পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

tూ^8 প্রষণসী ●Nー8ミ. চলুন না, ওকে আর কুঁড়েমির প্রশ্রয় দেবেন না। আচ্ছা--- Cheerio !" স্বনন্দা চলে গেল। সে গেল, কিন্তু রেখে গেল তার কণ্ঠোচ্চারিত আমার নামটাকে। সেটা যেন কাটা হয়ে বুকে বিধে রইল। স্বনন্দা গেল কিন্তু কাটা গেল না । মনের মধ্যে সেই কাটার খচখচানি অত্যন্ত বেদনার সঙ্গে জাগালে আর এক দিনের কথা । এক দিন ছিল যেদিন জ্যোৎস্নার-জোয়ার-লাগা রজত রজনীতে তাকে কাছে টেনে নিয়ে চুপি চুপি বলেছি, “তোমায় আমি নিত্য নব নামে ডেকেও তৃপ্তি পাই নে, মনে হয় কিছুতেই যেন আমার সীমাহীন ভালবাসা প্রকাশ করতে পারলাম না। তাই নামের জালে আমার অস্তরের আকুতি ধরা পড়ল না। কিন্তু তুমি কি আমায় একবারও আমার নিজের নামে ডাকবে না, স্ব ?” তার স্বধাবী ওষ্ঠাধর ও প্রেমসিক্ত কণ্ঠস্বরে জামার নিজের নামটা শোনবার সে কি শিশুস্কলভ আগ্রহ ! কিন্তু নন্দা এত কথা বলতে পারে, আমার নামটা উচ্চারণ করতে তার যত লঙ্গা! বহু সাধ্যসাধনায় একটা তিক্ত ওষুধ খাবার মত মুখ ক’রে যদি বা প্রস্তুত হ’ত, অকস্মাং কলঝঙ্কত হাস্যপ্লাবনে সব ভেসে যেত। আবার কিছুক্ষণ পরে চেষ্টা ক’রে গম্ভীর হয়ে বলতে গিয়েই সঙ্গে সঙ্গে আমার কোলের মধ্যে মুখ গুজে ফেলত। আমি অভিমান-গম্ভীর কণ্ঠে বলতাম, *আচ্ছা স্ব, আমার নামের শেষাৰ্ধটা ত বলা তোমার পক্ষে অতি সহজ, কারণ আমায় সম্বোধন করার ওইটেই শ্রেষ্ঠ শর্ট-কাট, আর প্রথম অক্ষরটা ত তোমার নামেরও প্রথম অক্ষর। তবে•••? তাহলে বুঝি শেষাদ্ধটার সম্বন্ধে সন্দেহ— “যাও—” সঙ্গে সঙ্গে সাদর কষ্ঠাবেষ্টন। আমি সাভিমান অমুযোগে বলতাম, “সত্যিই আমি যাচ্ছি। আমার নামটার যখন নেহাৎই ছৰ্ভাগ্য—” আমার কথা শেষ হবার আগেই নদী মধুর লজ্জ মুখে মেখে আমার মুখখানা নিজের দিকে ফেরাতে ফেরাতে বলত, “রাগ করো না, প্রিয়।" আমার আর অভিমান করা হ’ত না, সতৃপ্ত উল্লাসে তাকে বুকে নিয়ে আদরে জাদরে আচ্ছন্ন ক'রে দিতে দিতে বলতাম, “কিন্তু ফাকি দিয়ে এড়িয়ে গেলে চলবে না। কেমন ক'রে বুঝব যে এটা তোমার ভালবাসার স্বীকারোক্তি কি সম্বোধন ।” “আচ্ছা গো আচ্ছা, ফাকি দেব না । তোমায় ফাকি দেওয়া যায় না কি ? স্ব—প্রি—য়, স্থ–প্রিয়, স্বপ্রি—য় { হ’ল ?” তখন বোধ করি নন্দাকে চুম্বন-বন্তীয় ভাসিয়ে নিয়ে যেতে ইচ্ছে করছিল। সে কি অবর্ণনীয় তৃপ্তি ! নামটা যেন বিদ্যুতের মত আমার শিরায় শিরায় সঞ্চারিত, সঞ্চালিত इधिकृल । cन ७ी-क नि-न ! কিন্তু আজ আমার নামটা একান্ত অক্লেশে, অনায়াসে কুণ্ঠাহীন স্বরে স্বনন্দ উচ্চারণ ক'রে গেল। আমার নামটা আজ আর তার কাছে বিশেষ কিছু নয়, সাধারণের সঙ্গে আজ আমার পার্থক্য ঘুচে গেছে। আমি স্বপ্রিয় চ্যাটাজী, তার বেশী নয় ! পর্দার বাইরে থেকে বেয়ারা বললে, “হজু—র—র !" তার বলবার আগেই আমি বুঝেছিলাম সে কি বলতে এসেছে, কিন্তু আজ আর ওসব ভাল লাগছিল না, তাই তাকে উত্তর না দিয়ে টেচিয়ে বললাম, “ভেতরে আয় স্বত্রত।" সে পর্দা সরিয়ে ঘরে ঢুকে বললে, “মেমসাহেব ত হুকুম দিয়ে গেলেন, তোমাকে যাতে কুঁড়েমির প্রশ্রয় না দিই। তা আমার পক্ষে তার আদেশ অমান্ত করা উচিতও নয়, সাহসও নেই। কিন্তু ব্যাপারটা কি বল ত হে ? এমন সময় গুয়ে থাকবার পাত্র ত তুমি নও। অস্কখ করেছে বলেও ত মনে হচ্ছে না । হ’ল কি তোমার ?” তার অতগুলো প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে শুধু বললাম, “বো? সব বলছি, ব্ৰত । স্বত্রত বিস্থিত কৌতুহলে একটু থমকে গিয়ে বললে, “কি বললে আবার বল ত ।” “অবাক হয়ে গেছিল বডড, না 7 নন্দাও হয়েছিল, কিন্তু সে সাড়া দেয় নি। বলছিলাম কি জানিস ব্ৰত।" আমার কথা শেষ না-হতেই স্ত্রত বললে, “কি বলছিলি তা জানি না, তবে এটুকু জানতে চাই, তুই কি সত্যিই জামা ৰত ব'লে তাকলি প্রিয় ?”