পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যবনিকার আভরণলে মাধুরীকে বলিল, “প্রথম দিনেই যদি একেবারে নিখুঁত ইলা সাজতে পারতুম তাহলে এতদিনে শিশির ভাদুড়ীর দলে নাম লেখাতুম গিয়ে । এরা সব করছেন দেখ • না ! যেন যা করছি তাই ভুল ! নিজেদের যে সব কি এ্যাকটিঙের ছিরী তা ত আর নিজেরা দেখতে পাচ্ছেন না। কষ্ট করে গান-টান শিখে এলুম বটে, কিন্তু সত্যি ভাই আমার আর এখন করতে ইচ্ছে করছে না।” নীহারিকা রমলা মিত্রকে ডাকিয়া বলিলেন, “আচ্ছা ভাই, যেখানে ইলা সর্থীদের গান করতে ডাকছে আর বলছে সখি তোরা আয়, এরে বাধ, ফুলপাশে কবু গান', সেখানটাতে ওরকম ঐ এক ধরণের স্বর করলে চলবে কেন ? মোটেই মানাচ্ছে না। যেখানে বলছে—‘যেতে হবে ? কেন যেতে হবে যুবরাজ ? সেখানটা ত ঠিক আছে, সে জায়গাটা তো নীলিমা মন্দ করছে না।” রমলা মিত্র সরিয়া আসিয়া বলিলেন, “সব কথা এক স্বরে ব’লে যায় এই ত নীলিমার দোষ । আমি ত সে-কথা সেই প্রথম থেকেই বলছি।” নীলিমা মুখ অন্ধকার করিয়া বলিল, “তা ভাই কি করব ? যা পারি তাই ত করব। আপনাদের মত ভাল যদি আমি ন-ই পারি ” রমলা মিত্র বলিলেন, “না, না, আমাদের তোমাদের কথা নয়। সকলেরই অভিনয়ে দোষ আছে, সকলকেই শোধরাতে হবে। আমারই কি অভিনয় নিখুৎ হচ্ছে ? মোটেই নয়। তবে চেষ্টা করতে হবে—ক্রমে ক্রমে হবে, এই আর কি ! মিসেস্ চ্যাটাজা, আপনারও কিন্তু দেবদত্তের পাটটি ঠিকমত হচ্ছে না এখনও। ওর সব কথা একটুখানি বিদ্রুপের স্বরে বলতে হবে কিনা। রাজার বয়স্ত, তাতে রসিক লোক—বুঝেছেন ত? আপনার কিনা স্কুলে লেকচার দেওয়া অভ্যেস, তাই একটু বক্তৃতার স্বর সহজেই এসে পড়ে আর কি—তা সেটা বন্ধ করতে হবে। চেষ্টা করলেই হয়ে যাবে। এই দেখুন এমনি ক’রে—

  • আগে আমি ভাবিতাম

শুধু বড় বড় লোক বিরহুেতে মরে । এবার দেখেছি সামান্য এ ব্রাহ্মণের ছেলে, এরেও না ছাড়ে পঞ্চবাণ ; ছোট বড় করে না বিচার।" S9() এই রকমটা হবে আর কি। ---কি বলেন মিসেস মল্লিক ? কতকটা ঠিক হ’ল কি ? আমারও ত এই প্রথম দিন, সৰ fক আর ঠিক হচ্ছে ?” 發 Es মিসেস্ চ্যাটাজী বলিলেন, “তা আপনিই নিন না বাপু দেবদত্তের পাট। আমার ওসব আসে-টাসে না, আমি ত বলেই দিয়েছি আপনাদের । আপনারাই টানাটানি করলেন বলে আমার আসা—আমি ত চাই নি এসব ফ্যাসাদে জড়াতে । উনি বরং বলছিলেন, “তুমি ঠিক পারবে, করেওছ ত কত ।” তা সে যখন করেছি, তখন করেছি—এখন নান! কাজে জড়িয়ে পড়েছি, এ-সব বাজে কাজের সময় কোথা " রমলা মিত্র বলিলেন, “রাজা বিক্রমদেবের পাট যে আমি না হ’লে করবার লোক নেই—ন হ’লে আমার আর কি— আমাকে যে পাট দেবেন, আমি দু-দিনে তৈরি করে নেব— যেমন করে হোক। দেবদত্তের পাট একটা ভাল পাট, তাই আপনাকেই দিয়েছিলাম । তবে আপনার যদি এত বাজে কাজের সময় না থাকে ত সে আলাদা কথা—তাহলে আর কাউকে এখনই দেখতে হয় ।” নীহারিকা নিকটেই দাড়াঙ্গয় ছিলেণ—প্রমাদ গণিলেন । “ওমা, সে কি ? সব ঠিকঠাক, এখন কি আর লোক বদল করা যায় ? সব মাটি হবে তাহলে । না, না, আমার ত মনে হয় মিসেস্ চ্যাটাজ্জাঁকে দেবদত্তের পাটে খুব মানিয়েছে, ও দু-দিন রিহাসলি দিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। আর আমরা মেয়েরা সব করছি—এ্যামেচারের দল সব—একটু যদি খুবই থেকে যায় তা আর কি এমন মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে ? টাকা তোলবার জন্যেই করা—পরের গরজে এতগুলি মেয়ে খেটেপুটে সময় দিয়ে জিনিষটা গড়ে তুলছে, এই ত আমার কাছে খুব প্রশংসার বিষয় ব’লে মনে হয়। এ ত আর প্রোফেসনাল য়্যাক্টর নয় যে সকলে নিখুং স্বাক্ট করবে কেউ আশা করে ।--এই প্রীতি, যুদ্ধাজিতের পার্ট ত সামান্তই, তুমি নাও ত, ঐ পাশের ঘরে গিয়ে নিজের এই পাট টুকু বেশ করে মুখস্ত করে আন, এখনই হয়ে যাবে।--মাধুরী, কুমারের পাটে হাসি-টাসি নেই মনে রেখো, খবরদার হেসে না যেন । নিজের নিজের পাটভাল করে মুখস্ত কর সবাই আগে—নাহলে অত বই দেখে দেখে রিহাসাল যেন মোটে জমছেই না। আমারই হয়েছে