পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] ক’রে হোক চালিয়ে নেৰ। ভাবছিলাম অন্য কথা। গেীরীর জন্য তোমায়ু নানান অস্ববিধায় পড়তে হতে পারে। এসময় সব জিনিষ আগের মতো যদি না চালাই, তাহ’লে গৌরী শিশু হ’লেও বুঝবে, বুঝে আঘাত পাবে। এমন একটা আনন্দোৎসবের মাঝখানে তাকে এমন আঘাত দেওয়া বড় কঠিন হবে, নিষ্ঠুরও হবে। কিন্তু যদি যেমন আছে তেমনি চলি, তবে বিবাহে বাধা পড়তে মেয়ে-মহলের কথায়-বাৰ্ত্তীয় গৌরীকে নিয়েও গোল বাধ বে। সুতরাং এট। ভাব বার বিষয় ।” এই ঢাকাঢাকি চাপাচাপি ব্যাপার আনন্দের দিনে হরিসাধনের আর ভাল লাগিতে ছিল না। র্তাহার অনিন্দ-উচ্ছ্বাস মাঝপথে বাধা পাইয়া তাহার সকল আয়োজন আড়ম্বরের সরসতা যে নষ্ট করিয়া দিবে, তাহা তিনি স্পষ্ট বুঝিতে পারিতেছিলেন। এখন সুযোগ দেপিয়া হরিসাধন বলিলেন, “আপনি যেমন পরিস্কারভাবে আগাগোড়। সব বুঝছেন, তেমন আর অন্তে কি বুঝবে ? দেখতেই ত পাচ্ছেন যে পথেই যাওয়া যাক না কেন গে্রীমাকে আমরা শেষ পর্য্যন্ত আঘাতের হাত থেকে বচিাতে পারব না। কাজেই পরের হাতের আঘাত থেকে তাকে বাচাবার জন্যে এ নিষ্ঠর কাজটা যথাসাধ্য মোলায়েম করে আমাদেরই ক’রে রাখতে হবে । দুৰ্ব্বল মনকে শক্ত করতে হবে, দেরী ক’রে কোনো লাভ নেই। ভগবান যে দুঃথ দিয়েছেন, মানুষ তা কি রোধ করতে পারে ?” হরিকেশব যেন আতঙ্কে শিহরিয়া উঠিলেন, “না, না, সে হতে পারে না। শেষ পর্য্যস্ত ঠেকাতে পারব না জানি, কিন্তু বেদন দেবার বয়সের ত একট। সীমা আছে । সে বয়স তার আগে আস্থক, এই শিশু বয়সটা তাকে আমায় আগলে রাখতেই হবে।” হরিসাধন হতাশ হইয়া বলিলেন, “কিন্তু ইতিমধ্যে যদি একটা গণ্ডগোল বেধে যায় ?” হরিকেশব বলিলেন, “তার জন্তে তুমি ভেবো না । আমি তার ব্যবস্থা করব।” 够 হরিসাধন খুব যে নিশ্চিন্ত হইলেন তাহ বলা যায় না । নিজের মেয়ের ভাবনায় দাদা যে র্তাহার মেয়েটির পারে, Ծf|ՀօԱմ, կ* কথায় মোটে আমলই দিতেছেন না ইহাতে র্তাহার অভিমান হইল। বিধবা মেয়ের কপালে দুঃখ ত আছেই তার জন্যে অপরের সুখের পথে কি কাটা হওয়া উচিত ? কিন্তু এমন বিষয়ে ত আর জেদ করা চলে না । বিশেষত তিনি যখন গৌরীর জন্য কিছুই করেন নাই, করিবেনও না ; কিন্তু হরিকেশবকে ময়নার জন্য চিরকাল ত করিতে হইয়াছেই, আজও যথেষ্ট পরিমাণেই হইবে, এই বিবাহ ব্যাপারে। এক বড়ঘরের সহিত কুটুম্বিতা করিবার সাহস সাধনের ছিল না। অগত্যা তাহাকে চুপ করিয়াই থাকিতে হইল । ( \v ) হরিসাধন যা বলিয়ছিলেন তাহাই হইল ; গণ্ডগোল সত্য সত্যই বাধিল । লোকজনের আনাগোনা ত ক্রমাগতই চলিতেছে । তাহার উপর ছোট বেীএর মামাবাড়ী ছিল দুইবাড়ীর মধ্যবৰ্ত্তী। স্বষ্টিধরের শ্যালিকার দেবর ছিলেন এই বাড়ীর কৰ্ত্ত । সুতরাং পল্লবিত সুরঞ্জিত নানা গল্পের আমদানী রপ্তানী এই বাড়ীর সাহায্যে দুই কুটুম্ব বাড়ীতে বেশ যাওয়া আসা করিত। তাহাতে একবাড়ীর লোকে ভয়ে কাটা হইয়। উঠিত, আর এক বাড়ীর লোক রাগিয়া জলিয়া মরিত । মহীধরের অন্তঃপুরে খবর পৌছিল যে বিধবা মেয়েকে হরিকেশব সধবা বেশেত রাখিয়াছেনই তাহার বৈধব্যের খবর পর্য্যন্ত তাহাকে জানিতে দেন নাই ; উপরন্তু বাছাদুরি দেখাইবার জন্য তাহাকে দিয়া যত অনাচার করাইতেছেন। অন্তঃপুরে রাগ ও বিদ্বেযের একটা ঝড় বহিয়া গেল। এই স্পৰ্দ্ধার একটা প্রতিবিধান করিবার জন্য সেখানে এক মন্ত্রণ সভা জাকিয়া বসিল । ক্ষমতায় কুলাকৃ. বা ন কুলাকু মুখে “ধর কার্টু” করিতে কেহ ছাড়িল না। নুতন বরের মাস বলিলেন, "মাগো মা, বিধবা কি আর জগতে কেউ হয়নি ! ম৷ বাপের অমন সোহাগের মুখে ঝাট। এইত আমরাই কচি বয়সে একটি মাত্র ছেলে কোলে করে বিধব হয়েছি, সব সাধ আহলাদই বাকি থেকে গেছে। তা বলে কি রোজ হবিষ্যি করছি না,