পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কম্ভিক সিংহলের উৎসৰ ঃ কাণ্ডি-নৃত্য বা উদণরণনাটুম SOS ক্রেমে এই নাচ উৎসবের অঙ্গ হয়ে দাড়াল, সিংহলবালীরাও এ-নাচে দক্ষ হয়ে উঠল । এ-নাচ বৰ্ত্তমানে বৌদ্ধ ধর্মের অঙ্গরূপে দেখছি, কিন্তু দ্বাদশ শতাব্দী পৰ্য্যস্ত এ-নীচের সঙ্গে ধৰ্ম্মের কোন যোগ ছিল না । সেই সময় পোলানারুয়ার রাজা বিজয়বান্ত সৰ্ব্বপ্রথম এই নাচকে বৌদ্ধ উৎসবের অঙ্গীভূত করেন । রাজা নিজেও এ-নাচ খুব পছন্দ করতেন। সেই শতাব্দীতে পরাক্রমবাহু নামে আর এক নরপতি এ-লাচে বিশেষ ক’রে উদ্যোগী হন, তার চেষ্টায় রাজপরিবারের প্রায় প্রত্যেকেই নাচের চর্চ রাপতেন। রাজা নিজেও সুদক্ষ নৰ্ত্তক নামে পরিচিত ছিলেন । তিনি বিশেষ ক’রে পুরুষদের এ-বিষয়ে উৎসাহিত করেন । বৰ্ত্তমানে ডস্তুরহাতে নাচ কাণ্ডি-নাচের একটি প্রথা । এর প্রথম চলন করেছিলেন এই রাজ। স্বয় । নাচের আর ও পরিবর্তন তিনি এনেছিলেন । ত্রয়োদশ শতাব্দীতে রাজনৈতিক গোলযোগে এই নাচ আর তেমন উৎসাহ পায় নি ; চতুৰ্দ্দশ শতাব্দীর মধ্যভাগে কাণ্ডি-মাচকে রাজা বিজয়বাহু আবার সজীব করলেন, সব নাচিয়েদের একত্র করে । সব প্রাচীন উংসবাদির তিনি পুনঃপ্রচলন করলেন। কিন্তু সেই রাজার মৃত্যুর পর আর সে রকম উৎসাহ দেবার লোক ছিল না। তখন দেশে পর্তুগীজদের আধিপত্য, তাদের জালায় স্বস্থির হয়ে কেউ রাজধানী গড়বার স্থযোগ পায় না । নাচিয়েরাও রাজাদের উৎসাহ বা সাহায্য না পেয়ে নিরাপদ স্থানে থাকবার ইচ্ছায় মধ্যপ্রদেশ কাণ্ডিতে আশ্রয় নিল । সেখানে নিজের কোন রকমে নাচের প্রতি নিজেদের ভালবাসার টানে এই নাচকে বাচিয়ে রেখেছিল । এই সময় থেকে এই নাচ সম্পূর্ণরূপে একটি সম্প্রদায়ভুক্ত হয়ে পড়ে। তারাই 'বেরোয়া' নামে লোকের কাছে পরিচিত। বহুকাল পরে দ্বিতীয় বিমলধৰ্ম্মাস্বৰ্য্য ধৰ্ম্মের প্রচারে উদ্যোগী হন ও বুদ্ধের দন্ত-মন্দির স্থাপন করেন। সঙ্গে সঙ্গে আবার নাচিয়েরা এসে তাতে যোগ দিল । পুনরায় অষ্টাদশ শতাব্দীতে রাজা কীৰ্ত্তিন্ত্র খুব উৎসাহের সহিত ধৰ্ম্মকার্ধে মন দিলেন। তিনিই নূতন করে ভিক্ষুসংঘ ইত্যাদি স্থাপন, মন্দির-রচনা প্রভৃতি করলেন । কীৰ্ত্তিী রাজা গজবাহুর দক্ষিণ-ভারত-বিজয় উৎসবের পুনঃপ্রবর্তন করলেন, কাণ্ডি-পরহেরাঞ্চ শোভাযাত্রা ; হাতীগুলির পিছলে এক দল নৰ্ত্তক পটিনী দেবীর মন্দির স্থাপনা করলেন। বর্তমান কাণ্ডিতে যতগুলি বৌদ্ধ উৎসবের চলন আছে তার পুনঃপ্ৰবৰ্ত্তক এই রাজা । তারই উৎসাহে লাচিয়েরাও আবার নাচের চর্চায় মনোধোগ দেয়, তার পর থেকে ধৰ্ম্ম-উৎসবাদি ও নাচ-গান নিৰ্ব্বিঘ্নে আজ পর্য্যস্ত চলে আসছে । এই নৰ্ত্তক-সম্প্রদায়ের সকলেই বৌদ্ধ এবং এদের নাচ বৌদ্ধ উৎসবের সঙ্গে জড়িত হলেও অনেক উৎসবে হিন্দু দেব-দেবীর প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। কাণ্ডিতে বুদ্ধদন্ত-মন্দির ছাড়া আরও তিনটি মন্দির আছে, একটি পট্রিনীদেবীর (দুর্গ), একটি নাথ-দেবতার (মহাদেব ), একটি কাতারগামার (কাৰ্ত্তিক) ও অপরটি বিষ্ণুর । বৌদ্ধর এই দেবতাদেরও শ্রদ্ধার সহিত পূজা করে। পাটনী দেবীর এদেশে আগমনের কথা আগেই বলা হয়েছে, অন্য দেবতারাও এসেছিলেন এইরূপ নানা অবস্থায় পড়ে । আগেই বলেছি, সিংহলের কাণ্ডি-প্রদেশের বেরোয় জাতই এ-নাচের চর্চা ক’রে থাকে। রাজা কীৰ্ত্তিীর পরে কোন রাজাই জনসাধারণের মধ্যে এর প্রচার করবার