পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আণশ্বিন যদি ঠিক মনে করিতে ন-পারে কিংবা নৃপেন যদি কলিকাতায় আসিয়া মহিমকে চিনিতে ন পারে সে-দোষ কাহারও নহে । বর্ষাকালের পুকুর আর নদী এক হইয় গেলে কোনটা নদীর জল আর কোনটা বা পুকুরের, কেহ কি নির্দেশ করিতে পারে ? স্বল্প-পরিসর ট্রেনের কামরায় গায়ে গা ঠেকাইয়৷ যাহার সঙ্গে হৃদ্যত জন্মিয়াছিল, বিশাল বারিধির মত অকুল এই শহরে সেষ্ট পরিচয়ের বুদ্বুদ কোথায় ফুটিল, কোথায় বা মিলাইল, কে তাঙ্গর সন্ধান রাগে ? যাহা হউক, নৃপেনকে সে পত্র লিখিতে বসিয়াছে। সে যে ভোলে নাই, লিপির মধা দিয়া অন্তরঙ্গতাকে আবার এক দিন হয়ত নিবিড় করিয়া ফিরিয়া পাইবে, এই আশাতেই মহিম আজ উৎফুল্ল । নূতন কলেজে পড়িতে আসিয়াছে—তৃতীয় বাৰ্ষিকের ছাত্রকে পত্র লিপিতেছে, কিন্তু যে-ভাসায় লিখিলে বিদ্যার ও শিল্পী ও কৰি b=RS ষ্টাইলের পরিচয় দেওয়া যায় সে-ভাষায় না লিথিয়া বাংলায় চিঠি লেগে কেন ? লিখিবার পূৰ্ব্বে মহিমও সে-কথা অনেক বার ভাবিয়াছে। ট্রেনের স্বল্প আলাপে সে বুঝিয়াছে নৃপেন মাতৃভাষার পক্ষপাতী—সাহিত্যের আলোচনাও কিছু কিছু হইয়াছে ঐটুকু সময়ের মধ্যে। কাজেই অনেক ভাবিয়া বাংলায় সে চিঠি লিখিতেছে। ভাষা ভাবের বাহন হইলেও মহিমের পক্ষে ভারগ্রস্ত হইয়া পড়িয়াছে। মাতৃভাষা শিক্ষার বাহন হইলে লিপিরচনা হয়ত সহজ হইয়া আসিবে—উপস্থিত মহিমের পক্ষে ত এক দুঃসাধ্য ব্যাপার। ভাব আর ভাষা এক নদীর দুটি তীর, এক দিক উচু আর এক দিক ঢালু। কোনটার সঙ্গে কোনটার মিল নাই। তাই নূতন পরিচিতকে লিখিতে বসিয়া এগারে দিনের ব্যবধানকে বলিতে হইতেছে বহুদিন এবং চিন্তার কোন কারণ না-থাকিলেও বিশেষ’ শব্দটি প্রয়োগ করিতে হইয়াছে ! শিল্পী ও কবি ঐঅশোক চট্টোপাধ্যায় লইলাম হস্তে ব্যগ্র রঙের তুলিটি মিলাইচু স্থকৌশলে বর্ণ রকমারি, তোমার ও মুখচ্ছবি, চঞ্চল ও নয়নের খেল বর্ণে বর্ণে তুলিক-পরশে আজ উঠবে ফুটিয়া শুভ্র এই রেশমের শুষ্ক বক্ষে । কুষ্ঠিত হইল তুলি বর্ণ যে নিম্প্রভ, কেমনে জানাবে বিশ্বে আড়ষ্ট ভঙ্গীতে কি দেখেছে অপলক নয়নেতে আজ । ঘন কৃষ্ণ কেশ, পাহাড়ের কোলে হাওয়ায় দোলান যেন অনন্ত বনানী ; b"アー8 ক্রযুগলে দেথি কোন তুষার আবৃত মক্ষণ পৰ্ব্বতশৃঙ্গে তীক্ষ মেঘচ্ছায়া ; সাগরের নীলজলে রোদের ঝলক— তেমনি সে নয়নের দু্যতি, কোমল কপোল বাহি মিষ্ট হাসি করে আসা-যাওয়া, ক্রীড়ারত হরিণ-শিশুর মত দ্রুত ছন্দে ; সহসা বঙ্কিম গ্রীব। লীলায়িত নয়ন আগ্রহে সরোবরে মৃণাল ছলিল লাস্যে কমলে ধরিয়া। নিম্পদ তুলিকা হয় কোন বর্ণে জাকিবে সে ছবি, পরাস্ত শিল্পীর হস্ত ; লেখনী তুলিয়া লেপে কবি ।