পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

وقالجاهج প্রৰণসী SN93S বেশী হইয়াছে। অন্ত পাচটিতেও কংগ্রেসপক্ষীয় সদস্তদের সংখ্যা নগণ্য নহে। অন্য প্রদেশগুলির কথা বলিতে পারি না, কিন্তু বঙ্গেও কংগ্রেসপক্ষীয় সদস্যদের সংখ্যা খুব বেশী হইত, যদি ব্রিটিশ পালেমেণ্ট বাংলা দেশের স্বাধীনতাকামী শিক্ষিত শ্রেণীকে নানা উপায়ে হীনবল করিবার নানা বিধি নূতন ভারতশাসন আইনে নিবিষ্ট না করিতেন । সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা তন্মধ্যে প্রধান উপায়—যদিও সে উপায় সকল প্রদেশেই অবলম্বিত হইয়াছে। বাংলা দেশে স্বাধীনতাকামী শিক্ষিত লোকদের মধ্যে হিন্দু বেশী। তাহাদিগকে হীনবল করা হইয়াছে । প্রথমতঃ হিন্দুদিগকে ব্যবস্থাপক সভায় তাহীদের শিক্ষা, যোগ্যতা, সাৰ্ব্বজনিক কৰ্ম্মোৎসাহ ও তাঁহাদের প্রদত্ত রাজস্বের অনুপাতে তাহাদিগকে প্রতিনিধি দেওয়া হয় নাই, এমন কি তাহাদের সংখ্যা অনুসারে প্রাপ্য প্রতিনিধিও দেওয়া হয় নাই। দ্বিতীয়ত, যাহারা অস্পশু বা অবনত জাতি নহে এবং অবনতদের তালিকায় যাইতে প্রবল আপত্তি জানাইয়াছে, তাহাদিগকেও ঐ তালিকাভুক্ত করিয়া হিন্দুদের ৮০টি আসনের মধ্যে ৩০টি “অবনত” হিন্দুদিগকে দিয়া, “অবনত” ও “অনবনত” হিন্দুদের মধ্যে যোগ্যতম হিন্দুদের নির্বাচনে বাধা দেওয়া হইয়াছে । অধিকন্তু, বঙ্গে ইংরেজদিগকে ২৫টি আসন দেওয়া হইয়াছে। তাহারা লোকসংখ্যা অনুসারে ১টিও পাইত না । তাহাদের প্রদত্ত রাজস্বের অশুপাতেও ২৫টি প্রাপ্য হয় না। তদ্ভিন্ন প্রদত্ত রাজস্ব অনুসারে আসন ভাগ করিয়া দিতে গেলে বঙ্গে ২৫০টি আসনের মধ্যে ১৮৭টি হিন্দুদের প্রাপ্য হয়। যাহা হউক, ব্রিটিশ পালেমেণ্টের এত চেষ্টা সত্ত্বেও বঙ্গে ইগ্রেসের দলের সদস্যদের সংখ্য অন্ত যে কোন একটি দলের সদস্যদের সংখ্য অপেক্ষ বেশী হইয়াছে । সমগ্র ব্রিটিশ ভারতবর্ষে কংগ্রেসের এই কৃতকাৰ্য্যতার কারণ কি ? কারণ প্রধানতঃ দুটি । কংগ্রেস দেশকে স্বাধীনতা দিতে পারেন নাই বটে, কিন্তু স্বাধীনতা দিবার আশা অন্ত সকল দলের চেয়ে বেশী দিয়াছেন, স্বাধীনতা লাভের ইচ্ছা জাগাইয়া রাখিবার ও প্রবল করিবার চেষ্টা সকলের চেয়ে বেশী করিয়াছেন, এবং নিজ জ্ঞান বুদ্ধি বিবেচনা অনুসারে স্বাধীনতা লাভের চেষ্টাও সকলের চেয়ে বেশী করিয়াছেন। এই চেষ্টা করিতে গিয়া কংগ্রেস দলের লোকদিগকে প্রভূত ক্ষতি স্বীকার ও দুঃখ বরণ করিতে হইয়াছে। স্বাধীন হইবার ও থাকিবার ইচ্ছা মানুষের প্রকৃতিগত । স্বতরাং র্যাহারা দেশকে স্বাধীন করিবার আশা দেন ও চেষ্টা করেন, তাহারা যে দেশের লোকদের প্রিয় হইবেন, তাহা স্বাভাবিক। সত্য বটে, কংগ্রেসের স্বাধীনতালাভচেষ্টা এখনও সফল হয় নাই ; কিন্তু কয়টাপরাধীন দেশের স্বাধীনতালাভচেষ্টা এত অল্প সময়ে জয়যুক্ত হইয়াছে ? কংগ্রেসপক্ষীয় কোন কোন লোকের দোষের বা সমগ্র কংগ্রেসের কোনও নীতির ভ্রমের আলোচনা এখানে অপ্রাসঙ্গিক হইবে। তদ্ভিন্ন, সম্পূর্ণ নিখুঁত কোন দল ও মানুষ আছে কি ? কংগ্রেসের লোকপ্রিয় হইবার আর একটি কারণ, গবন্মেণ্টের প্রতি দেশের লোকদের বিরাগ । দেশের দারিদ্র্য, স্বাস্থ্যহীনতা, অজ্ঞতা প্রভৃতির অন্য নানা কারণ থাকিতে পারে—তাহার আলোচনা এথন করিতেছি না । কিন্তু দেশের লোকদের ধনবৃস্কি, উৎপন্ন ধন দেশে রক্ষা, রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, রোগের প্রতিষেধ, গ্রাম ও নগরসমূহের স্বাস্থ্যরক্ষার যথোচিত ব্যবস্তু, দেশের শোচনীয় নিরুক্ষরতা দূরীকরণের ব্যবস্থা—প্রভৃতি বিষয়ে গবন্মেণ্ট যথেষ্ট মন দেন নাই, ইহা সৰ্ব্বজনবিদিত। তাহার উপর অাছে, গবন্মেণ্টের বহুবর্ষব্যাপী দমননীতি—যাহার গুরুভার মানুষের মনকে অবসাদগ্ৰস্ত ও নৈরাশ্যপূর্ণ করিতেছে। সুতরাং গবন্মেণ্ট যে জনগণের অপ্রিয়, তাহা আশ্চর্য্যের বিষয় মহে। কংগ্রেস গবন্মেন্টের সর্বাপেক্ষা লিভীক ও অক্লাস্ত সমালোচক এবং সমালোচনা করিতে গিয়া দণ্ডিতও হইয়াছেম সকলের চেয়ে বেশ কংগ্রেসের লোকেরা । সুভরাং তাহাদের লোকপ্রিয় হওয়াটাও আশ্চর্য্যের বিষয় নহে । ংগ্রেস জয়ের কি ব্যবহার করিবেন ? কংগ্রেস ছয়টি প্রদেশের ব্যবস্থাপক সভায় ( যেখানে যেখানে দুটি কক্ষ আছে, তথাকার নিম্ন কক্ষে ) সৰ্ব্বাধিক আসন পাইয়াছেন। এই রূপ ক্ষমতা ( তাহার মূল্য যাহাই হউক ) লাভ করিয়া কংগ্রেস সেই ক্ষমতার ব্যবহার কিরূপ