পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাস্তবতা। কীটের যা বাস্তবতা, পশুর যা বাস্তবতা, মামুষের বাস্তবতাও কি তাই ? “সাহিত্যকে নিৰ্ম্মল রাখবার চেষ্টা-যেন আমাদের থাকে । সঙ্কীর্ণ বা নীরসকে আমি নিৰ্ম্মল বলি মে, কবি হয়ে তা আমি পারি নে। বিধাতা যে সৌন্দয্যে যে রসে আমাদের অধিকার দিয়েছেন তা স্বীকার করে না নিলে সেই সৌন্দৰ্য্য ও রসের যিনি বিধাতা তাকেই অস্বীকার করা হয় । বিধাতার দান এই আনন্দরস উপভোগ করা যারা অন্যায় বলেন র্তাদের আমি ধিক্কার দিই। কিন্তু সেই আনন্দরসে যেন কলুষ প্রবেশ না করে, তাতে যেন বিষ মিশ্রিত না হয়। “এই উপলক্ষ্যে আর একটি কথা বলি। বঙ্গভঙ্গের আন্দোলনের কথা আজ আমার বিশেষ ক’রে মনে পড়ছে, বাহিরের সঙ্গে সেই সময় আমার যোগ হয়েছিল। সেই সময় বক্তৃতামঞ্চে অনেক বাধা সভাপতি ছিলেন—কোন স্বযোগে হীরেন্দ্রবাবুকে আমার কোন বক্তৃতায় সভাপতিরূপে পেলে আমার অভ্যস্ত আনন্দ হ’ত । সেই দিনগুলির কথা স্মরণ ক’রে র্তাকে আজ আমার অন্তরের কৃতজ্ঞতা জানাই ।” হরিহরবাবুর অভিভাষণটিতে অষ্টাদশ শতাব্দী হইতে আরম্ভ করিয়া চন্দননগরের নানা ঐতিহাসিক তথ্য সন্নিবিষ্ট হইয়াছে। উহাতে তথাকার মানচিত্র ও নক্সা,পুরাতন ও আধুনিক বহু দৃপ্ত, সৌধ, দুর্গ, দলিল, এবং ঐতিহাসিক ভারতীয় ও বিদেশী ব্যক্তিগণের ফোটোগ্রাফের প্রতিলিপি মুদ্রিত হওয়ায় উহার মূল্য বাড়িয়াছে। চন্দননগরের প্রতি হরিহরবাবুর যেরূপ কশ্মিষ্ঠ অনুরাগ, বঙ্গের অন্য সব স্থানেরও কোন-না-কোন নাগরিকের যদি তাহ থাকিত, তাহা হইলে বঙ্গদেশ নানা দিকে উপকৃত হইত। শ্ৰীযুক্ত হীরেন্দ্রনাথ দত্তের অভিভাষণটির উল্লেখ আগেই করিয়াছি। তাহার অভিভাষণটির এবং অন্য সমুদয় অভিভাষণের বিস্তারিত পরিচয় দিতে পারা যাইবে নী—সমুদয়ই খবরের কাগজে প্রকাশিত হইয়া যাওয়ায় তাহা আবগুকও নহে। হীরেন্দ্রবাবুর অভিভাষণের কেবল তিনটি বিষয়ের উল্লেখ করিব। বাংলা বৰ্ত্তমান সময়ে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে স্থান লাভ করিয়াছে এবং অদূর ভবিষ্যতে যাহা লাভ করিবে, সে বিষয়ে সৰু আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ও র্তাহার পুত্র ঐযুক্ত শ্ৰীযোগেন্দ্রনাথ গুপ্ত শিশু-সাহিত্য শাখার সভাপতি শু্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে তাহাদের চেষ্টা ও কৃতিত্বের ন্যায্য প্রশংসা হীরেন্দ্রবাবু প্রদান করিয়াছেন। তিনি বঙ্গভাযাকে বাঙালীদের যাবতীয় শিক্ষার বাহন করিবার চেষ্টার কিছু ইতিহাসও র্তাহার অভিভাষণে দিয়াছেন। সে বিষয়ে র্তাহার উল্লিখিত প্রথম ঘটনা এই— ১৩০১ বঙ্গাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদৃ কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাহাতে বাংলার জন্য ৰোগ্য স্থান নিদিষ্ট হয় এবং প্রবেশিক ও এফ-এ পরীক্ষায় যাহাতে ইতিহাস প্রভূতির জ্ঞান বাংলার বাঙ্গনে বিতরিত হয়—তজ্জন্স ত্যর গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রভূতিকে লইয়। ( আমিও ঐ কমিটির এক জন সদস্য ছিলাম ) একটি কমিটি গঠিত করেন। ঐ কমিটি সসঙ্কোচে প্রস্তাব করেন— That the University be moved to adopt a regulation to the effect that in Isistory, Geography and Muthentatics at the Entrance Examination, the answer may be given in any of the living languages recognised by the Senate. ঐ প্রস্তাব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরিত হইলে বিবেচনার অযোগ্য বলিয়া বিবেচিত হইয়াছিল। তবে মহামান্ত সেনেট-সভ প্রজ্ঞার উচ্চ চূড়ায় চড়িয়া—দিও হে কিঞ্চিৎ, কোরে না বঞ্চিত এই