পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

t\9వ9 প্রৰণসী SN9gv9 পাথর ভাঙবার জন্তে খোস্তা-কোদালেরও দরকার । ওগুলোর ত উচ্ছেদ করা চাই—” “নিশ্চয়—টেররিজমের উচ্ছেদ আমি মনে প্রাণে কামনা করি । মধু খুনোখুনির আতঙ্কে বলছি না ; বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সে ভয় মনে ঢুকেও থাকতে পারে, জানি না। টেররিজম মানুষকে মনুষ্যত্বহীন করে, মানুষকে কাপুরুষ করে তোলে বলেই তা কামনা করি। টেররিজম দুৰ্ব্বলকে কুৎসিত করে—সবলকে বীভৎস করে । স্বতরাং অত্যাচারের ভয় দিয়ে মৃত্যুর ভয় দিয়ে যেই শাসাকৃ সেই নিজেকে এবং অন্তকে পিশাচ ক’রে তোলে ;–সে রাম-শ্যামা বা সত্যবান, যেই হোক। পিশাচের ধৰ্ম্মই ভয় দেখানো, মানুষের নয়।” বলে সে ভুলু দত্তের মুখের দিকে দৃষ্টিহীন চোখ রেখে আরও বলবার কথাগুলো মনে মনে ভাবতে লাগল। ভুলু দত্তও অল্প একটু অপ্রস্তুতের হাসি ভেসে মাথা নাড়তে লাগল। খানিকটা দম নিয়ে নিখিল যেন নিজের মনের অবরুদ্ধ আবেগে আবার শুরু করলে, “শুধু আমার দেশের জন্তে বলছি নে—চাই যে, সমগ্র মানবজাতির মন থেকে এই টেররিজম দূর হয়ে যাকৃ। এই পন্থা দেশে দেশে মানুষকে মল্পগুত্বের পথ থেকে বঞ্চিত করছে, মাতুষকে দলে দলে শিক্ষিত হস্তারক পশুতে পরিণত করতে চলেছে। নরনারীর স্বাভাবিক সষ্টিশক্তিকে, অধ্যাত্মশক্তিকে ধ্বংসের পথে, পাশবিকতার পথে, সৰ্ব্বনাশের পথে নিয়ে চলেছে। লোভে ক্রোধে হিংসায় জিঘাংসায় তার মুখ থেকে দেবতার ছবি মুছে গেল—হায় হায় কেউ কাউকে রক্ষা করতে পারলে ন—শুধু পরস্পরকে ধ্বংস করার জন্তে অন্ধ উন্মত্ততায় সৰ্ব্বনাশের আগুনে ঝাপ দিতে চলেছে—দলে দলে---” বলতে বলতে জুলু দত্তের মুখের দিকে চেয়ে হঠাৎ সে থেমে গেল। এতটা আবেগের কারণ বুঝতে না পেরে ভুলু ই করে তার দিকে চেয়ে আছে—যেন কোন একটা কারণ সে তার দৃষ্টি দিয়ে হাতড়ে বেড়াচ্ছে। নিখিল জোর করে একটু কৃত্রিম সলজ হাসি টেনে এনে বললে, “ভাবছ হঠাৎ নিখিলকে বক্তৃতায় পেয়ে বসল কেন ? তুমি জান তোমাদের সঙ্গে আমিও একদিন ঐ দলে ছিলাম। তার পরে এ নিয়ে অনেক ভেবেছি। জীবহত্যা-টত্যার কথা আমি ভাবি না। প্রতিদিন স্লটার-হাউসে ত কত কোট কোট প্রাণী আমাদের খাদ্যের জন্যে আমরাই হত্যা করি। সেটা স্কায় কি অন্তায় তার বিচার এখানে করবার নয়। ভয় দেখিয়ে মানুষকে অমানুষ করে আত্মাকে বামন ক’রে রাখার মত অপরাধ নেই। যে-কেউ তা করে, সেই ঐ পাপে লিপ্ত। প্রবল কেউ যদি শুধু ভয় দেখিয়ে লোককে শিষ্ট করতে চায়, তবে টেররিজমৃ-এর উচ্ছেদ করতে চাই” এ কথা তার বলা সাজে না । ছেলেকে ঠেঙিয়ে শাস্ত রাখলেই ছেলে মানুষ করা হয় না—নিজের শক্তির উপর নিশ্চিন্ত নির্ভর থাকলে কেউ টেররিষ্ট হয় না। সন্ত্রাসন ভীরুর অস্ত্র—তা সে যেই ব্যবহার করুক। ভুলু দত্ত বললে, “ভাই, তোমার মত করে আমি ভাবি নে। দেশে শাসক থাকবেই—পেনাল কোডও বুদ্ধদেবের রচিত হবে না। চুরি, ডাকাতি, খুন, জখম অরাজকতা নিবারণের জন্তে শাস্তির ভয় দেখালে যদি দুৰ্ব্বলতার অঙ্ক বল তবে দেশের শাসন অচল হবে। দেশের শাস্তিরক্ষাও বড় জিনিয—তা না হলে উন্নতি হওয়া সম্ভব হয় না, দেশ সমৃদ্ধ হয় না। এই ত বাবা সোজান্থজি বুঝেছি। দি এণ্ড জাষ্টিফাইজ, দি মীনস্।” নিখিল দেখলে যে এই উত্তেজনা প্রকাশ করে সে ভাল করে নি। তার উদ্দেশু সিদ্ধির পথ এতে রুদ্ধ হতে পারে। ভুলু দত্তের কনফিডেলস হারালে তার চলবে না । বললে, “তা সত্যি, তবু কেমন যেন মনে হয় যে ওতে পাগলের পালকে আরও ক্ষেপিয়ে তোলা হচ্ছে ।” একটু উৎসাহ পেয়ে জুলু দত্ত বললে, “ন হে না ; দেখতে দেখতে কত ছদে টেররিষ্ট সিধে হয়ে গেল। কত ব্যাটা আবার কান কেটে সরকারী কাজে জুতে গেছে, দেখ গে। কথায় বলে ‘ধেমন কুকুর তেমনি মুগুর’—বিলেতের আমদানী কথা নয় হে—অনেক অভিজ্ঞতার ফল। এই শৰ্ম্মাই কত ব্যাটাকে ঠাণ্ড করলে—” ভাল মানুষের মত নিখিল বললে, “তা ঠিক, টেররিজমকে একেবারে ঠাণ্ডা করেছ তোমরা, তা বলতে হবে—অস্তত: বাংলা দেশে।” “তা আর কষ্ট হ’ল হে ! এ ব্যাটার রক্তবীজের ঝাড়, ধোয়াচ্ছে হে ধোয়াচ্ছে—আবার একদিন শুনবে কিছু