পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>哥河鳚3·... গরীব-দুঃীর প্রতি র্তাহার করুণা ও স্নেহ অগাধ— iাগরের মত, ক্ষমি তাহাকে তাহার নিজের পরিহিত কাপড় দিয়া একজন কুণ্ঠরোগীর ক্ষত মুছাইয়া দিতে দেখিয়াছি।’ - অসহযোগ আন্দোলন উপলক্ষ্যে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করিতে হওয়ায় এবং দেহরক্ষার জন্ত রাত্রে নিদ্রার প্রয়োজন হওয়ায় তিনি -কখন কথন প্রথম শ্রেণীর রেলগাড়ীতে ভ্রমণ করিয়াছেন ; কিন্তু গরীবের তৃতীয় শ্রেণীই তাহার সাধারণ যান । কাহারও শুধু ত্যাগে জীবনের সার্থকতা হইতে পারে না। ক্ষুদ্রকে ত্যাগ করিয়া বৃহৎকে গ্রহণ করিতে পারিলে, ক্ষণিককে ছাড়িয়া শাশ্বতকে ধরিলে, প্রেয়কে ছাড়িয়া শ্রেয়কে বরণ করিলে, জীবন সার্থক হয়। শাক্যসিংহ ধৌবনে পিতৃগৃহ, পত্নী ও পুত্র, এবং ঐশ্বৰ্য্য ত্যাগ করিসাছিলেন । কিন্তু পরে বুদ্ধত্ব লাভ করিয়া সমুদয় জগৎকে আত্মীয় বলিয়া বুঝিয়াছিলেন ও গ্রহণ করিয়াছিলেন ( তাহার মধ্যে নিজের পরিবারবর্গও অন্তর্গত ছিলেন ) এবং এইরূপ বোধ ও গ্রহণের পর সকলের দুঃখ চিরকালের জন্য মোচন করিতে আমরণ চেষ্টা করিয়াছিলেন । শুষ্কহৃদয় সৰ্ব্বত্যাগী অনেক সন্ন্যাসী আগে জন্মিয়াছিলেন, এখনও অনেক আছেন ; কিন্তু তাহারা কেবল ত্যাগই করিয়াছেন, বিশ্বকে ও বিশ্বজনকে আপন বলিয়া গ্রহণ করিতে পারেন.নাই বলিয়া, - "ালোকে ভূলোকে তোমারে হয়ে বরিব হে। সকলি তেয়াগি তোমারে স্বীকার করিব হে । শকলি গ্রহণ করিয়৷ তোমারে বরিব হে।" বলিতে পারেন নাই বলিয়া তাহারা বিশ্ববন্ধু হইতে পারেন নাই। মহাত্মা গান্ধী ত্যাগ ও গ্রহণ উভয়ই করিয়া ছেন বলিয়া অগণিত জনসংঘের হৃদয়ে তাহার জন্য স্থান হইয়াছে | e মহাত্মা গান্ধী অপরকে যাহা করিতে বলেন, আগেই নিজে তাহ করেন বা করিতে প্রস্তুত থাকেন। . কোন জাতের কোন কৌলিক কাজকে তিনি হেয় বা অপবিত্র মনে করেন না। "অস্পৃষ্ঠতা” দূর করিতে তিনি বন্ধপুরিকর। এইজন্ত তিনি স্বয়ংবিহুবার পায়খানা পরিষ্কার করিয়াছেন। একটি "অস্পৃশু"জাতীয় বালিকাকে তিনি বিবিধ প্রসঙ্গ-গান্ধীর প্রভাবের কারণ S8) নিজের কন্যারূপে গ্রহণ করিয়া নিজের পরিবাবে পালন করিয়াছেন । • . . তিনি কুটরাজনীতি বুৰেন না, কিম্বা ন্যায় ওঁ সত্যসঙ্গত কৌশলও কথন অবলম্বন করেন নাই, তাহার জীবন : সম্বন্ধে ইহা বলিবার মত জ্ঞান আমাদের নাই। দল বধিবার ও তাহা পুষ্ট রাগিবার প্রয়োজন তিনি বুঝেন ; নেতৃত্ব করিতে হইলে কথন কখন নিজের মতের বিরুদ্ধেও দলের লোকদের অধিকাংশের মত,গ্ৰহণ করিতে হয়, ইহাও তিনি বুঝেন। তিনি এই নীতির অনুসরণ কথন কখন করিয়াছেন, কিন্তু কখনও ব্যক্তিগত আচরণে ও বিশ্বাসে নিজের বিবেকবিরুদ্ধ কিছু করিয়াছেন বলিয়া আমাদের মনে হয় না। নিজের খ্যাতি প্রতিপত্তি বা অভ্রান্ততার ভাণ রক্ষা করিবার জন্য তিনি বাকুল নহুেন। পুনঃ পুন: নিজের ভুলচুক স্বীকার সম্বন্ধে তিনি নিজেকে “নিলজ” ( shameless ),বলিয়াছেন। তিনি নিজের ভুলভ্রান্তি যেমন স্পষ্ট ভাষায় স্বীকার কবেন, তেমনি কোন জায়গার, সম্প্রদায়ের, শ্রেণীর, বা দলের লোকদের দোষও স্পষ্ট ভাষায় নির্দেশ করেন। কেবল গবৰ্ণমেণ্টের নিন্দ তিনি করেন না, আবশ্যক হইলে স্বদেশবাসীদের নিমাও - করিয়া থাকেন; তাছাদের বিরাগভাজন হইবার ভয়ে তাহা হইতে নিবৃত্ত হন না। বিবেচক ও সং লোকেরা এইজন্য ভাগকে শ্রদ্ধা করেন । গান্ধীর জীবনের অনেক বৎসর ভারতবর্ষের রাজনৈতিক দুর্দশ মোচনের চেষ্টায়.যাপিত হইতেছে বটে ; কিন্তু র্তাহার প্রধান ব্রত রাজনৈতিকসমস্তাসম্বন্ধীয় নহে। তিনি সমগ্র মানবজাতির জীবনের ও চরিত্রের আমূল সংস্কার চান । পবিত্রতা দ্বারা, সত্যের একান্ত অনুসরণ দ্বারা, অহিংসা দ্বার, অপরকে কষ্ট না দিয়া নিজে দুঃথকে বরণ করিয়া লইয়া, অপরের উপর কোন জোর-জবরদস্তী না করিয়া কেবল আত্মিক-শক্তির প্রয়োগ-দ্বারা, এই সংস্কার সাধিত হইতে পারে বলিয়া তিনি বিশ্বাস করেন। আত্মিক শক্তি প্রয়োগের পথ ও অহিংসার পথের পথিক হইয়া নিজেদের তপস্তা ও দুঃখসহিষ্ণুতাদ্বারা জাতীয় স্বাধীনতা পৰ্য্যন্ত লাভ করা যায়, এই বিশ্বাস স্বয়ং হৃদয়ে পোষণ করিয়া মহাত্মা গান্ধী সকলের মনে উহা সঞ্চারিত করিতে চেষ্টা