পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] প্রাণের দেবতা শ্ৰীহরিকেই স্বামিরূপে বরণ করিয়া লইয়াছে। এখন সেই হরিই তাহার সর্বস্ব। সে ত হরির দর্শন ভিন্ন আর কিছুই চাহে না । তাই সে রাণীর পা টিপিতে টিপিতে শ্ৰীহরিরই স্বমিষ্ট নামটি মনে মনে জপ করিতেছিল। নাম করিতে কুরিতেই তাহার হৃদয়ের প্রেম উদ্বেলিত হইয়া উঠিয়াছে। সেইজন্যই বাহিরে এই ভাবোচ্ছাস । রাণীর বড় কোমল চিত্ত। তাই দাণীর ভক্তির উচ্ছ্বাস দেখিয় সেই চিত্ত আৰ্দ্ৰ হুইয়া গেল। দাসীও আবার তাহাকে ভগবানের প্রেমের রসপূর্ণ কাহিনীই শুনাইতে লাগিল । রাণী আর তাহাকে দাসী বলিয়া মনে করিতে পারিলেন না । তিনি শ্রদ্ধায় ও ভাবে পূর্ণ হইয়া বলিতে লাগিলেন- “বল, ঐ সুমধুর ভক্তির কথাই আমাকে বল । তোমার মুখ হইতে যে স্বধার ধারা ঝরিয়া পড়িতেছে । তুমি আমার প্রাণে সে অমৃত বর্ষণ করিতেছ।" ভক্তমাল বলিতেছেন— “কহ পুনঃ পুনঃ কহ অহা বল বল ॥ শুনিতে শুনিতে রাণী মগন হইল । দাসীর প্রশংসা করি কহিতে লাগিল ॥ তুমি ত আমার পদসেবা-যোগ্য নহ । দাসী যে তোমারে বলি অপরাধ সহ ॥ অতএব তুমি মোর পদ ছড়ি দেহ । শিয়rর অসিয়া শিরে চবণ ধরহ ॥ এতেক বলিয়৷ গাঢ় আলিঙ্গন কৈল । দুই জনে প্রেমানন্দে বিহবল হইল। দাসী কহে ঠাকুরাণী দেখঙ্গ ভাবিয়া । ভুঞ্জিলে বিষয়-স্বপ মোহিত হইয়। এ অনিতা সুপ তাতে কত বা আস্বাদ । কৃষ্ণ-প্রেম-ভকতির কি সুন্দর স্বাদ ॥ অনিত্য বিষয়-সুখ হৈল আর গেল । কৃষ্ণপ্রেম পরাৎপর নিত্য করে আলো । রাণী কহে তোমার সঙ্গেতে তা বুঝিনু । আজি হৈতে গুরু করি তোমারে মানিমু ॥ আজি হৈতে বিষয়ের গুণ তেযাগিনু । কৃষ্ণ-প্ৰেম-পন লাগি বিষয় সাপিমু ॥” জয়পুরের রাণী ভক্তির জন্যই ব্যাকুল হইয়া উঠিলেন। তিনি আর জাতির বিচার করিতেও পারিলেন না । নিম্নবর্ণের এই দাসীকেই গুরুরূপে বরণ করিলেন ; তাহার কাছে ভক্তিধৰ্ম্মে দীক্ষা গ্রহণ করিতেও কোনরূপ সঙ্কোচবোধ করিলেন না । , - রমণীর ধনৈশ্বৰ্য্যের প্রতি ধে আসক্তি, তাহা একে মহিলা-মজলিস-বৈষ্ণব যুগে নারীর শক্তি ৭২৩ বারেই চলিয়া গেল। র্তাহার স্বর্ণখচিত বসন ও রত্নাদি ভূষণ কোথায় পড়িয়া রহিল । রাণী সীমান্য বস্ত্র পরিধান করিয়া নিরন্তর প্রাণের দেবতাকেই ডাকিতে লাগিলেন । অল্পদিনের মধ্যেই তাহার মনোরথ পূর্ণ হইল। প্রেমে ও পুর কে র্তাহার হৃদয় ভরিয়া উঠিল । তিনি ভক্তির উচ্ছ্বাসে আত্মহারা হইয়া, তাহার প্রেমের দেবতাকে লষ্টয়াই অধিক সময় যাপন করুিতে লাগিলেন। এতদিন রাণীকে অন্তঃপুরে পদার আড়ালেই বাস করিতে হইত। এখন আর সে পর্দা ও রঙ্গিল না, অন্তঃপুর এবং তাহার বাপ্তিরের সঙ্গে ও তেমন একট। প্রভেদ রহিল না । রাণী, ভক্ত বৈষ্ণবদিগের সঙ্গেই মিলিত ইয়া শ্ৰীহরির চরণ সেবা করিতে লাগিলেন । * এই সময়ে রাজা মাধব সিংহ রাজ্যে"উপস্থিত ছিলেন ন। তিনি যুদ্ধের জন্য অন্য জায়গায় গমন করিয়াছিলেন। দেওয়ূ:নেব হস্তেই রাজ্যের সমস্ত ভার অর্পিত হইয়াছিল । রাজা স্বয়ং রাজ্যে উপস্থিত থাকিলে, বুঝি বা অন্তঃপুরে এমন একটা ব্যাপার হঠাং খটিয়া উঠিতে পারিত না । দে ওয়ান মহাশয় রাণীর সব কাজকৰ্ম্ম দেখিয়া ত অবাকু ! তিনি রাণীর কাছে লোক প্রেরণ করিয়া বলিয়া পাঠাইলেন, “আপনি রাজরাজেশ্বরী হইয়া এ-সব কি কবিতেছেন ? অন্তঃপুরের পুর্দা তুলিয়া দিলেন কেন ? কতকগুলি বৈষ্ণবের সঙ্গেই বা মিশিভেছেন•কেন ?" রাণী দেওয়ান ে বলিয়া পাঠাইলেন, "দেওয়ান, তুমি আমাকে' আর রাণী বলিয়া সম্বোধন করিও না । আমি যে এখন শহুরির দাসী বলিয়াই আমার নাম লিপাইয়াছি। আমার পর্দাই શ કાળા ? জাতিই বা কোথায় ? আমার আর লজ্জা-সরমই বা কোথায় ? কোথায় বা আমার ধনৈশ্বৰ্য্য ? আমি শ্রীহরির প্রেমে পাগলিনী হইয় সৰ্ব্বথই যে তাহার চরণে অপণ করিয়াছি।”— “রাণী কহে রাণী বলি না কহিও মোরে । * দাসী নাম লিখে দিনু যুগল-কিশোরে। জঙি-পাতি তেয়গিলু বৈষ্ণব সমাজে । j: 率 冰 এ-সব রিপুর হাত যদি ছাড়াইনু । তবে আর কারে ভয়, নিৰ্ব্বিত্ব হইনু ॥ অতএকবিবরণ দেওয়ানেরে কহ । d শ্ৰীচরণে সপিয়ছি দেহ পর্দু সহ r;