পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] করবে, তার উপায় নেই—আত্মীয়-স্বজন এমন কেউ নেই যে তাকে নিমন্ত্রণ ক’রে নিয়ে যায় । নদীর ধারে একদিন সে নিরাল বসে আছে—মনটা তার ভারী দ’মে গেছে। এমন সময়ে এক বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ উপস্থিত । “ম, তুই কাদিস কেন ?” “আমার মা নেই, বাপ নেই, আত্মীয়-স্বজন কেউ নেই, আমার আমোদ-আহলাদ সব গেছে।” “কেন, এই যে তোর মাম। আমি আছি। চল তোকে আমার বাড়ী নিয়ে যাব ।” কন্যার মুখে হাসি আর ধরে না । কন্যা মামার বাড়ী নিমন্ত্রণে গেল । বৃদ্ধ ব্রাহ্মণটি ছিলেন নাগের রাজা । বঁশদতে দেখে ব্রাহ্মণের বেশ ধ’রে এসেছিলেন । কন্য। মামার বাড়ীর পথে খানিকটা যেতেই মামা বললেন, “দেখিস মা, যেন ভয় পাস্নি–কিছুতেই না।” “না, ভয় কিসের ?” কন্যা মামার সঙ্গে যায়, যায়, বায় । খানিক দূর গিয়ে দেখে কি মামা এত বড় একট পাথর পথ থেকে ওঠালেন । কন্যা ও অবাক ! কন্যাটিকে কি আছে ! না, নীচে সুড়ঙ্গে সিড়ি নেমে গেছে । সিড়ি ধ’রে নীচে আরও নীচে ঘুরে ফিরে মামা-ভগিনীতে নেমে গেল,—দেখে এক প্রকাণ্ড ঘর। পালঙ্কে এক নাগিনী শুয়ে আছেন । ব্রাহ্মণ এখন নাগের বেশ ধারণ করলেন—মামুষের গলায় নাগিনীকে বললেন, “কন্যাটি আমার ভাগ নী, আমোদ-আহ্নাদ করতে চায়, তাকে নিয়ে এসেছি।” নাগিনী ছিলেন এসময়ে প্রসববেদনায় অস্থির । বললেন, “বেশ করেছ। একটা পিদিম নিয়ে এসে মেয়েটাকে বল, পিদিমটা ধ’রে থাকৃ ।” নাগিনীর সাতটি ছান হ’য়ে মাটিতে কিলবিল করতে লাগল। কন্যা ত ছানাগুলি দেখে ভয়েই অস্থির । ধপাস ক’রে পিদিমটা একটা ছানার ল্যাঞ্জে প’ড়ে গিয়ে একেবারে তার ল্যাজটা কেটে গেল । ছেলেদের পাত তাড়ি—নাগপঞ্চমী । 3)Q ○ -\, বুড়ো নাগের কিন্তু তাতে রাগ হ’ল না। বরং তিনি বললেন, “ভয় নেই, ভয় নেই।” তার পর কন্যা আমোদ-আহলাদে দিন কাটালেন। পরদিন নাগ কন্যাকে শ্বশুর-বাড়ী রেখে এলেন। ব’লে দিলেন, “কারও কাছে আজকের ঘটনা বলিস্নি। আর বছর বছর এই দিনে নাগের পূজা করিস।” দিন যায় । বছর কেটে গেল । ছোট ছোট সাপের বাচ্চাগুলি এখন বড় হয়েছে ! ছ' ভাই ছোট ভাইকে ডাকে ‘ল্যাজ-কাটা’ । ছোট ভাই ত রেগেই আগুন । “মা, মা, আমায় ল্যাজ-কাটা বলে কেন ?” “সে হ’য়ে গেছে এক কাজ” এই না ব’লে তিনি সব কথা তাকে খুলে বললেন। ল্যাজকাটা ত রাগে আগুন । “যে আমার હતની করেছে তাকে আমি একবার দেখে নেব ।” “ন, ন, এমন কাজ করিস্নি। সে তোদের বোন। তোদের বাপ তাকে কত ভালোবাসেন ।” ল্যাজ-কাট মায়ের কথা গ্রাহ করলে না"। কন্যার বাড়ী খুজে বার করতে চ’লে গেল। খুঁজে খুজে ল্যাজকাটা ত কন্যার বাড়ী বার করলে। দেকে কি না তার বোন দেয়ালে সাতটা নাগের ছবি একে আরতি করছে। পঞ্চ প্রদীপ ঘুরিয়ে কন্যা গানের স্বরে বলছে— ‘সাত সাত ভাই আমার, ল্যাজ-কাটা সেরা সবার।’ ল্যাজকাট। লজ্জিত হয়ে কন্যার কাছে গিয়ে বললে“দিদিমণি, আজ নাগ-পঞ্চমীতে তোমাকে দেখতে এসেছি ।” কন্তু মহা খুলী। তাকে খেতে দুধ দিলে,ফুল দিয়ে তাকে সাজালে, প্রদীপ ঘুরিয়ে আরতি করলে—গড় হ’য়ে প্রণাম করলে । ল্যাজকাট মহা খুসী। ‘মায়ের কাছে গিয়ে বলতে হবে, কি আদর আমি বোনের কাছ থেকে পেয়েছি।” হাজার হ’লেও, ছেলেমানুষ, দুষ্টবুদ্ধি যায় না। পথে দেখতে পেলে একটা ইদুর । অম্নি এক ছোবল মেরে মুখে রক্ত মেখে নিলে মাকে ভয় দেখাতে হবে t