পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এক জন উদীয়মান চিত্রশিল্পী ঃ রামেশ্বর চট্টোপাধ্যায় শ্ৰীঅৰ্দ্ধেন্দ্রকুমার গঙ্গোপাধ্যায় শযুক্ত অসিতকুমার হালদার মহাশয় লক্ষ্মেী সরকারী শিল্পবিদ্যালয়ে অধ্যক্ষের পদে প্রতিষ্ঠিত হবার পর, একাধিক বাঙালী ছাত্র হালদার-মহাশয়ের স্কুলে শিল্পশিক্ষার জন্য ভৰ্ত্তি হয়েছিল। এদের মধ্যে অধ্যক্ষেব শিক্ষা সফল ক’রে যার কতবিদ্যা হতে পেরেছেন, তাদের মধ্যে রামেশ্বর চট্টোপাধ্যায়ের নাম বিশেষ উল্লেখযোগ্য। ইনি গোরক্ষপুর কলেজের প্রফেসর, আগ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্ত, স্বনামধন্ত শ্ৰীযুক্ত চারুচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্থযোগ্য পুত্র। গোরক্ষপুর স্কুলে মাটিকুলেশন পাস করে ইনি ১৯৩১ সালে হালদার-মহাশয়ের পরিচালিত ফাইন আর্ট ক্লাসে যোগ দেন। পৌরাণিক চিত্রে ও অলঙ্কারশিল্পে ইনি বিশেষ পারদর্শিত দেখিয়েছেন । নন্দলাল বস্তুর পরে, আর কোনও বাঙালী শিল্পী পৌরাণিক চিত্রের পরিকল্পনায় বিশেষ আকৃষ্ট হন নি। আধুনিকতার অতিপ্রগতির দাপে, অনেক শিক্ষানবীশ শিল্পীর মনে করেন, যে, সাধারণভাবে বাঙালী হিন্দুরা প্রাচীন পৌরাণিক ভাব-ধারা হাতে বিচ্ছিন্ন হইয়। পাশ্চাত্য ভাবের প্রভাবে ভারতের প্রাচীন পুরাণে বর্ণিত রুটির জগতে আমরা সম্পূর্ণ ভাবে বিশ্বাস সরিয়েছি। সবুজ পত্রে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ বহু বংসর পূৰ্ব্বে লিখেছিলেন, “আমরা , পৌরাণিকতার গণ্ডী অতিক্রম করিয়া আসিয়াছি।” এ কথা শুনিশ্চিত যে অনেক ইংরেজী-শিক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যায় পারদর্শী বাঙালী শূৰ্ণরূপে পৌরাণিক যুগের ভাব-ধারায় বিশ্বাস হারিয়েছেন। মথচ এমন অনেক উচ্চশিক্ষিত লোক এখনও দেখা যায় ইগরা এই আধুনিক যুগেও পৌরাণিকতার সংস্কার থেকে ধকবারে মুক্তি পান নি। এলাহাবাদের রামলীলার মিছিল থে অনেক সংস্কার-মুক্ত উচ্চ-শিক্ষিত বাঙালীকে অশ্রুপাত ধরতে দেখা গিয়েছে ৯ পৌরাণিক জগতে বিশ্বাস হয়ত

  • ফালানি কাঠের মত নীরস প্রবাসী-সম্পাদকের এই সত্য অপবাদ টিয়৷ পকিবে।

মানুষের মনের শিশুভাবের লক্ষণ। অনেকে বলেন যে মানুষের “মানসিকভা” যখন বয়ঃপ্রাপ্ত হয়--অর্থাৎ পরিণত পরিপক্ক-বুদ্ধিসঙ্গত হয়—তখনই এই আদিমজাতিস্থলভ, সরল, বিশ্বাসগুলি প্রাচীন জীর্ণ বসনের মত মানুষের মত থেকে আপনি খসে পড়ে। ইউরোপের নিত্য-পরিবদ্ধমান বিজ্ঞানবুদ্ধি দিনে দিলে, ইউরোপের ভক্তিবাদকে খ্ৰীষ্টীয় পুরাণের বহু দূরে অপসারিত করেছে। বিজ্ঞানের ঝড়ে ও বিছাতে মিষ্ট্রি ও মির্যাকূলের অশরীরী ছায়া দূরীকৃত হয়েছে। তথাপি, ইউরোপে পৌরাণিক ভাবধারায় বিশ্বাস একেবারে অন্তহিত হয় নি। ইউরোপের শিক্ষাতত্ত্বের মনীষী, বিশেষজ্ঞগণ শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রাচীন সাগার (Sagnর)উপকারিতা যথেষ্ট স্বীকার করেন। ইউরোপের অনেক স্কুল ও কলেজে গ্রীক, রোমান, ও নস পুরাণের ( Mythologyর ) পঠনপাঠনের বিশেষ ব্যবস্থা আছে । আমেরিকার স্কুলসমূহে ছাত্রদের প্রাচীন পুরাণের উপকথার রস চক্ষুষ করিবার সুযোগ Ե দেবার জন্য দলে দলে "বাসে" চড়িয়ে যাদুঘরে প্রাচীন শিল্পের নিদর্শনে পৌরাণিক চিত্রাবলী দেখান হয়। আমাদের দেশে অভ্যস্ত অল্পসংখ্যক লোক ইংরেজী শিক্ষিত। বাকী সকলে এখনও পৌরাণিকতার অন্ধযুগের "যে তিমিরে সে তিমিরে।” সুতরাং বৰ্ত্তমান যুগেও যে চিত্রকর পৌরাণিক বিষয়-বস্তু অবলম্বন ক’রে ছবি লিখে যাবেন, তিনি অন্ততঃ অনাহারে মারা যাবেন না । আগে বউবাজারের “আর্ট ষ্টুডিও", এবং পরে রবিবার পুণার "আর্ট প্রেস" যাদের ছবির তৃষ্ণ মেটাতেন, পৌরাণিক চিত্রের সস্তা প্রতিলিপি ছেপে সেই শ্রেণীর ক্রেতা এখন এক রকম অনাদরে পড়ে রয়েছেন। নন্দলালের "পটে” লেখা নূতন পদ্ধতির “শিবপুরাণ” পৌরাণিক চিত্রের পিপাসা একবার নূতন ক’রে জাগিয়েছিল। তার পথ অনুসরণ ক'রে দুর্গাশঙ্কর ভট্টাচাৰ্য্য, চৈতন্যদেব চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ দুই-এক জন চিত্রকর আমাদের কিছু আশা দিয়ে এসেছেন। কিন্তু নালালের পর আর কেহই