপদ্রবে যদি তাহাদের কেহ কেহ এখন আসন-সংরক্ষণ, সংখ্যামুপাতের অতিরিক্ত আসনের ব্যবস্থা ( weightage) এবং স্বতন্ত্ৰ নিৰ্ব্বাচন চায়, সেটা হিন্দুদের দোষ নহে। হিন্দুমহাসভা বরাবর সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রথার সমর্থন করিয়া আসিতেছেন । হিন্দুদের অবাস্তর নানা বিষয়ে মতভেদ যাহাই হউক, তাহারা পশুর মত হস্তান্তরিত হইতে চায় না, এবং অন্যেরাও পশুর মত তাহাদের হাতে হস্তান্তরিত হয় তাহাও চায় না । নানা কারণে, সব দেশেই নানা ধৰ্ম্মসম্প্রদায়ের লোকদের সংখ্যায় নৃানাধিক্য আছে ; সকলেই সংখ্যায়সমান হইতে পারে না। প্রত্যেক দেশে তথাকার ভিন্ন ভিন্ন ধৰ্ম্মসম্প্রদায়ের লোকদের সংখ্যা সমান করা ও রাখা মামুষের সাধ্যাতীত। একছত্র অতি শক্তিমান স্বেচ্ছাচারী সম্রাটও ইহা করিতে পারেন না। সংথ্যায় কমবেশ থাকিবেই। এই জন্য সকলে মিলিয়া মিশিয়া কাজ করা উচিত। তাহারই নাম গণতান্ত্রিকক্ত । সংখ্যাগরিষ্ঠের যদি বলে, আমরা প্রভূত্ব করিব, তাহ নিৰ্ব্বিৰাদে চঙ্গির