পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কীৰ্ত্তিক - সৌদামিনী হেসে ফেললেন —ছেলে না পারে, বাপে ত পাহারা দিচ্ছে। সে-ই বেশ - তুমি এখন যাও দিকি । নীলুর উপরে আসবার এখনও দেরি আছে, ততক্ষণ আমরা একটু ঘুমিয়ে নিই— বরদ চলে গেলে বিছানার দিকে সৌদামিনীর নজর পড়ল। আশ্চধ্য হয়ে বললেন—এ কি বউমা, এ ঠিক হারানের কাও ! দিগগজ এক বালিশ এনে থাট জুড়ে রেখেছে—গুবি কোথায় ? উমা তাড়াতাড়ি বলল–গুয়েই ত ছিলাম। পাশবালিশে শোওয়া আমার অভ্যাস। কিছু অস্ববিধে হবে ন!— সৌদামিনী শুনলেন না –ন, হবে না বইকি ? আর একটা ছোট পাশ-বালিশ দেব এর্থন--দাড়া, এটা অালমারির মাথায় তুলে দিই— বলতে বলতে দেখা গেল, পাশ-বালিশ স্বয়ংই উঠে দাড়িয়েছে। সৌদামিনী অবাক হয়ে বললেন—নীলু। নীলান্ত্রির চোখে জল আসবার মত। কিন্তু সে-জল এক মুহূৰ্ত্তে বাষ্প হয়ে উড়ে গেল ; সে বজাহতের মত দাড়াল। হায় রে, বিপদের কি শেষ নেই। বরদা চুরুটের কৌট ফেলে গিয়েছিলেন, সেটা নিতে মন্থর পায়ে আবার এসে ঢুকলেন। ছেলেকে দেখে দৃষ্টি কুঞ্চিত হয়ে এল। বললেন—এরই মধ্যে পড়াশুনোয় ইস্তফা দিয়ে এলে ? ক’ট। বেজেছে ? নীলাজি জড়িত কণ্ঠে বলল—বারোটা— —কক্ষণে নয়। এগারটা সাত—তার সিকি মিনিট বেশী নয়। পড়তে গেলেই ঘড়ি তোমার ঘোড়ার মত ছুটতে থাকে। যাও—নীচে যাও— সৌদামিনী বাধা দিয়ে উঠলেন—ন, নীচে নয়। নীচে বডড মশা—শেষে ম্যালেরিয়ায় ধরুক। পড়তে হয়, এখানে বলেই পড়ুক— বরদা বললেন—কোথায় মশা ? ছেলেকে ননীর পুতুল করতে চাও ষে। আমরা কাজকৰ্ম্ম ক'রে থাকি,— মশাটশা ত দেখি নে— মায়ের দিকে কৃতজ্ঞ চোখে এক পলক তাকিয়ে নীলাদ্রি বলল—রাতেই উপজবটা বেশী হয় কি না— একটি রান্ত্রির পাঠাভ্যাস ১৫ বরদা বললেন—তা হলে আমার ঘরে বসে পড় গে। বারোটা বাজতে এখনও বাহান্ন-তিপাল্ল মিনিট। চিটিং-এর চ্যাপ্টার আজ শেষ করতেই হবে। কোনখানে আটকে গেলে আমি বুঝিয়ে দেব। সে ভালই হবে—ময় ? বরদাসপ্রশ্ন দৃষ্টিতে ছেলের দিকে তাকালেন। নীলাত্রি মাথা নেড়ে কাতর কণ্ঠে সায় দিল—আজে হ্যা— সৌদামিনী রুখে উঠলেন—আমার হবে না । ও আলো জেলে ব'সে বসে সমস্ত রাত পড়বে, আলো থাকলে আমার ঘুম হয় না— বরদ বললেন—তুমি এখানে ঘুমোও। পড়া হয়ে গেলে তার পর যেও। রোজই হচ্ছে, আজ নতুন মানুষ হয়ে গেলে নাকি ! সৌদামিনী জেদ ধ’রে বসলেন-প্লোজ হচ্ছে ব'লে আজ হবে না। শরীর আমার ভেঙে পড়ছে। আবার যে একঘুমের পর ছুটোছুটি করব, সে পেরে উঠব না ; তাতে তোমার ছেলের পড়া হোক আর না-ই হোক— —মুস্কিল ! কি করা যায়! বরদী চিন্তিত ভাবে ঘাড় নাড়তে লাগলেন —ত হ'লে বউনাকেও নিয়ে চল। নীলে এখানে পড়ুক। বারোটা বাঙ্গলে উনি আসবেন— সৌদামিনীর তাতেও আপত্তি –মা, বউম যাবে না। তোমার সঙ্গে আঞ্জ অনেক কথা রয়েছে, বৌমা গেলে হবে | || অতঃপর বরদার আর ধৈর্য্য থাকল না। রাগ ক’রে বললেন—হবে না ত কি হবে ? পরের মেয়েকে সত্যি সত্যি ত একটা ঘরে একলা ফেলে রাগ যায় না— সৌদামিনী প্রস্তাব করলেম—মৗলুকে বল, সে যদি– —সে কি ক’রে হবে ? ওর এগঙ্গামিন। বলতে বলতে সৌদামিনীর পরে একটু করুণাও হ’ল । অবোধ মেয়েলোক—বোঝে না এগ জামিন কি—এবং পেনাল-কোড কি বস্তু!—ঘাড় নেড়ে বরদা বললেন—সে অামি কিছুতে পারব না। এগজামিন সামনে, ওকে আমি বলব কোন হিসেবে ? একটা কাগুজ্ঞান আছে ত ? অক্ষ তরল কণ্ঠে সৌদামিনী বললেন—আছে নাকি ? যাক, দুর্ভাবনা ঘুচল। তিনিষ্ট তপন ছেলেকে ডেকে বললেন —নীলু, বাবা, তুষ্ট আজকের রাতটা এখানে বসে পড ।