পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশষাড় জড়াইয় ধরে। মুখে তাহার কথা বন্ধ হয়। আর পীড়াপীড়ি করে না সে । তার পর মা-ছেলেতে চলে অশ্রাস্ত কথার বিনিময়। অবশেষে ভাষার উত্তাপ কমিতে থাকে ; চোখের পাতা ভারী হয় ; বাস্থ কখন ঘুমাইয় পড়ে। মলিন উঠিয়া পোকাকে শাশুড়ীর বিছানায় রাখিয়া আসে। মাঝরাত্রে জাগিয়া বসিয়া মা-কে না দেপিয়া শিশু কাদিতে থাকে। ঠাকুরমার আদর-অসুনয় কানেও তোলে না। বাস্থর ক্ৰন্দনে মলিনাকে ঘুম হইতে উঠিয়া এ-ঘরে অসিতে হয় । কোন কোন দিন নিজের ঘরে লইয়া যায়, কোন দিন বা ঘুম পাড়াইয় আবার শাশুড়ীর কাছেই রাখিয়৷ 3||{ } এমনষ্ট করিয়া দিনে দিনে বহু চেষ্টায় বাস্থর সুমতি হযুছে । এখন সে রাত্রে ঠাকুরমার কাছেই শোয় । তবে সন্ধffরাতে মায়ের কোলে ঘুমান তাতার ন! হইলে 忒 奖 শেযরাত্রে জাগিয়া সে এখন ঠাকুরমার কৃষ্ণের শতনাম কথায় কথায় ঠাকুরম স্বধায়, “বল ত দাদু আমার, তোমার ভাই হবে, না বোন হবে ?” প্লশ্ন করে কত কি ।

  • {{{ |

বা জবাব দেয় না । ভাঙ্গ হইবে অনেক দিন সে-কথা শুনি আপিতেছে । কিন্তু চার বছরের শিশু-চিন্ত কিছুতেষ্ট বুঝি উঠতে পারে না, এই ভাই হওয়ার সঙ্গে মায়ের নিকট ইহঁতে তাহার বিচ্ছেদের সম্বন্ধ কোথায় । ভাই হঠবে ভাল কথা ! কিন্তু বাড়ীর সকলে মিলিয়া কেন তাহাকে জননীর অধিকার হইতে তফাতে রাখিতে চায়! আর এই ষড়যন্ত্রে ময়েরও গোপন সম্মতি আছে বুঝিয়। শিশু কেমন যেন হইয়া ধায় । তাহার মাতৃস্তন্তের একযােটে অধিকারে কিসের জন্ত এই সতর্ক হস্তক্ষেপ । শিগুচিত্তে কি এক অননুমেয় সংশয়ের ছায়া ঘনায় । বাস্থ তাই জবাব দেয় না । ঠাকুরম আদব করিয়া কোলে টানিয়া বলেন, “বল দাদু, কাল তোমায় সন্দেশ দেব । বল ত একবার, তোমার ভাই হবে, না বোন হবে ?" বাস্থ থানিক ইতস্তত করিয়া জবাব দেয়, “বোন হবে।” “ত হ’লে সন্দেশ পাবে না।" ঠাকুরমা হাসিয়া কোল হইতে তাহাকে একটু দূরে সরাইতে চান। মধ্যবিত্ত বাঙালী-ঘরে ভাই না হইয়া বোন হওয়াটা ধে - পিউ পিঠি BS్పగి কতখানি অপরাধের সে-কথা বুঝিবার বয়স না হইলেও বোন হইবে বলিলে যে সন্দেশ মিলিবে না এ-কথাটুকু ধরিতে বাস্থর বিলম্ব হয় না। সে মৃদু হাসিয়া বলে, “ঠাকুম, ভাই হবে আমার ” “মূপে ফুলচন্দন পডুক," বলিতে বলিতে ঠাকুরম সোহাগ করিয়া নাতিকে আবার কোলে টানিয়া নেন । ভাই-ই হোক, আর বোন-ই হোক, শিশু-মনের শঙ্কা ঘুচে না । এক-এক দিন বাস্থ মা'র কোল ঘেযিয়া শুইয়া এ-কথা সে-কথা বলিতে বলিতে সহসা কথন জননীর বুকের অাচল সরায় । মা বাধা দেয়, “ছি খোকন ! তুমি না বড় হয়েছ —সেদিন | বললে, আর থাবে না।”

  • ন ম. আমি খাব ল) মা—আমি খাওয়া-খাওয়া খেলা

করব ।’ শিশুর এই ছলন মায়ের বুকে বিঁধে । মলিনার মনে পড়ে, স্তন্য ছা দুইবার প্রতিদিনের ইতিহাস ! কত অনুরোধ, কত উপদেশ, ধমক ! মলিন দীর্ঘনিশ্বাস চাপিয়া যায়। এক এক দিন মলিন নাছোড়বান্দা বাস্ককে হয়ত খানিক ক্ষণের কড়ারে মাতৃস্তন্তে পুনরধিকার দেয়। শাশুড়ীর চোথে পড়িলেই তিনি মৃদু তিরস্কার করেন, “ওকি বৌমা ! অমন কাজও ক'রে না। আবার ধরলে ছাড়ানো মুস্কিল হবে ।” মলিনা বাস্থকে জোর করিয়া বুক-ছাড়া করে । যে আসিতেছে তাহার কথা তুলিলে চলিবে কেন ! বাস্থ আজকাল আর কাদে না । অভিমানে চুপ করিয়া থাকে। মুখুজে-গিন্নী আদর করিয়া বলেন, “নীতির আমার বুদ্ধি হয়েছে।” যথাসময়ে মুখুজে-পরিবারে আর একটি শিশুর আবির্ভাব হইল । সকাল হইতে ঠাকুরমার ব্যস্তসমস্ত ভাব, ধাত্রীর আগমন, থাকিয়ু-থাকিয়া ওধর হইতে জননীর চাপা আৰ্ত্তনাদ, পিতার ঘন ঘন ঘড়ি দেখা, পাড়ার সমাগত মেয়েদের সমস্বরে সাত ঝণক হুলুধ্বনি,—এসব দেখিয়া শুনিয়া বিস্মিত বাস্থ চুপ করিয়া বসিয়া আছে মেঝের উপর । ভাই হইবে কি-না সেকথা জানিবার আগ্রহ তাহার আর নাই । মা যে কি এক বিপদের মধ্যে গিয়া পড়িয়ছে সে