পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

BS టె স্বীকার করিতে হইতেছে। সুতরাং হিন্দুসাহিত্যের উপর নির্ভর করা ব্যতীত বর্তমানে অন্য পথ নাই। অতএব সেক্ষেত্রে হিন্দুদের পৌরাণিক কাহিনীর সহিতও পরিচিত হওয়া দরকার। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় 'বাংলা সিলেকশনে'র মধ্যে পৌরাণিক-কাহিনীপূৰ্ণ রচনা সন্নিবিষ্ট করিয়াছেন, ইঙ্গ সত্য, কিন্তু তজ্জন্য কর্তৃপক্ষকে দোষ দেওয়া চলে না । কারণ সে-সম্বন্ধে কিছু কিছু জ্ঞান থাকা দরকার । তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে আমরা এই অনুরোধ জানাইতেছি যে র্তাহারা যেন ভবিষ্যতে মুসলিম-সংস্কৃতির বিষয় পাঠ্যপুস্তকে সন্নিবিষ্ট করেন। কারণ মুসলমানদের সম্বন্ধে হিন্দুদের কিছু কিছু জানা দরকার । পাঠ্যপুস্তক রচনা করিবার সময় আরও দেখিতে হইবে, কোন সম্প্রদায়ের প্রতি আক্রমণাত্মক বিময় যেন উহাতে কিছুতেই স্থান না পায় । উহাতে এমন সব বিষয় থাকা দরকার যাকাতে এক সম্প্রদায় অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবান, সন্তামভূতিশীল ও প্রতিভাবাপন্ন ঠক্টতে পারে । অপরকে যেন ঘৃণা করিতে না শিথে । বিশ্ববিদ্যালয়ের একদেশদর্শী সমালোচকগণ উহার যে-সব দোষত্রটির কথা উল্লেখ করিয়াছেন, তাহার মধ্যে আংশিক সত্য কিছু থাকিলেও, তাতার অধিকাংশ বিদ্বেষমূলক, অসত্য ও প্রতিক্রিয়াশীল । বিদ্বেষ প্রচার করিয়া সমাজের কোনও অভিযোগের প্রতিকার হষ্টবে না। ও জাতীয় আন্দোলনকে নিমণ করা হয়, ইহাও তাঙ্গরক্ট বহিবিকাশ মাত্র। মুসলমান হঠয়াও এই আন্দোলনে আমাদের যোগ না দিবার কারণ এই যে, আমরা মনে করি, ইহার দ্বারা মুসলমানদের লাভের চেয়ে ক্ষতির সম্ভাবনা অধিক । ইহাতে সমাজের মধ্যে ধৰ্ম্মান্ধত আরও বুদ্ধি পাইবে এবং প্রাস্ত পথে মুসলিম-সংস্কৃতি রক্ষা করিতে গিয়া মুসলমানদের মধ্যে সাধারণ শিক্ষার পদার হইবে না । বাংলার এক শ্রেণীর মুসলমানের ‘মৃদু ও সুচিস্তিত বিশ্বাস সম্বন্ধে এই ক্ষুদ্র প্রবন্ধে সব কথা বলা সস্তব হইবে না, তবে একস্তি কর্তৃবাবোধে দু-একটা কথা বলা দরকার মনে করিতেছি । মুসলমানদের দেহ মন ও মস্তিষ্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দুপ্রভাবিত সাহিত্য ও ইতিহাস পাঠ করিয়া আড়ষ্ট ও অবসর ইষ্টয় পড়িয়াছে বলিয়া যে অভিযোগ করা হইয়াছে তাত মিথ্য। একে যে উদ্দেশ্যে কংগ্রেস প্রবণসী ్సN98Nరి ও বিদ্বেষপ্রস্থত ত বটেই ; তাহ ছাড়া তদ্ধারা মুসলমানের বর্তমান অধঃপতনের মূল কারণ উপলব্ধি করিবার যোগ্যতার অভাবই প্রতিপন্ন হইতেছে। হাজার হাজার মুসলমান যুবক বিশ্ববিদ্যালয় হইতে লেখাপড় শিথিয়াছে, তাহদের মধ্যে পাশ্চাত্য প্রভাব অনেক আছে, কিন্তু উল্লেখযোগ্য কোন হিন্দু প্রভাব পরিলক্ষিত হয় না। এতদিন ধরিয়া হিন্দু সাহিত্য পড়িয়াও কোনও মুসলমান হিন্দু দেবদেবীর প্রতি ভক্তিমান হইয় উঠে নাই । ভক্তি করা ত দূরের কথা, প্রত্যেক মুসলমানই মনে-প্রাণে পৌত্তলিকতাকে ঘুণ করিয়া থাকে । হিন্দুদের পৌরাণিক দেবদেবীর কাহিনীর সহিত পরিচিত হইয়া তাহাদের সম্মুখে মাথ৷ নত করিয়াছে এমন একটা মুসলমানও পাওয়া যাইবে না । রোমান, গ্রীক ও বাইবেলের কাহিনী পড়িয়াও কেহ সেগুলিকে অ{গুবাক্য বলিয়ু বিশ্বাস করে না । এগুলিকে সকলেই সাহিত্যের সম্পদ বলিয়া জানে, অ্যর সেই ভাবেই পড়িয়া থাকে । ইহার মধ্যে প্রভাব বিস্তারের কথা আদৌ উঠিতে পারে না। আমরা দৃঢ়তার সহিত বলিতেছি, বিশ্ববিদ্যালয়প্রবর্তিত বাংলা-সাহিত্য পড়িয়া মুসলমান হিন্দুভাবাপন্ন হইবে বলিয় যে ভয় করা হইতেছে তাই অলীক-যুগযুগান্তর ধরিয়া পড়িলেও তাহ হইবে না । অপর ধৰ্ম্মে ত দূরের কথ}, মুসলমানদের নিজ সমাজের অণতে তাহার অধিশ্বাস করিতেছে ; যথ", বাহির রাহেবের গল্প', 'বক্ষবিদারণকাহিম), ইসার বিনা বাপে জন্মের কথা, এবং তাহার এখনও জীবিত মধ্যে যে সব গলগল্প প্রচলিত তাহাই 'ই জরত থাকিবার কথা, এই সব বিষয় তাহারা নানা যুক্তিতর্ক দ্বারা খণ্ডন করিতেছে, আর তাহারা অপরের পৌরাণিক কাহিনীব দ্বার প্রভাবিত হঠলে ! joy for evor—ইহাঙ্গ যদি মামুষের একটা স্বাভাবিক প্রবৃত্তি হয়, তবে সে যেখানেই সৌন্দর্য্যের আস্বাদ পাইবে সেইখানেই যাইবে । সে প্রত্যেক সম্প্রদায়ের পৌরাণিক কাহিনীর মধ্যে সেই চিরবাঞ্ছিত সৌন্দর্ঘ্যের জন্য প্রবেশ করিবে । বর্তমান জগতের গতি কুসংস্কারের দিকে নয়,— সুতরাং পৌত্তলিকতা ও প্রকৃতিপঞ্জার মোহে মাতুয় অধিক দিন আকৃষ্ট থাকিবে না । কিন্তু উহার মধ্যে যদি সৌন্দয্যের সন্ধান পাওয়া যায় তবে কেন তাহা গ্রহণ করিবে না ? ‘A thing of beauty is a