পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

مسيbمSوS জাতিভেদ কিংবা পাশ্চাত্য দেশের ধনগত জাতিভেদ ও উত্তরআমেরিকার ও দক্ষিণ-আফ্রিকার শ্বেত-কৃষ্ণ-চৰ্ম্মগত জাতিভেদ অপেক্ষা প্রাচীন ভারতের প্রাকৃতিক গুণগত বর্ণভেদই শ্ৰেয়স্কর বলিয়া মনে হয়। তবে ব্যাবহারিক জাতি-বিভাগে বংশ বা কুলের প্রভাব একেবারে অগ্রাহ করা যায় না। অতঃপর নৃতত্ত্ব অনুশীলনের উপকারিতা সম্বন্ধে বিশেষভাবে দুই-এক কথা নিবেদন করিব। নৃতত্ত্বের মূল উদ্দেশু সম্বন্ধে সাধারণের ভ্রান্ত ধারণাই সম্ভবতঃ নৃতত্ত্ব অনুশীলনে আমাদের ঔদাসীন্যের হেতু । কেহ কেহ মনে করেন যে অসভ্য জাতিদের কৌতুকপ্রদ আচারব্যবহার লইয়া অবসর বিনোদন করাই নৃতত্ত্বের উদ্দেশু। প্রকৃতপক্ষে এইরূপ ধারণা ভ্ৰাস্তিমূলক। সত্য বটে, বিভিন্ন দেশের মানবের বৈচিত্র্যপূর্ণ আকৃতি-প্রকৃতি, জীবিক, সাজসজ্জা, পান-ভোজন, সামাজিক বিধিব্যবস্থা, রীতিনীতি, আচার-ব্যবহার, ধৰ্ম্মবিশ্বাস, পূজাপাৰ্ব্বণ ও লোকসাহিত্য প্রভৃতি নৃতত্বের আলোচনার বিষয়ীভূত। পুরাকাল হইতে বর্তমান কাল পর্য্যস্ত বিভিন্ন স্তরের মানব-সমাজের জীবনধারার জীবস্ত চিত্র নৃতত্ত্বের সাহায্যে অঙ্কিত হইতেছে। যাদুঘরের কিংবা চলচ্চিত্রের প্রদর্শনীর ন্যায় ক্ষণিক আনন্দ প্রদান করা এই চিত্রাঙ্কনের উদ্বেশু নহে। এই সমস্ত আচার-ব্যবহার, বিশ্বাস ও অনুষ্ঠানের উদ্ভব-প্রণালী ও তাৎপৰ্য্য নির্ণয় নৃতত্ত্বের গবেষণার বিষয়ীভূত। বিভিন্ন বিজ্ঞানের মুখ্য উদ্দেশু নিখিল স্বষ্টির বিভিন্ন বিভাগের নিগুঢ় সত্যের আবিষ্কার করা,—অস্তনিহিত অর্থের উদঘাটন করা। স্বষ্টির এই নিহিতার্থের অনুসন্ধানকেই “fostag us festab%" (Study of Science এই ভাবে ও উদ্দেশ্বে প্রণোদিত হইয়া যে-কোন বিজ্ঞানের অনুশীলনে যে অনিৰ্ব্বচনীয় আনন্দ লাভ হয় তাহা যিনি একবার আস্বাদন করিয়াছেন তিনি আর বিশ্বত হইতে পারেন না। বিজ্ঞানচর্চার দ্বারা ভগবানের স্বষ্টির উদ্দেশু ও মহিমার ক্রমিক আবিষ্কার চলিতেছে। নৃতত্বে যে নিগূঢ় সত্যের আবিষ্কার চলিতেছে তাহা এই যে মানবজাতি সমাজবদ্ধ হইয়া আবহমান কাল হইতে অদম্য উৎসাহে ও অসীম আশায় কেবল বহিঃপ্রকৃতিকে জয় করিতে প্রবৃত্ত তাহা নহে, for its own sake ) oil & প্রবাসী S్సN989 অন্তঃপ্রকৃতিকেও বশে আনিতে যত্নবান ; পশুপ্রকৃতিকে পরাভূত করিয়া অন্তর্নিহিত দেবপ্রকৃতির ক্ষুদ্রণ ও আধিপত্য স্থাপনে প্রবৃত্ত। এই প্রচেষ্টায় সাফল্যের পরিমাণই সভ্যতার মানদণ্ড । মানবের ও মানবসমাজের এই নিত্য প্রসারের ও সম্পূর্ণতালাভের আকাঙ্ক্ষা ও প্রচেষ্টার ফল-স্বরূপ বিভিন্ন দেশের মানব-সমাজে যে সংস্কৃতি বা সভ্যতা গড়িয়া উঠিতেছে তাহার বিবরণ সঙ্কলন করা নৃতত্বের কার্ষ্য। এই বিবরণ সঙ্কলনের উদ্দেশু মানবের ও মানব-সভ্যতার চরম লক্ষ্যের সন্ধান। সেই সন্ধানের ফলে প্রকাশ পায় যে মানব-সভ্যতার স্তরপরম্পরা মানবের মধ্যেও ভগবত্তার বা ভগবৎ শক্তির ক্রমবিকাশের পরিচায়ক। প্রকৃত সভ্যতার লক্ষ্য সীমার মধ্যে অসীমের প্রকাশ, নশ্বর দেহে অবিনশ্বর আত্মার বা পরমাত্মার প্রকাশ ও তজ্জনিত শাশ্বত পূর্ণানন্দলাভ। তাই পুরাণকার বলিয়াছেন— “মহেশ্বর সর্বমিদং পুরাণম্।” অর্থাৎ, ভগবানই এই নিখিল পুরাণের প্রতিপাদ্য। বিজ্ঞানের যে মহান লক্ষ্য আৰ্য্যঋষিরা নির্দেশ করিয়া গিয়াছেন, ভরসা করি সেই লক্ষ্য অনুসরণ করিয়া ও পাশ্চাত্য পণ্ডিতদের গবেষণা-প্রণালীর সহিত আমাদের ঋষিপ্রদশিত প্রণালীর সংযোজন ও যথাযথ সমন্বয় করিয়া ভারতের নৃতত্ত্বসেবীরা অদূর ভবিষ্যতে নৃতত্ত্বের গবেষণার ও সাধনার এমন একটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠান স্থাপন করিবেন যেখানে পাশ্চাত্য নৃতত্ত্বসেবীরাও প্রেরণা লাভ করিতে পারিবেন। ভারতগৌরব স্তর জগদীশbro of sta-of-sta (Bose Institute of Science ) এইরূপ আদর্শেই স্থাপিত। এইরূপ প্রতিষ্ঠানের ংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মিলনের পথ স্বগম হইবে । প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের বৈপরীত্য সম্বন্ধে কিপলিঙের চপল উক্তি—

  • East is East, and West is West And the twain shall never meet, ” অগ্রাহ করিয়া বিজ্ঞানসেবীরা বিশ্বাস করেন যে বিজ্ঞানের মধ্য দিয়াই প্রাচ্যের সহিত প্রতীচ্যের যথার্থ মিলনসাধন

সম্ভবপর। নৃতত্ত্বের গবেষণার বিষয় সমগ্র মানবজাতির জীবন। তবে