পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘ ਚੋਂ যথাক্রমে তিনটি কারণ দেখিতে পাই। প্রথমতঃ, মাটিতে উদ্ভিদের পুষ্টিকর প্রব্যের তারতম্য ঘটিতে পারে। দ্বিতীয়ত, উদ্ভিদের শিকড় ডাল পাতা পচিয়া মাটির সহিত অনেক প্রকারের রাসায়নিক দ্রব্যে পরিণত হইতে পাবে যাহা অন্য উদ্ভিদের পক্ষে ক্ষতিকর বা হিতকর । আর তৃতীয়ত: উদ্ভিদের শিকড় হইতে কোনরূপ বিষাক্ত পদার্থ নিৰ্গত হইয়া মাটির সহিত মিশিয় থাকে যাহা পরবর্তী উদ্ভিদের পক্ষে অনিষ্টকর । হাটেল এই বিষয় লইয়া কয়েকটি পরীক্ষা করেন । যোলটি শস্তকে ষোলটি সমান্তরাল জমিতে আমুক্রমিক দুই বৎসর বপন করা হয় এবং তৃতীয় বৎসর উক্ত ষোলটি সমান্তরাল জমতে কেবলমাত্র একটি শস্য বপন করা হয় । উক্ত জমিগুলির পারিপাশ্বিক অবস্থা, অর্থাৎ জল, বাতাস, আলো, উত্তাপ ও খাদ্য একই রাখা হয়। পরে উক্ত ষোলটি জমিতে পিয়াঞ্জ বপন করা হয়। বঁধাকপি, বিট, গম ইত্যাদি শস্যের ক্ষেত্রে ১৭ মণ পিয়াজ হয় । যে-ক্ষেত্রে আলু দেওয়া হইয়াছিল, সেই ক্ষেত্রে ৪৭ মণ পিয়াজ হয়। জক্ট, বজরা ইত্যাদির পর উহা ১৭৮ মণ হয় ও স্কোয়াশ গাছের ক্ষেত্রে ৩১৪ মণ হয় । ইহা হইতে দেখা যাইতেছে যে একই শস্ত পিয়াজের পরিমাণ, অন্তান্ত শস্যের পরে চাষ করায়, বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হইয়াছে । এখন দ্বিতীয় কারণটি দেখা যাক, অর্থাৎ উদ্ভিদের শিকড়, ডাল বা পাত মাটির সহিত পচিয়া কিরূপে রাসায়নিক দ্রব্যের স্বষ্টি করে। লিভিংষ্টোন, ব্রিটন এবং রিড একটি জমি পরীক্ষা করিয়ু দেখেন যে উক্ত জমিতে গম গাছের পক্ষে অনিষ্টকর কতকগুলি রাসায়নিক দ্রব্য আছে । উক্ত মাটিতে যদি ক্ষেরিক হাইড্রেট বা কারবন ব্ল্যাক দেওয়া হয় তাহ হইলে আর উক্ত রাসায়নিক দ্রব্যগুলি গম গাছের অনিষ্ট করিতে পারে না । ট্যানিক এসিডও উক্ত মাটিতে উপকার দিয়াছে। উক্ত পরীক্ষকগণ দেখান যে এই রাসায়নিক দ্রব্যগুলি উক্ত অনিষ্টকারী প্রব্যের পক্ষে সংমিশ্রণে এরূপ কতকগুলি দ্রব্যের স্বষ্টি করে যাহা গম গাছের পক্ষে আর অনিষ্টকর থাকে না । ব্রিয়েজিয়েল্ কতকগুলি বিভিন্ন প্রকারের মাটি হইতে রস সংগ্রহ করেন এবং গমগাছকে, উক্ত রস ও জল সিঞ্চিত জমীতে বপন করেন । ইহাতে উক্ত গমগাছগুলির উপর উক্ত উদ্ভিদের উপর উদ্ভিদের প্রভাৰ \se বিভিন্ন প্রকারের মাটির রসের ক্রিয়া লক্ষিত হয় । যখন উক্ত রসগুলির সহিত কারবন ব্ল্যাক, ক্যালসিয়াম কারৰনেট এবং ফেরিক হাইড্রেট মিশান হয়, তখন আর ‘গমগাছগুলির অনিষ্ট হয় না । শ্রিণার, স্কিনার, রীড এবং শোরি মাটির সহিত মিশ্রিত রাসায়নিক দ্রব্যগুলি পরীক্ষা করিয়াছেন এবং উক্ত দ্রব্যগুলির নানাবিধ প্রভাব উদ্ভিদের উপর লক্ষ্য করিয়াছেন, কিন্তু এমন অনেক রাসায়নিক দ্রব্য মাটির সহিত সংমিশ্রিত আছে যাহা এখনও ভালরূপে জানা যায় নাই। এই পরীক্ষকেরা দেখিয়াছেন যে যদি কতকগুলি সার ব্যবহার করা যায় তাহা হইলে মাটির সহিত প্রাপ্ত রাসায়নিক প্রব্যের ক্ষতিকর শক্তি হ্রাস হয় ; সারের মধ্যে বিদ্যমান রাসায়নিক দ্রব্যগুলি ক্ষতিকর দ্রব্যগুলির সহিত মিশ্রিত হইয়া এমন কতকগুলি রাসায়নিক দ্রব্যের স্বষ্টি করে যাহা আর উদ্ভিদের ক্ষতিকর থাকে না । যেমন Cumarin নামক রাসায়নিক দ্রব্যটির ক্ষতিকরত নষ্ট করিতে হইলে ফসফেট সারের বিশেষ প্রয়োজন। ভ্যানিলিনের জন্য এবং কুইনোনের জন্য পটাসিয়াম সণ্টস বিশেষ প্রয়োজনীয়। যে রাসায়নিক দ্রব্যগুলি মাটি বিশ্লেষণ করিয়া পাওয়া গিয়াছে, তাহাদের মধ্যে অনেকগুলিই, উদ্ভিদের শিকড়, ডাল ও পাতা পচাইয়া পাওয়া যায়ু । বিভিন্ন প্রকারের উদ্ভিদ পচাইয়া বিভিন্ন প্রকারের রাসায়নিক দ্রব্য পাওয়া যায়, কারণ বিভিন্ন প্রকারের ,উদ্ভিদের দেহে বিভিন্ন প্রকারের রাসায়নিক দ্রব্য আছে । এইবার তৃতীয় বিষয়টি আলোচনা করা যাক। পূৰ্ব্বে বলিয়াছি, গাছের শিকড় মাটিতে কতকগুলি বিষাক্ত পদার্থ নির্গমন করে যাহা অন্যান্য উদ্ভিদের পক্ষে অনিষ্টকর। ডি ক্যানডোলে এই বিষয়ে একটি মত প্রচার করেন যে প্রত্যেক উদ্ভিদ কতকগুলি দ্রব্য শিকড় দ্বারা নির্গমন করে যাহা অপর উদ্ভিদের পক্ষে অনিষ্টকর বা হিতকর হইতে পারে এবং সেই জন্য একটি শস্ত পরবর্তী পক্ষে হিতকর বা অনিষ্টকর হইবে কিনা পরীক্ষা করিয়া তবে রোপণ করা উচিত। তাহার মতটি অনেক দিন ভালরূপে পরীক্ষিত হয় নাই । ১৯০০ সালে ইংলণ্ডে পিকারিং নামক এক জন উদ্ভিদতত্ত্ববিং ও আমেরিকায় কৃষিবিভাগ এ বিষয়ে পরীক্ষ শস্যটির