পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՊՋg পূৰ্ব্বে গয়ার বাঙালী হিন্দুযাত্রীরা একটি স্বপরিচালিত ধৰ্ম্মশালার অভাব বিশেষরূপে অনুভব করিতেন । তথন বঙ্গদেশাগত সরলুপ্রকৃতি তীর্থযাত্রীরা দুৰ্ব্বত্তদের ও স্থানীয় প:"রে নিমর্ট প্রায়ই উৎপীড়িত হইতেন। উপযুপরি কয়েক জন বাঙালী যাত্রীকে এইরূপে অত্যাচরিত হইতে দেখিয়া গয়ার বঙ্গীয় ঔপনিবেশিক সমিতি ( Bengalee Settlers' Association) of:\o-Gotteto-Moslå osteনাম প্রতিষ্ঠাতা বাজিৎপুর-নিবাসী আচাৰ্য্য শ্ৰীমৎস্বামী প্রণবানন্দজীকে গয়ায় সেবাশ্রমের একটি শাখা স্থাপন করিতে অন্তরোধ করেন । ইহারই ফলে ১৯২৪ খ্ৰীষ্টাব্দের জুন মাসে সামান্য একথানি ভাড়াটিয়া বাড়ীতে গয়া সেবাশ্রম প্রথম স্থাপিত হয় । আগ্রমের স্বব্যবস্থার গুণে আশ্রয়প্রার্থী যাত্রীর সংখ্যা শীঘ্রই অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় আর একখানি বাড়ী ভাড়া করার প্রয়োজন বিশেষরূপে অনুভূত হইল। কিন্তু দুইখানি বাড়ী ভাড়া হইবার পরেও আশ্রমের কর্তৃপক্ষেরা বিশেষ অনিচ্ছাসত্ত্বেও স্থানাভাবে বহু আশ্রয়প্রার্থী যাত্রীদের বিমুখ করিতে বাধ্য হইলেন। তখন উপায়াস্তর না দেখিয়া সত্তঘ-কন্মিগণ দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করিয়া অর্থসংগ্রহে ব্ৰতী হইলেন । এইরূপে ৪,২৭৩২ টাকা সংগৃহীত হইল। এক জন দানশীল বাঙালী ভদ্রলোক আট হাজার টাকা দান করিলেন । মোট এই ১২,২৭৩ টাকা ব্যয়ে ১৯২৭-২৮ খ্ৰীষ্টাব্দে ম্যাকুলাউড় গঞ্জ রোডের উপর বারো বিঘা পরিমাণ এক বিস্তৃত ভূমিখণ্ডও ক্রয় করা হইল। এইরূপে বাঙালীদেরই একান্ত চেষ্টায়ু ও উদ্যোগে বঙ্গীয় ঔপনিবেশিক সমিতির বহুদিনের কামনা পূরণের পথ প্রশস্ত হইল । ইহার পর ১৯২৯ সালে কলিকাতার এক জন মাড়োয়ারী ব্যবসায়ী এই জমির উপর একটি প্রশস্ত যাত্ৰীনিবাস ও একটি পাকশালী নিৰ্ম্মাণ করিয়া দেন। সে প্রায় সাত বৎসর পূর্বের কথা। ইতিমধ্যে সেবাব্রতী কস্মিগণের সদ্ব্যবহারে মুগ্ধ বহু দানশীল হিন্দু প্রদত্ত অর্থসাহায্যে ধৰ্ম্মশালার আরও প্রসার হইয়াছে। এখন আশ্রমে দুই শত পঞ্চাশ জন লোকের এককালীন বাসোপযোগী দুইটি স্ববৃহৎ দ্বিতল দালান-সংলগ্ন বহু কক্ষ, দুইটি পাকশাল, একটি সাধারণ আহারের স্থান, একটি দাতব্য চিকিৎসালয় ও সাধারণ প্রার্থনার জন্য একটি মন্দির আছে । হিন্দুমাত্রেই এখানে সাদরে গৃহীত ও সাহায্যপ্রাপ্ত 'ssgN9 হন । ভারত-সেবাশ্রম-সঙ্ঘের তত্ত্বাবধানে এই ধৰ্ম্মশালাটি পরিচালিত হয় এবং ইহারা আশ্রিত যাত্রীদের স্বর্থ-স্থবিধার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখেন। পুণ্যার্থী হিন্দুযাত্রীরা যাহাতে সপরিবারে এখানে থাকিয়া সামান্ত ব্যয়ে গয়াকৃত্য প্রভৃতি করিতে পারেন, সে ব্যবস্থাও ইহারা করিয়া দেন। আরও দুই-একটি তীর্থস্থানে ধৰ্ম্মশালা স্থাপনোদেশুে ই হারা জমি ক্রয় করিয়া রাখিয়াছেন ; অর্থাভাবের জন্ত কাৰ্য্য অগ্রসর হইতে পারিতেছে না। ভুবনেশ্বরে শ্ৰীযুক্ত বিশ্বনাথ পাল মহাশয়ের একটি ধৰ্ম্মশালা আছে। ষ্টেশন হইতে দুই মাইল দূরে বিন্দুসরোবরের তীরে ইহা অবস্থিত। ভুবনেশ্বরের স্ববিখ্যাত মন্দির অতি নিকটবর্তী বলিয়া যাত্রীদের মন্দির ও দেবদর্শনের বিশেষ সুবিধা আছে। ভকৃষ্ণানন্দ ব্রহ্মচারী জনসাধারণের নিকট ভিক্ষালব্ধ অর্থে অযোধ্যা, মধ্যভারত, পঞ্জাব, রাজপুতান, উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ, কাবুল, বেলুচিস্থান ও হিমালয়ের পাৰ্ব্বত্যপ্রদেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় এক যুগ পূৰ্ব্বে বত্রিশটি কালীবাড়ী প্রতিষ্ঠা করিয়া প্রবাসে বাঙালীর যে সুচারু আশ্রয় ব্যবস্থা করিয়া গিয়াছেন, আজ ধৰ্ম্মশালার ইতিহাস সম্পর্কে সেই কথা কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করা বোধ হয় নিতান্ত অপ্রাসঙ্গিক হইবে না। তাহার সেক্ট অক্ষয় কীৰ্ত্তির নিদর্শনগুলি যাহাতে উত্তরকালে বঙ্গযুবকদের অনুরূপ মুচিরস্থায়ী সৎকার্ধ্যে অনুপ্রাণিত করিতে পারে, প্রত্যেক বাঙালীর সে-বিষয়ে যত্নশীল হওয়া কৰ্ত্তব্য। প্ৰকৃষ্ণানন্দ ব্ৰহ্মচারী ১৮৮২ খ্ৰীষ্টাব্দে ৯২ বৎসর বয়সে পরলোকগমন করেন । বাংলার মধ্যেও বাঙালীর আশ্রয়স্থলের প্রয়োজন আছে, সে-কথাও স্বজাতিপ্রেমিক বাঙালীর বিস্তৃত হন নাই । প্রদীপের নীচেই যেমন আলোকের অভাব অনুভূত হয়, বাংলার মধ্যেই অনেক সময়ে সেইরূপ বাঙালীকে আশ্রয়ের অভাবে বিপদগ্ৰস্ত হইতে হয় । কলিকাতা বড়বাজারের স্বপরিচিত জমিদার দক্ষিণারঞ্জন বসাক মহাশয়ের লোকান্তর গমনের পর তাহার দানলীলা সাখী পত্নী শ্ৰীমতী পূর্ণশশী দাসী স্বর্গগত স্বামীর স্থতিরক্ষীকল্পে কলিকাতায় নবাগত বাঙালী হিন্দুদিগের বাসের জন্ত