পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

わ〜いごの প্রবাসী SNBNE করবার প্রণালী ব’লে দিতে লাগলেন ও আমাদেরই ক্লাসের কয়েকটি ছেলে তৈরি করতে লাগল। পাকা ল্যাংড়া আমের জ্যাম যখন তৈরি হ’ল তখন আমাদের লোভ সম্বরণ করা কঠিন হয়ে উঠেছিল। পরদিন গ্রহণ-উপলক্ষে আমাদের ছুটি ছিল। কুড়ি তারিখে নৈনি এগ্রিকালচারাল স্কুলের অধ্যাপক ঐযুক্ত চাদ আমাদের দিয়ে জেলি তৈরি করালেন ও নোট লেখালেন। অম, পেক্‌টিন ও চিনি এই তিনটি জিনিষ দিয়ে জেলি প্রস্তুত হয় । এর মধ্যে একটি বাদ দিলে জেলি জমবে না। পেয়ারার জেলি করবার সময়ে লেবুর রস দেওয়া হয় এ-কথা জানতাম, কিন্তু কেন দেওয়া হয় সে-বিষয়ে আমি কখনও মাথা ঘামাই নি। উনি বলবার পর বুঝলাম যে পেয়ারাতে অম্ল অল্প থাকাতে লেবুর রস দিয়ে তার কমতি পূরণ করা হয়। নূতন শিক্ষার্থীদের জেলি করবার জন্য একটা থামোমিটারের বিশেষ দরকার। যাদের অভ্যাস ও অভিজ্ঞতা আছে তার হাত দিয়ে রসের গাঢ়ত্ব বুঝতে পারে। থামোমিটার থাকলে চট ক’রে নিশ্চিত ভাবে জানা যায় জেলির রস নামাবার উপযুক্ত গাঢ় হয়েছে কিনা। সাধারণত: ২১৮ থেকে ২২১ ডিগ্রী ফারেনহিটের মধ্যে উত্তাপ হলেই বোঝা যাবে যে নামাবার সময় হয়েছে ও জেলিতে চিনির ভাগ শতকরা ৬৫ । জেলির মধ্যে চিনি শতকরা ৬৫ ভাগের কম হলে ২১৮ ডিগ্রী ফা. পৰ্য্যস্ত উত্তাপ হবে না এবং জেলিও জমবে না। অন্ন কিংবা পেকূটন কম থাকলে ২২৪ ডিগ্রী ফা. পর্য্যস্ত উত্তাপ হয়ে যাবার পর ও জেলি ঠাণ্ড হবার পর থকথকে হয়ে জমে যাবে না। পাক বেশী হ’লে আবার চটচটে হয়ে যায়, সেটিও একটা দোষ। সেদিন মারমালেণ্ডও তৈরি করা হ'ল। জেলি ও মারমালেডে প্রভেদ এই যে শেষোক্ত জিনিষে ফলের খোসবিশেষতঃ কাগজী, পাতি ও কমলালেবুর খোসা—সমান ভাবে কেটে দেওয়া হয়। মারমালেডেরও জেলির মত স্বচ্ছ পরিষ্কার ও থকথকে হওয়া বিশেষ প্রয়োজন। মারমালেড়ে খোসার পরিমাণ আবশ্ব ক্রেতাদের রুচির উপর নির্ভর করে। ২১শে তারিখে মাথুর-মশায় আমাদের প্রিজার্তমূএর প্রণালী বেশ ভাল ক'রে বুঝিয়ে দিলেন। সেদিন ক্যান সীমিং মেশিনটা অন্ত কোন জায়গায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে কাজটি সম্পূর্ণরূপে শিখতে পারলাম না। বিদেশী প্রিজার্তা ও আমাদের দেশী মোরব্বা একই জিনিষ, কেবল মোরব্বাতে চিনির পরিমাণ অত্যধিক । তাতে বেশী মিষ্টি হবার দরুণ ফলের আসল স্বাদ বা গন্ধ পাওয়া যায় না। কিন্তু সিঙ্গাপুর থেকে যে আনারস টিনে ক'রে আসে, সে দেখতে ও খেতে প্রায় তাজা ফলেরই অনুরূপ। মোরব্বাতে বেশী চিনি বাধা হয়ে দিতে হয়, কারণ উহা বীজাণুরহিতও করা হয় না ও অনেক সময়ে হাওয়ায় খোলা পড়ে থাকে ৷ শতকরা ৬৫ ভাগ বা তার বেশী চিনি থাকলে কোন খাবার জিনিষ সাধারণতঃ পচে যায় না । আমাদের দিয়ে সেদিন পেঠার অর্থাৎ চালকুমড়ার মোরব্বা তৈরি করা হ’ল, ফলে বাড়ী ফিরতে বারট বেজে গেল, কেননা চালকুমড়া সিদ্ধ হতে বড় দেরি লাগে । পরদিন মেহতা-মশায় আমাদের আচার ও চাটনির দেশী ও বিলাতী প্রণালী বললেন। বিলেতে আমের চাটনি ও পিকূলের খুব চাহিদ। ইংরেজদের রুচি বুঝে আচার চাটনি ওদেশে চালান করলে প্রভূত লাভের আশা আছে। ভারতবর্ষে যেসব আচার বিক্ৰী হয় তা অনেক সময়ে গন্ধক দ্রাবক ( sulphuric acid ) দিয়ে তৈরি । এতে জিনিষ সস্তায় ও শীঘ্র তৈরি হয়ে যায়। আমাদের দেশেও কিন্তু নিয়ম হয়ে যাওয়া উচিত যে খাবার জিনিষে কেউ কোন ওষুধ ব্যবহার করতে পাবে না। মেহতা-মশায় কয়েকটি ব্যবস্থা (recipe; লিখিয়ে দিলেন ও নিজের তৈরি কাচা ফলসার আচার দেখালেন। আমাদের দেশে অতি প্রাচীন কাল থেকে আচার তৈরি করা হত। এখন পৰ্য্যস্ত পুরুষানুক্রমে তা চলে আসছে। আমাদের ক্লাসে অনেকের হাতে-কলমে কাজ করবার খুব উৎসাহ ছিল। তাদের জন্ত বিশেষ করে রোজ দুপুরবেল প্রাকৃটিক্যাল ক্লাস হত। সে-সময়ে যার যা ইচ্ছা তৈরি করত। বর্ষার জন্য তখন আম ছাড়া অন্য কোন টাটকা ফল পাওয়া যেত না, কিন্তু পণ্ডিত মালরীয় অনেক চেষ্টা ক'রে পাহাড়ী ফল—যেমন আলুচ, পাঁচ ও আপেল ইত্যাদি—জোগাড় ক’রে রাখতেন। এলাহাবাদের সমিতি এই ক্লাসের জন্য অনেক খরচ করেছেন ও এখনও