পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাহার তাহার ভ্রাতৃপুত্রের শিক্ষার তত্ত্বাবধান সম্বন্ধেও তাহার সহিত বিবঙ্গ করিয়াছেন। হিন্দুদিগের পৌত্তলিকত ধ্বংসের চেষ্টায় রামমোহন রায় যেরূপ আগ্রহ প্রকাশ করিয়া থাকেন, তাহার ধৰ্ম্মান্ধ মাতাও -অৰিরত তাহার বিক্ৰদ্ধাচরণে সেইরূপ আগ্রহ প্রকাশ করেন ॥৯ রামমোহন রায় যদি ভ্রাতুষ্পুত্র গোবিন্দপ্রসাদের শিক্ষার ভার পাইতেন তবে নিশ্চয়ই তিনি কলিকাতায় আনিয়া র্তাহাকে ইংরেজী পড়াইতেন। মুপ্রিম কোর্টের মোকদ্দমার সকল ইংরেজী কাগজপত্রেই গোবিন্দপ্রসাদের বাংলা দস্তথখ দেখা যায়। সুতরাং বুঝিতে হইবে গোবিন্দপ্রসাদ ইংরেজী জানিতেন না। রামমোহন রায়ের পক্ষে গোবিন্দপ্রসাদের শিক্ষার ভার নিজে গ্রহণ করিবার ইচ্ছা প্রকাশ করা, এবং তারিণী দেবীর পক্ষে তাহাতে আপত্তি করা, দুইই স্বাভাবিক । স্বতরাং দাকোস্তার এই সংবাদ অবিশ্বাস করা যায় না। মাতপুত্র উভয়ের মত বিভিন্ন হইলেও, মন একই রূপ উপাদানে গঠিত ছিল। উভয়ের মনেরই প্রধান অঙ্গ ছিল, গভীর বিশ্বাস এবং বজ্ৰদৃঢ় সংকল্প। এইরূপ মনোবৃত্তিসম্পন্ন মাত-পুত্রের মধ্যে যখন ধৰ্ম্মবিষয়ক মতভেদ লইয়া বিরোধ উপস্থিত হইল, তথন সেই বিরোধ যে শেষ পৰ্য্যন্ত গড়াইবে ইহাতে বিস্ময়ের কিছু নাই। উপরে উদ্ধৃত তারিণী দেবীর জেরার একাদশ প্রশ্নের শেষ ভাগ পাঠ করিলে দেখা যায়, মোকদ্দমা রুজু হইবার পর তারিণী দেবীর মন একটু নরম হইয়াছিল। তিনি স্বয়ং কলিকাতায় সিমলার বাড়ীতে আসিয়া রামমোহনকে বলিয়াছিলেন, “আচ্ছ, তুমি নিজে মূৰ্ত্তি পূজা না-ই বা করিলে ; তুমি দেবসেবার জন্ত কিছু সম্পত্তি দান কর ।” মোসলমান নবাব এবং বাদসাহগণ ফরমান সম্পাদন করিয়া এইরূপ অনেক দান করিয়া গিয়াছেন । কিন্তু মাতার এই প্রার্থনায় রামমোহনের মন গলিল না । তিনি দরিদ্রদিগকে দান করিবার জন্য অনেক টাকা দিতে চাহিলেন, কিন্তু মূৰ্ত্তিপূজার জন্য স্বচ্যগ্র ভূমি দিতে সম্মত হইলেন না। সুপ্রিম কোটের মোকদ্দমা চলিতে লাগিল। এই যুগে সুপ্রিম কোটে মোকদ্দমা করা বহু ব্যয়সাধ্য এবং সৰ্ব্বস্বাস্তকর ছিল। ১৮২৯ সালের ৩১শে অক্টোবরের

  • It is known that every member of his family verifies the proverb, by opposing with greatest vehemence all his projects of reform. None of them, not even his wife, would accompany him to Caleutta; in consequence of which he rarely visits them in Bordouan, where they reside. They have dispnted with him even the superintendence of the education of his nephews ; and his fanatical mother shows as much ardour in her incessant opposition to him, as he displays in his attempts to destroy the idolatory of the Hindoos.” Mary Carpenter, op. cit. p. 54.

( ১২৩৬ সালের ১৬ই কাৰ্ত্তিকের ) “সমাচার দর্পণে” লিখিত হইয়াছে— গত সোমবার ইণ্ডিয়া গেজেটে লেখা আছে যে বৰ্ত্তমান টর্গের পঞ্চম । দিবদে কুপ্রিম কোর্টে বিচারন্থওনার্থ কেবল পাচ মোকদম উপস্থিত হইয়াছিল ইহার পূৰ্ব্বে টর্শের জারভকালে বিংশতি মোকদ্দমার লুন খার্কিত না। হিন্দু লোকের এখন ভুক্তভোগের দ্বারা উত্তম শিক্ষা পাইতেছেন। পাণ্ডিত্যবিষয়ে অদ্বিতীয় স্কপ্রিম কোর্টের পণ্ডিত ৰে ৮মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার তিনি কহিতেন যে ধনাঢ্য যত লোক সুপ্রিম কোর্টে প্রবিষ্ট হইয়াছেন তাহারা একেবারে নিঃস্ব হইয় সেই আদালত হইতে মুক্ত হইয়াছেন ইহ: ব্যতিরেকে আর কিছুই দেপি নাই। এ বিষয়ের প্রত্যক্ষ প্রমাণ আমাদের সর্বদা দৃষ্ট হইতেছে । আমাদের স্মরণে আইসে যে ইহার পূৰ্ব্বে স্কপ্রিম কোর্টের মোকদ্দম করণ অতিশয় সম্মানের লক্ষণ ছিল বিশেষতঃ স্কপ্রিম কোর্টে অমুকের দুই তিনটা এখুটির মোকদ্দমা চলিতেছে ইহা প্রকাশে তিনি যেরূপ সন্ত্রম প্রাপ্ত হইতেন আমাদের বোধ হয় যে দুর্গোৎসবে বিশ হাজার টাকা ব্যয় করিলেও তাদৃশ সম্মান প্রাপ্ত হইতেন Til li: সুপ্রিম কোটের একুইটতে মোকদ্দমা করিয়া এক পক্ষে গোবিন্দপ্রসাদ রায় এবং তারিণী দেবী, এবং অপর পক্ষে রামমোহন রায়, যে বিশেষ ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছিলেন এ বিষয়ে আর সংশয় হইতে পারে না। দুই বৎসর মোকদ্দমা চালাইবার পর, ১৮১৯ সালের ২৪শে আগষ্ট, গোবিন্দপ্রসাদ রায় কোটের নিকট আবেদন করিয়াছিলেন, র্তাহার অবস্থা তখন এমন কাহিল হইয়া পড়িয়াছিল যে র্তাহাকে পপার ( দরিদ্র ) রূপে মোকদ্দমা করিতে না দিলে তিনি আর মোকদ্দমা চালাইতে পারিতেছেন না। এই আবেদনের সমর্থনে গোবিন্দপ্রসাদ রায় ঐ তারিখে এফিডেবিট করিয়াছিলেন যে, তাহার ন্যায্য দেনা পরিশোধ করিবার পর তাহার একশত আর্কট টাকা মূল্যের সম্পত্তি, পরিধানের কাপড়-চোপড় এবং বিছানাপত্র ছাড়া আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না f কোট প্রথমতঃ গোবিন্দপ্রসাদের আবেদন মঞ্জুর করিয়া তাহাকে পপার রূপে (অর্থাৎ সরকারী ব্যয়ে ) মোকদ্দমা চালাইবার অনুমতি দিয়াছিলেন । তারপর রামমোহন রায় যখন সাক্ষীসাবুদ দিয়া দেখাইলেন যে তখনও গোবিন্দপ্রসাদের বার হাজার টাকা মূল্যের ভূসম্পত্তি এবং ১৬৯০২ টাকা কৰ্জ লাগান আছে তখন কোট সেই অল্পমতি প্রত্যাহার করিয়াছিলেন । ইহার পর গোবিন্দপ্রসাদের: এটর্ণি এবং ব্যারিষ্টার আর কোটে উপস্থিত হয় নাই, এবং শুনানীর দিন সওয়াল জবাব করে নাই। হয়ত তখন s&ীব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সংবাদ পত্রে সেকালের কথা", প্রথম খও, ১১৫ পৃঃ (সংক্ষিপ্তাকারে উজ্জ্বত ) ৷

  1. Saith that he this Deponent is not after payment of all his just Debts worth the sum of one linndrod Arcot Rupoos in tho world savo and oxcept the wearing apparel and bedding of him the Deponent.