পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নেই এমন সময় তারা আবার ঠিক সেই জায়গায় এসে আবিভূত হ’ল । ‘তাদের দেখে আমার বুক ভীষণ ভাবে ধরাস ধরাস করতে লাগল। তারা অংগের মতই দলবদ্ধ হয়ে এসেছে— তেমনই স্বচ্ছন্দ মনে ঘাস খাচ্ছে-খেলা করছে । আমি রাইফেলটা তুলে নিলাম। পাল্লা বড়জোর পচাত্তর গজ, রাষ্টফেলের পক্ষে কিছুই নয় ; তবু হাত কঁপিছে, কিছুতেই ভুলতে পারছি না এই শেষ কাৰ্ত্ত জ— “নিজের রাইফেলের আওয়াজে নিজেই চমকে উঠলুম। একটা হরিণ খাড়া উচু দিকে লাফিয়ে উঠল—তার পর আবার সমস্ত দল ছায়াবাজির মত মিলিয়ে গেল । ‘শেষ কাৰ্ত্ত জও ব্যর্থ হ’ল ! পক্ষাঘাতগ্রস্ত অসাড় মন নিয়ে কিছুক্ষণ ব’সে রইলুম। তার পর আস্তে আস্তে চেতনা ফিরে এল। মনে হ’ল, যেখানে হরিণগুলো দাড়িয়ে ছিল সেখানে একগুচ্চ লম্ব ঘাস আপনা-আপনি নড়ছে । “কি হ’ল ! তবে কি – ধুকতে ধুকতে দু-জনে সেখানে গেলুম । ‘বাতাস বইছে না, কিন্তু তবু ঘাসগুলো নড়ছে—যেন কোন অদৃপ্ত শক্তি তাদের নড়াচ্ছে। ক্রমে ঘাসের আন্দোলন কমে এল । তার পর ছায়ার মত আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠল—চারটি হরিণের ক্ষুর । ‘মরেছে ! মরেছে –জঙ-বাহাদুর ভাঙা গলায় চীৎকার ক’রে উঠল । আমি তখন পাগলের মত ঘাসের উপর নৃত্য স্বরু ক'রে দিয়েছি। একটা নিরীহ ভীরু প্রাণীকে হত্যা ক’রে এমন উৎকট আনন্দ কখনও অনুভব করি নি । ‘পনর মিনিটের মধ্যে মৃত হরিণের দেহটি পরিপূর্ণ দেখা গেল। মৃত্যু এসে তার প্রকৃত স্বরূপ আমাদের চোখের সামনে প্রকট ক’রে দিলে ।---

  • তারই চামড়ার ওপর আপনি আজ বসে আছেন।”

র্তাহণয় গল্প হঠাৎ শেষ হইয়া গেল । আমি বলিলাম, তার পর " তিনি বলিলেন, ‘তার পর আর কি—শূল্য মাংস খেয়ে প্রাণ বাচালুম। সাত দিন পরে সেই উপত্যকার গণ্ডী পার ছক্ষে লোকালয়ে পৌঁছলাম । তার পর দু-মাস একাদিক্রমে হেঁটে এক দিন ব্যাঙ্কক শহরে পদার্পণ করা গেল। সেখান থেকে জঙ-বাহাদুর চীনের জাহাজে চড়ল ; আর আমি— ; মাংসটা বোধ হয় তৈরি হয়ে গেছে।’ 8 আহার শেষ করিয়া যখন এই ভাঙা বাড়ী হইতে বাহির হইলাম তখন রাত্রি দশটা বাজিয়া গিয়াছে । বন্ধু আমার সঙ্গে চলিলেন। টর্চ জালিলেন না, অন্ধকারে আমার বাইকের একটা হাতল ধরিয়া পথ দেখাইয়া লইয়া চলিলেন । প্রায় দশ মিনিট নীরবে চলিয়াছি। কোন দিকে চলিয়াছি তাহার ঠিকানা নাই ; মনে হইতেছে যে-পথে আসিয়াছিলাম সে পথে ফিরিভেছি না । হঠাৎ বন্ধু বলিলেন, "আজ সন্ধ্যাটা আমার বড় ভাল কাটুল ।" আমি বলিলাম, “আপনার—না আমার ? *আমার । মাসখানেকের মধ্যে মন খুলে কথা কইবার স্বযোগ পাই নি । আরও পনর মিনিট নিঃশব্দে চলিলাম। তার পর তিনি আমার হাতে টর্চ দিয়া বলিলেন, “পাকা রাস্তায় পৌছে গেছেন, এখান থেকে সহজেই বাড়ী ফিরতে পারবেন । এবার বিদায় । আর বোধ হয় আমাদের দেখা হবে না ।” আমি বলিলাম, "সে কি ! আমি আবার আসব। অন্তত আপনার টর্চটা ফেরত দিতে হবে ত ।" ‘আসার দরকার নেই। এলেও আমার আস্তান খুজে পাবেন না । টর্চ আপনার কাছেই থাক—একটা সন্ধ্যার স্মৃতিচিহ্ন-স্বরূপ । আমি দু-চার দিনের মধ্যেই চলে যাব।" ‘কোথায় যাবেন ?" তিনি একটু চুপ করিয়া থাকিয়া বলিলেন, তা জানি না। হয়ত আবার শুামদেশে যাব । এবার একটা জীবন্ত হরিণ ধ’রে আনবার চেষ্টা করব—কি বলেন ? "বেণ ত । কিন্তু—আর আমাদের দেখা হবে না ?” *शृश्डव नश्च । एवiध्छ्-विघ्नांश्च f “বিদায় । ছুদিনের বন্ধু—নমস্কার ।"