পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

វៀហ្ស៊ូ இடு W幅巫器ーエ కెవ్లో ' - সম্পাদকির দায় বিপদ দেশে যখন কোন সঙ্কট অবস্থ। উপস্থিত উহার মাথাল লোকেরা চপ করিয়া থাকিলেও কেহ কিছু বলিতে পারে না । তাহারা অন্ততঃ মনে মনেও বলিতে পারেন, “আমাদের কিছু ব’লতে কি দায় পড়েছে, মশায় ?” মাথাল লোকের নানা শ্রেণীর । কেহ কেহ রাজনৈতিক নেতা, কেহ কেহ বা প্রতিভ, মনস্বিত, বা জ্ঞানরাজ্যে কৃতিত্বের জন্য কীৰ্ত্তিমান । দেশের সঙ্কট অবস্থায় ইহার সঙ্কট হইতে উদ্ধারের পরামর্শ উপদেশ দিতে বাধ্য নহেন । এবং বাস্তবিক অনেক সময় আশুফলপ্রদ কোন পরামর্শ উপদেশাদি দেওয়াও হয়ত অসম্ভব বা দুঃসাধ্য। কিন্তু বেচার পেশাদার সম্পাদকের এই সকল সময়ে চুপ করিয়া থাকিতে পারে না । তাহারা পরামর্শ ও উপদেশ দিতে, অন্ততঃ নিজের ছাড়া অন্য সবাইকে দোষ দিতে ও তিরস্কার করিতে, বাধ্য । সকলের চেয়ে বিপন্ন ও দায়গ্ৰস্ত দৈনিক কাগজের সম্পাদকের । দুপর রাত্রে বা শেষ রাত্রেও একটা দাঙ্গা-হাঙ্গম ঘটিলে যদি প্রাতঃকালেই কোন দৈনিকে একটা বিজ্ঞজনোচিত মন্তব্যতিরস্কারাদি না থাকে, তাহা ইষ্টলেও লোকে বলিতে পারে, সম্পাদক ওয়াকিফ-হাল নহে, কিম্বা ভীরু ; কিম্বা অন্য কিছু বদনাম রটাও আশ্চয্যের বিসয় হইবে না । সাপ্তাহিক কাগজের সম্পাদকদের দায় ও বিপদ কিছু কম । তার চেয়ে কম সেই সব মাসিক কাগজের সম্পাদকদের যাহারা সমসাময়িক ঘটনা ও অবস্থা সম্বন্ধে কিছু লেখে । সৰ্ব্বাপেক্ষ নিরাপদ অবস্থা সেই সকল মাসিকপত্রসম্পাদকদিগের যাহাঁদের কাগজ বংসরের যে-কোন মাসে ও তারিখে ছাপা হইলেও নূতন বলিয়া দাবী করিতে পারে । হয়, তখন ধৰ্ম্মপ্রবর্তকের দাঙ্গা-হাঙ্গামা সম্বন্ধে কি বলিতেন পৃথিবীর সকল প্রধান ধৰ্ম্মের লোক ভারতবর্ষে দেখিতে পাওয়া যায়। তাহার মধ্যে “ধৰ্ম্মবিষয়ক’ দাঙ্গাহাঙ্গামা প্রধানতঃ হিন্দুমুসলমানের মধ্যেই হয়। অন্য ধৰ্ম্মের লোকদের সহিত যে একেবারেই হয় না, তাহা নহে । শিখদের সহিত হয় । গত এপ্রিল মাসে মান্দ্রাজ প্রেসিডেন্সীতে এক জায়গায় পৃষ্টিয়ানদের রথযাত্র। উপলক্ষেও খৃষ্টিয়ানে মুসলমানে মারামারি হইয়াছিল। হিন্দুতে হিন্দুতে মুসলমানে মুসলমানে দাঙ্গ মারামারিও “ধৰ্ম্ম” লইয়া হইয়া থাকে। “ধৰ্ম্ম” লইয়া যখন মারা মারি হয়, তখন স্বভাবতই মনে এই জিজ্ঞাসার উদয় হয়, যে, প্রত্যেক সম্প্রদায়ের প্রথম ধৰ্ম্মোপদেষ্টাগণ এখন জীবিত থাকিলে কি বলিতেন । বৈদিক ঋষিগণ, উপনিষদের ঋষিগণ এখন বাচিয়া থাকিলে কি বলিতেন, কি পরামর্শ দিতেন ? যে ব্যাসদেব মহাভারতের এত বড় যুদ্ধের বৃত্তাস্ত লিখিয়া গিয়াছেন বলিয়া হিন্দুর বিশ্বাস করেন, তিনি এখন বাচিয়া থাকিলে কি বলিতেন ? লঙ্কাকাণ্ডের রচয়িত বাল্মীকি জীবিত থাকিলে কি বলিতেন ? অহিংসাবাদী জৈনদিগের তীর্থঙ্কর মহাবীর কি বলিতেন ? বুদ্ধদেবের মত, পরামর্শ ও উপদেশ কি হইত ? যিশুখৃষ্টের মুখ হইতে কি বাণী নিঃস্থত হইত ? অধিকাংশস্থলে যে ইসলাম ধৰ্ম্মের সম্মান রক্ষার জন্য অনেক মুসলমান দৈহিক বল ও অস্ত্রবল প্রয়োগ করিয়া থাকেন, তাহীদের ধৰ্ম্মপ্রবর্তক মহম্মদ জীবিত থাকিলে তিনিই বা কি বলিতেন ? এরূপ কৌতুহল সম্পূর্ণ নিস্ফল তাহ সহজেই বুঝা যায়। কিন্তু এই সকল ধৰ্ম্মোপদেষ্টাদের উপদেশ হইতে যাহা অকুমান করিতে পারা যায়, তাহাতে মনে হয়, ভিন্নধৰ্ম্মাবলম্বীকে কাপুরুষোচিত অতর্কিত হত্য করার সমর্থন কেহই করিতেন না, চোরের মত ভিন্নধৰ্ম্মাবলম্বীর ধৰ্ম্মমন্দির নষ্ট বা অপবিত্র করার সমর্থন কেহ করিতেন না, এবং অনেক মুসলমান ঘেরূপ কারণে এখন দাঙ্গায় প্রবৃত্ত হন, তাহার সমথন স্বয়ং মহম্মদ করিতেন না, অন্য ধৰ্ম্মোপদেষ্টারাও করিতেন না । এই অনুমানের জন্য আমাদের সামান্য জ্ঞান ও প্রভূত অজ্ঞত দায়ী। র্যাহার। কোন-না-কোন ধৰ্ম্ম সম্বন্ধে বিশেষজ্ঞ, তাহাদের অন্যরূপ অকুমান করিবার অধিকারে হস্তক্ষেপ করিবার ক্ষমতা বা ইচ্ছা আমাদের কোনটিই নাই ।