বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ রামমোহনের মৃত্যুর পরে প্রচারিত হইয়াছে। রামমোহন-সংক্রান্ত স্মৃতিকথার আলোচনা করিলে আমরা দেখিতে পাই, রামমোহনের মৃত্যুর পর তাহার বন্ধু ও সঙ্গীর তাছার মুখে শোনা বলিয়া এমন অনেক তথ্যের প্রচার করিয়াছেন যাহা অতি সহজেই অমূলক অথবা সন্দেহজনক বলিয়া প্রমাণ করা যায়। ইহার একাধিক দৃষ্টান্ত আমি দিতে পারি। সেজন্ত আমি রামমোহন-সম্পর্কে তাহার বন্ধুবৰ্গ ও সঙ্গীদের যে-কোন স্মৃতিকথাকে নির্বিচারে মানিয়া লইতে প্রস্তুত নই। ডাঃ কাপেন্টারের অজ্ঞাতনামা বন্ধুর উক্তি এই ধরণের স্মৃতিকথা। এইবার চজশেখর দেবের উক্তির কথা দেখা ধাকৃ। রমাপ্রসাদ বাবু অবস্ত বলিয়াছেন, রাজারাম-সম্পৰ্কীয় কাহিনী যে রামমোহনের নিজের মুখে শোনা এ-বিষয়ে চন্দ্রশেখর দেব “সন্দেহের অবসর রাখেন নাই”। তিনি যদি এ-বিষয়ে মিস কলেটের রামমোহন-জীবনী হইতে র্তাহার প্রবন্ধে উদ্ধৃত রাখালদাস হালদার কর্তৃক ধৃত বাক্যটি ভাল করিয়া পড়েন, তাহা হইলে দেখিতে পাইবেন রামমোহনের নিকট শুনিয়াছেন, এরূপ কোন উক্তি চন্দ্রশেখর দেব করেন নাই।* তবু বলি, ডাঃ কাপেন্টারের অজ্ঞাতনাম বন্ধুর উক্তি ও চন্দ্রশেখর দেবের উক্তি অমূলক বলিয়া প্রতিপন্ন হইলেও রাজারামের পক্ষে যেমন রামমোহনের পালিত পুত্র হওয়া অসম্ভব নয়, তেমনই আবার অপর পক্ষে তাহার রামমোহনের পুত্র হওয়াও অসম্ভব নয়। এখন দেখিতে হুইৰে, পারিপাশ্বিক অবস্থা ও প্রমাণ বিবেচনা করিলে এই দুইটি সম্ভবপর ঘটনার কোনটি বেশী সম্ভব বলিয়া প্রতিপন্ন হয়। (৩) রাজারাম ও তাহার মাতা এইবার রামমোহনের মুসলমান-প্ৰণয়িনী ও র্তাহার গর্ভজাত পুত্র থাক। সম্বন্ধে কি-কি সমসাময়িক বা পরবর্তী সাক্ষ্য আছে তাহা দেখা शांक ! এই সকল সাক্ষ্যের আলোচনা করিতে গিয়৷ চৰ্ম্ম-মহাশয় একটি গুরুতর ভুল করিয়াছেন। তিনি লিখিয়াছেন, “রাজারাম যে রামমোহন রারের পালিত পুত্র নহেন,—প্রণয়িনীর পুত্র, তাহার সম্বন্ধে কিংবদন্তীর প্রথম বাহক চন্দ্রশেখর দেৰ” ( ১৮৬৩ ) । ইহ। ঠিক নহে, কারণ

  • আমার মূল প্রবন্ধে চন্দ্রশেখর দেবের উক্তির যে বাংলা তাৎপৰ্য্য (ইংরেজী অংশ সমেত) দেওয়া হইয়াছিল, তাহাতে জনবধানতাবশতঃ একটি ভুল ছিল। রমাপ্রসাদ বাবু মিল কলেটের ইংরেজী বাক্যটি উদ্ধৃত করিয়াছেন, কিন্তু নিজে আমার বাংলা তাৎপর্ঘ্যের ভুলটির পুনরাবৃত্তি করিয়াছেন । বাক্যটি এই—

“Chunder Sekhar Deb—the disciple who, it will be remembered, suggested the formation of the Brahmo Somaj—stated in coversation with a friend, R. D. H., at Burdwan, so late as January, 1863, that ‘rumour had it that at one time he as Rammohun ) had a mistress ; and people believed Rajaram was his natural son, though he himself said Rajaram was the orphan of a Durwan of some Saheb, and Rammohun Roy brought him up.” ( Miss Collet, 2nd td., p. 169.) @ শেবের “he himself” কথা দুইটিতে চঞ্জশেখর দেৰকে সূচিত হইতেছে--রামমোহনকে নয়। সুতরাং দেখা বাইতেছে রামমোহনের ෆ්‍ර अरे कांश्निौ स्ऽनिब्रांtइब, १-क्षी कवt१थग्न cफ़्र বলেন নাই । রামমোহন ও রাজারাম @8° ब्रांशtशांहटमब्र औबिठकांश इदेष्ठ *ब्रवउँों कांग गर्दीड dई छनथटि ও অভিযোগ চলিয়া জাসিয়াছে। এই সকল জনশ্রুতিতে র্তাহার ববনী-সংসর্গের প্রতি যে ইঙ্গিত আছে তাহা কখনও প্রচ্ছদ কখন-বা স্পষ্ট। এই সকল সাক্ষ্য ও জনশ্রুতি যে-সকল পুস্তকপত্রিকাতে আছে নিয়ে তারিখ-অনুযায়ী তাহাদের নাম ও প্রকাশকাল দেওয়া গেল ; স্থানের অল্পতাবশতঃ এই ইঙ্গিতগুলি এখানে মুক্তি হইল ন – (১) ১৮২১ সনে রংপুর-প্রবাসী গৌরীকান্ত ভট্টাচাৰ্য্য রামমোহনের মতামতের প্রতিবাদ-স্বরূপ ‘জ্ঞানাঞ্চন’ নামে একখানি পুস্তক প্রণয়ন ও প্রকাশ করেন। উছার পৃ. ১৩৯-৪০ দ্রষ্টব্য। (২) ১৮২২ সনে "ধৰ্ম্মসংস্থাপনাকাজী রচিত ‘চারি প্রশ্নের চতুর্থ প্রশ্ন ( চারি প্রশ্নের উত্তর, পাণিনি আপিস সংস্করণ, পৃ. ২৩৯ ) দ্রষ্টব্য। (৩) ১৮২৩ সনে প্রকাশিত “পাষগুপীড়ন (রামমোহনের চারি প্রশ্নের উত্তর’ পুস্তকের প্রত্যুত্তর) গ্রন্থের পৃ. ১১৯, ১২৬-২৭, ১৫৮-৫৯ ও ১৬৩ জষ্টব্য । ( s ) ১৮৩০ সনের ৪ঠা ও ৮ই নবেম্বর তারিখে ‘সমাচার চত্রিকা’র প্রকাশিত “দ্বিজরাজের খেদোক্তি” নামক ব্যঙ্গকবিত:সংবাদপত্রে সেকালের কথা’, ২য় খণ্ড, ভূমিকা গ্রন্টব্য। ‘রাজা’ ৰ রাজারাম যে রামমোহনের “ধবনী-প্রেয়সী’র সস্তান, এই কবিতায় তাহার উল্লেখ আছে । ( a ) ১৮৪৭ সনে ‘নিত্যধৰ্ম্মামুরঞ্জিক-সম্পাদক নন্দকুমার কবিরত্ব ভট্টাচার্ষ্য রচিত এবং ১৮৫৮ সনে প্রকাশিত বিবাদভঙ্গার্গব, পু. ১৩ জষ্টব্য। এই পুস্তকের উদ্বেগু কাশীনাথ তর্কপঞ্চানমের পাষগুপীড়ন ও রামমোহনের পথপ্রদান এই দুই গ্রন্থের বিচার। ইহা ছাড় চন্দ্রশেখর দেব, পাদরি কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় ও শম্ভুচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের উক্তি আমি পুৰ্ব্ব প্রবন্ধে ७कठ করিয়াছি । রমাপ্রসাদ বাৰু উপরোক্ত গ্রন্থসমূহে নিবন্ধ উক্তির অনেকগুলি দেখেন নাই। কিন্তু যেগুলি দেখিয়াছেন সেগুলির সম্বন্ধে তিনটি অদ্ভুত আপত্তি তুলিয়াছেন । প্রথমে তিনি বলেন, ‘চারি প্রশ্নের চতুর্থ প্রশ্নে অনেক বিশিষ্ট সন্তান” এবং “তত্তং কৰ্ম্মানুষ্ঠাতৃ মহাশয়দিগের" যে উল্লেখ আছে তাহাদের মধ্যে রামমোহনকে গণ্য করিবার অধিকার আমাদের নাই, কারণ এই অভিযোগ ব্যাপকভাবে বহুবচনে করা হইয়াছে,—ব্যক্তিগতভাবে রামমোহনকে লক্ষ্য করিয় করা হয় নাই। দ্বিতীয়তঃ তিনি বলেন, “দ্বিজরাজের খেদোক্তি- “ক্ষেপার উক্তি,” উহার কোন ঐতিহাসিক মূল্য নাই। তৃতীয়তঃ তিনি বলেন, রাজারামের বয়সের যে হিসাব আছে তাহাঁতে তাহার জন্ম রামমোহনের কলিকাতায় আসার পর হইয়াছিল বলিয়া ধরা যায় ; চন্দ্রশেখর দেব তখন রামমোহনের সতি ঘনিষ্ঠভাবে সংশ্লিষ্ট ; সুতরাং রাজারাম রামমোহনের কোন প্রণয়িনীর গর্ভজাত সস্তান হইলে চন্দ্রশেখর দেব প্রত্যক্ষ জ্ঞান হইতেই তাহ বলিতেন,—জনপ্লবের দোহাই দিতেন ল। এই কয়টি আপত্তি সম্বন্ধে আমার বক্তব্য এই – ( ১ ) বিচারে পরাস্ত ও অপদস্থ করিবার উদ্দেপ্তেই যদি কাহাকেও কোন প্রশ্ন করা হয় এবং সেই প্রশ্নে যদি চরিত্র বা বিশেষ কোন জাচার-ব্যবহারের প্রতি ইঙ্গিত থাকে, তাহ হইলে শুধু উহা ব্যাপকভাবে বা বহুবচনে করা হইয়াছে বলিয়াই উহাতে প্রশ্নের লক্ষীভূত ব্যক্তির প্রতি ইঙ্গিত নাই, এই তর্ক যে কত দূর অযৌক্তিক রমাপ্রসাদ