পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

oم ح ہNS বিদেশে এইরূপ শিক্ষণপ্রাপ্ত অভিজ্ঞতাশালী যতগুলি যুবক দেশী কারখানায় কাজ পাইয়াছে বা নিজেরাই মূলধন সংগ্ৰহ করিয়া কারখানা খুলিয়াছে, তাহারা সকলেই বা অধিকাংশ কি অকেজো বলিয়া প্রমাণিত হইয়াছে ? আমরা বাঙালী যুবকদিগকে সৰ্ব্বগুণাধর মনে করি না, বলিও না । কিন্তু তাহদের বেকার অবস্থার সব দোষটা তাহীদের ঘাড়ে চাপান অন্যায়ু মনে করি । আর, তাহাদের যে শিক্ষার অভাব বলা হইয়াছে, সে দোষট কাহার ? পণ্যশিল্প ও বাণিজ্য শিখাইবার প্রতিষ্ঠান এদেশে খুব কম এবং অল্পসংখ্যক এইরূপ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা পাইয় যাহারা বাহির হয়, তাহদের কার্য্যক্ষেত্রও অতি সঙ্কীর্ণ। শিক্ষার ব্যবস্থা প্রধানতঃ গবষ্মেন্টেরই করা উচিত এবং কার্য্যক্ষেত্রের ব্যবস্থাও গবন্মেণ্টের করা উচিত- যেমন জাপানের গবষ্মেন্ট জাপানীদের জন্ত করিয়াছে । বঙ্গে সরকারী শিল্প-বিভাগ ছাতা, সাবান, ছুরী, কাচী প্রভৃতি তৈরি করিবার শিক্ষা কতকগুলি লোককে দিয়াছেন স্বীকার করি ; কিন্তু এইরূপ অল্পসংখ্যক ও ছোট ছোট পণ্যশিল্পের দ্বারা বেকার-সমস্যার সমাধান বহু পরিমাণে হইতে পারে মনে করি না। বিদ্যালয়ে সৈনিক আড়া সস্থাসনবাদ দমনের জন্তু বঙ্গের অনেক জায়গায় স্থায়ী ও অস্থায়ী ভাবে সৈনিক রাখা হইয়াছে। যেখানে স্থায়ী ভাবে তাহাদিগকে রাখা হয়, তথায় তাহদের জন্ত বাড়ি নিৰ্ম্মিত হয় । কিন্তু যখন তাহারা সফরে বাহির হয়, তখন অনেক স্থলে তাহাদিগকে গ্রাম্য বিদ্যালয়ে রাখা হয় । ইহাতে শিক্ষার ব্যাঘাত জন্মে, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় গবন্মেন্টের কাছে এই অভিযোগ করেন । উত্তরে শিক্ষা বিভাগ লিথিয়াছেন, বিশেয বিবেচনা করিয়া সৈঙ্গদের বাসস্থান নিৰ্দ্ধারিত হয়, এবং সৈন্তের বাস করায় কোন বিদ্যালয়ের কোন অসুবিধা হইয়াছে, গবন্মেন্টের নিকট এরূপ কোন অভিযোগ কেহ করে নাই । এক আধ দিন কোন ইস্কুলে সৈন্তেরা থাকিলে বিশেষ কিছু ক্ষতি হয় না। কিন্তু দীর্ঘতর কাল থাকিলে শিক্ষার ব্যাঘাত নিশ্চয়ই হয়। অসুবিধা হইলেও কোন গ্রাম্য বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের বুকের পাট এমন, যে, গবন্মেন্টের কাছে তজ্জন্ত অভিযোগ করিবেন ? কাহারও তাহা করিবার দুঃসাহস হইলে, যদি বিপ্লববাদের সহিত সহাহুভুতির সন্দেহে তাহার পিছনে পুলিস না লাগে, তাহা তাহার সৌভাগ্য বলিতে হইবে । অতএব কেহ অহুবিধার অভিযোগ না-করা হইতে ইহা প্রমাণ হয় না, যে, অসুবিধা হয় নাই । প্রবাসী SN28N? কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়-শিক্ষা-বিভাগকে উত্তর দিয়াছেন, বিদ্যালয়ে সৈন্যদের বাসস্থান নিৰ্দ্ধারিত হওয়ায় যে বিদ্যালয়ের অসুবিধা হইয়া থাকে, তাহাতে কোন সন্দেহ নাই ; ঢাকা জেলার অস্তঃপাতী ভাগ্যকুল ও সাভারের বিদ্যালয়ে সৈন্তদের অtডড স্থাপিত হওয়ায় উহা বন্ধ রাখিতে হইয়াছিল ; সুতরাং স্কুলগৃহে সৈন্যদিগকে থাকিতে দেওয়া উচিত নয়। শিক্ষা-বিভাগ কি মনে করেন, বিদ্যালয়েই সন্ত্রাসনবাদরোগের উৎপত্তি হয়, অতএব তাহার ঔষধরূপী সৈন্তগণের আড়াও সেইখানেই হওয়া উচিত ? ভ্রমণকারী সৈন্যদের সঙ্গে তাবু দিলেই ভাল হয়। ম্যাট্রিকুলেশনের পাঠ্যপুস্তক কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাটিকুলেশন পরীক্ষার ইংরেজী ছাড়া অৰ্থ সব বিষয়ের পরীক্ষা ও অধ্যাপন দেশী ভাষায় হইবে। এই জন্ত পাঠ্যপুস্তকও দেশী ভাষায় রচিত হওয়া চাই । কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞাপন দিয়াছিলেন, এইরূপ সব পুস্তক রচনা করিয়া ও ছাপাইয়া নিৰ্ব্বাচনের নিমিত্ত আগামী ৩০শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে পাঠাইতে হইবে । পুস্তকপ্রকাশক সমিতি তাহাতে বিশ্ববিদ্যালয়কে জানান, যে, এত অল্প সময়ের মধ্যে ভাল বহি লিখিয়া ও ছাপাইয়া পাঠান অসম্ভব বা দুঃসাধ্য। বিশ্ববিদ্যালয় পুনর্বিবেচনা করিয়া বলিয়াছেন যে, ১৯৩৭ সালের ৩১শে মাচের মধ্যে বহি পাঠাইলেই চলিবে, কেবল গণিত ও প্রাথমিক বিজ্ঞানের বহি আগামী ৩০শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে পাঠাইতে হইবে । ইহা ঠিক হইয়াছে । এই প্রসঙ্গে বলিতে চাই, বৈশাখ ও জ্যৈ;ষ্ঠর প্রবাসীতে প্রকাশিত বৈজ্ঞানিক পরিভাষা বিষয়ক প্রবন্ধটি গ্রন্থকারদের কাজে লাগিতে পারে। শুনিয়াছি, বিশ্ববিদ্যালয় কেবল বীজগণিতের বহি নিজেদের একচেটিয়া করিতে চান । কোন কিছু একচেটিয়া করিলে অন্য যোগ্য গ্রন্থকারদিগকে নিরুৎসাহ করা হয় এবং প্রতিযোগিতার অভাবে পুস্তকের ক্রমিক উৎকর্ষসাধনে বাধা পড়ে । অন্য দিকে, ইতাও বিবেচ্য, যে, গবন্মের্ণট বিশ্ববিদ্যালয়কে যথেষ্ট অর্থসাহায্য না করায় বিশ্ববিদ্যালয়কে আয়ের অন্য নানা উপায় চিন্তা করিতে হয় । আমাদের এই একটা মধ্য পন্থী মনে আসিয়াছে, যে, বিশ্ববিদ্যালয় সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ পুস্তক লিখাইবার অবিরাম চেষ্ট৷ করিতে থাকিলে, প্রতিযোগিতা বন্ধ হইবে না, অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিরই কাটতি সকলের চেয়ে বেশী হইতে পরিবে ।