পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিশ্বভারতী বাধিক পরিষদে প্রতিষ্ঠাতা-মাচার্য্যের অভিভাষণ [ ঐসুধীররঞ্জন খাস্তগীর কর্তৃক গৃহীত চিত্র ] আলোকের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করে রেখে দিয়ে গেছেন । তার সেই মহাদিনটার চারদিকে এই মন্দির এই আশ্রম এই বিদ্যালয় প্রতিদিন আকার ধারণ করে উঠেছে । আমাদের জীবন, আমাদের হৃদয়, আমাদের চেতনা একে বেষ্টন করে দােিয়ছে। এই দিনটির আহবানে কল্যাণ মূৰ্ত্তিমান হয়ে এখানে আৰিভূত হয়েছে এবং র্তার সেই সত্য দীক্ষার দিনটি ধনী ও দরিদ্রকে, বালক ও বৃদ্ধকে, জ্ঞানী ও মূর্ধকে বর্ষে বর্ষে আনন্দ-উৎসৰে আমন্ত্রণ করে আনছে।" এবারও এই উৎসবে কত জানন্দ । বন্ধুবান্ধব, কত অতিথি-অভ্যাগত, আত্মীয়স্বজন নিয়ে আনন্দে এই দিন কয়টি আমাদের কেটেছে । উৎসবের সর্বপ্রধান আজ ষে ভগবদৰ্চ্চনা তাও স্বসম্পন্ন হয়েছে। তাই সকলের মনেই একটি তৃপ্তির ভাব। গুরুদেব এবারও মন্দিরে যা বলেছেন তা সকলের মনকে পূর্ণ করেছে। উৎসব আসবার পূর্বেরও একটি জানন্দ আছে। বৎসারান্তে ৭ই পৌষের উৎসব যখন আবার আসতে থাকে তখন আশ্রমে যে তার একটি সাড়া পড়ে যায় তার মধ্যেও আনন্দ আছে । কৰ্ম্মীদের মধ্যে আলোচন-বৈঠক বসে, কোথাও বা গানের অভ্যাস চলে,—উৎসবটিকে স্বসম্পন্ন করবার জন্তে নানা আয়োজন চলতে থাকে। " এই উপলক্ষে আশ্রমের ছোট ছেলেমেয়েদের মধ্যে ষে একটি জানন্দ-উৎসাহ দেখা যায় সেটিও দেখবার জিনিষ। উৎসবের এও যেন একটি অঙ্গ 1 মেলার জাগার সব ব্যবস্থা হচ্ছে নানা সৰুৰাম আসছে, এগৰ বিশ্বভারতী পরিষদের অধিবেশন, ৯ই পৌষ, ১৩৪৩ দেখে তাদের কত আনন্দ । উৎসব আসছে বলে এক দিকে শিশুরা উজসিত, অন্ত দিকে বড়দের মধ্যেও একটি প্রতীক্ষার ভাব । উৎসবের সব আয়োজনের মধ্যে সেদিন মন্দিরের উপদেশ শুনতে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা সকলের উপরে। গুরুদেব দেশে থাকলে প্রতিবৎসর এই দিনে তিনি মন্দিরে বলেন। দূরে ধারা আছেন তারাও এই দিনটিতে গুরুদেব মন্দিরে কি বলেন সেটা শুনতে পাওয়া যাবে বলে উংস্থক হয়ে থাকেন। শুধু এই জন্তই কত অতিথি এই দিনে এখানে আসেন। কিন্তু এবারে উৎসবের আগে একদিন গুরুদেব যখন বড় ক্লাস্ত হয়েছিলেন তখন বলছিলেন ষে কিছুক্ষণ অন্ততঃ চুপ করে থাকার যে একটা শান্তি আছে, সেটা তিনি পাচ্ছেন না। বললেন, "ক্রমাগত লোকের ভীড়, কাজেরও অন্ত নেই। আজ দশ মিনিটও যেন একজমে চুপ করে থাকতে পারি নি।" উৎসব কাছে এসে পড়েছে ; বললেন, “মন্দিরে আর বলতে ইচ্ছে করে না । ফ্লাস্তির জন্তই ষে শুধু, তা নয় । একটা বস্থল আছে যখন থামা দরকার। এই বয়সের একটি পাওয়া আছে, সেই পাওয়ার মধ্যে এই সময়ে সব বলা সৰ কথার শেষ হওয়া উচিত।” বললেন, “আমার পিতৃদেবও একটা বয়সে মন্দিরে বলা থামিয়েছিলেন। বোধ হয় আমারও এখন সেই বয়ল।