বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀԵ করতে হত না । লোকের দরুনূই আমাদের এইসব ‘কুটীরে বাস করতে হচ্ছে।” “যদি ফুটারেই আমাদের বাস করতে হয়—তাতেই বা কি ?” “এইসব কুটীরে বাস করা তেমন কিছু খারাপ নয়— তুমি ত অনেক দিন বাস করেছ—কিন্তু তোমার ত কিছুই লাভ হয়নি। একজন গরীব লোক, যেখানেই থাকুক না কেন—রেলওয়ে কুটীরে কিংবা অন্য জায়গায়— তাহার জীবনটা কি-রকম বলে দিকি ? ঐসব জোক তোমার জীবনটা শুষে খায়, তোমাকে টেনে তোমার সমস্ত রস-কস বের ক’রে নেয়, আর যখন তুমি বুড়ে হ’য়ে পড়েছ, তা’র তোমাকে জঞ্জালের মতন বাইরে ছড়ে ফেলে’ দেয়। তুমি কত মাইনে পাও ?” “বেশী নয় ভাসিলি-১২ টাকা মাত্র ।” “আর আমি পাই ১৩০–আচ্ছা, তোমাকে জিজ্ঞাসা করি, এর কারণ কি ? আফিসের উপ-নিয়ম অনুসারে একই হারে টাকা পাবার কথা—অর্থাং মাসিক ১৫ টাকা, আর আলো ও কয়লা । কে বলো দিকি তোমার জন্তে মিষ্টি করলে ১২ টাকা,আর আমার জন্তে নিদিষ্ট করলে ১৩০ টাকা ? এর কারণ কি ? তোমাকেই জিজ্ঞাসা করি। আর তুমি বলে। কিনা এরকম জীবন-ধারা খারাপ নয়। আমার কথা ভালো ক’রে বুঝে দেখ, আমি ৩ কিংবা দেড় টাকার জন্য ঝগড়া করছিনে। যদি এরা আমাকে সমস্ত টাকাটাই দেয়, তা হ’লেই বা কি ?—গত মাসে আমি ষ্টেশনে ছিলুম, ঘটনাক্রমে ডিরেক্টার সেই সময় ঐখান দিয়ে যাচ্ছিলেন। ষ্টেশনেই তার সঙ্গে দেখা হ’ল । একটা সমস্ত রেলগাড়ী তিনি নিজে দখল ক’রে বসেছিলেন । ষ্টেশনে নেমে প্ল্যাটফর্মের উপর দাড়িয়ে দেখতে লাগ লেন-ন আমি এখানে আর বেশীক্ষণ থাকুব না। যেখানে আমার চোখ যায় আমি সেইখানেই যাবে।” “কিন্তু কোথায় যাবে তুমি, ভাসিলি ? এইখানেই থাকে। এর চেয়ে ভালো জায়গা কোথাও পাবে না। এখানে তোমার গৃহ আছে, উত্তাপ আছে, এক টুক ে। ভূমিও আছে। তোমার স্ত্রী বেশ কণিষ্ঠ-গ “জমি ! আমার জমিটা তোমার দেখা উচিত— প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩২ ২৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড সেখানে একগাছা কাঠিও নেই। এই বসন্তকালে আমি কিছু কোপি রোপণ করেছিলুম, একদিন বিভাগ-পরিদর্শক ঐখান দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি বললেন,—একি? আমাকে রিপোর্ট করনি কেন? অনুমতির জন্য অপেক্ষ করলে না কেন ? এখনই সমস্ত খুড়ে ফ্যালো। এর একটু" চিহ্নও যেন না থাকে —তখন তিনি মদের নেশায় ভো হযেছিলেন, অন্য সময় হ’লে তিনি একটি কথাও বলতেন না। তিন টাকা জরিমানা !” কয়েক মুহূৰ্ত্ত ভাসিলি নীরবে তাহার পাইপ ফুকিতে লাগিল ; তার পর নিম্নস্বরে বলিল—“আর-একটু বেশী হ’লেই আমি একেবারেই তা’র দফা রফা কর্তুম।” “ভাই প্রতিবাসী, তোমার মাথা বড় গরম, এই পৰ্য্যস্ত আমি বলতে পারি।” “না, আমার মাথা গরম নয়, আমি যা বলছি, সেসমস্তই ন্যায়বিচারের হিসেবে । তিনি আবার আমার লালপান পাত্রটা চান। আমি বিভাগের সুপারিন্টেগুেন্টের কাছে এই বিষয়ে নালিশ করব। তখন দেথা যাবে!” বস্তুতঃ সে নালিশও করিয়াছিল । একদিন বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক ক্লাইনের আগাম পরিদর্শন করিতে আসিয়াছিলেন । তিন দিনের মধ্যে কতকগুলি প্রধান লোক রেল রাস্ত তদারক করিবার জন্ত আসিবেন। সমস্তষ্ট, যেখানে যেমনটি হওয়া ভূ চত বেশ গুছাইয়া রাখিতে হইবে । তাহাদের অধিবা আগে নুতন কাকর আনাইয়া, ছুংমুশ করিয়া সমান করা इईशय्छ.cबन পাতিবার কাঠগুলা এগ জামিন করা হইয়াছে, লোহার গুটিকাগুল দৃঢ়ৰূপে ভাটিয়া দেড়ম হইয়াছে, মাইল-খোঁটাগুলো নূতন,করিয়া রং করা ইষ্টয়াছে এবং পানিকট হলদে বালি চৌমাথার উপর ছড়াইয়া দিতে হুকুম দেওয়া ইষ্টয়াছে। এমন কি, একজন স্ত্রী তা’র বুড়োকে, একটা ছোটো ঘাসের জমি ছাটিয়া চুটিয়া ঠিক করিবার জন্য তাহার কুটীর হইতে জোর বরিয়া বাহির করিয়া দিয়াছে। বৃদ্ধ যুটীর ছাড়িয়া কোথাও যাইত না । সেমন সমস্ত সুশৃঙ্খল করিবার জন্ত প্রাণপণে খাটিয়াছে, এমন কি তার কোর্তাটাও মেরামং করিয়াছে,তাহার তাম্র চাপরাশ টাও ঘৰিয়া-মজিয়া বৰু-ঋকে বরিয়া তুলিয়াছে।