পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

eয় সংখ্যn ] বিবিধ প্রসঙ্গ—ভারতে দেশী হিন্দু রাজ্য ও মুসলমান রাজ্য ¢8ማል ক্ষমতা শ্ৰীযুক্ত স্বরেন্দ্রনাথ মল্লিকের আছে ; ইচ্ছাও আছে বলিয়া অকুমান না করিবার কারণ নাই। এখন ফলেন পরিচয়তে। তাহার পরিশ্রমের সাফল্য কামনা করি । সপ্র-নেহরু দাঙ্গণদমন-ইঙ্গিত । কিরূপে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাহাঙ্গাম। নিবারণ করা যায়, পণ্ডিত তেজবাহাদুর সপ্র তাহার একট। সঙ্কেত বলিয়া দিয়াছেন, এবং তাহার বৈবাহিক পণ্ডিত মোতীলাল নেহরু তাহার উপর টেক্কা দিয়া তার চেয়েও সরেস সঙ্কেত বলিয়া দিয়াছেন । সপ্র সাহেবের সঙ্কেত এই, যে, যেখানে দাঙ্গাহাঙ্গামা হইবে, তথাকার লোকদিগকে ব্যবস্থাপক সভার সভ্য হইবার ও নিৰ্ব্বাচন করিবার অধিকার হইতে বঞ্চিত করিতে হইবে । নেহরু মহাশয় বলেন, তাহারা যেন কোন সৰ্বকারী সম্মান ও চাকরী না পায় । উভয় প্রস্তাবই অসঙ্গত মনে হইতেছে। যাহার দাঙ্গাহাঙ্গামা করে, তাহারা সাধারণতঃ সেই সেই শ্রেণীর লোক নহে ব্যবস্থাপক সভার সভ্য ও নিৰ্ব্বাচকের যে-ঘে শ্রেণীর অন্তর্গত,—যদিও শেষোক্ত রকমের ২৪ জন লোক পরোক্ষভাবে দাঙ্গণহাঙ্গণমায় লিপ্ত থাকিতে পারে। সুতরাং একের দোষে অন্তের, কিম্বা কয়েক জনের দোষে অন্য অনেকের শাস্তি হওয়া উচিত নহে । দাঙ্গাহাঙ্গামাকারীরা সভ্য হইবার বা নিৰ্ব্বাচন করিবার অধিকারকে মূল্যবান মনে করে, এমন মনে করিবার কোন কারণ নাই। সৰ্বকারী উপাধি ও চাকরী এই শ্রেণীর লোকরা সচরাচর পায় না ; সুতরাং ঐ ঐ বিষয়ে তাহদের অধিকার লোপ করিলে তাহা একটি ক্ষতি বলিয় তাহারা মনে করিবে না । অতএব, বৈবাহিকদ্বয়ের প্রস্তাব কার্য্যে পরিণত করিলেও তদ্বারা দাঙ্গ নিবারিত হইবে না । যাহার কৌন্সিলের সভ্য ও সভ্যনিৰ্ব্বাচক হয়, তাহারা সাধারণতঃ দাঙ্গার বিরোধী এবং দাঙ্গ নিবারণ ও দমনের চেষ্টা তাহারা করিয়া থাকে। তৎসত্ত্বেও তাহাদের অধিকার লোপ করা অবিচারের চূড়ান্ত হইবে। কলিকাতায় সম্প্রতি যে দাঙ্গাহাঙ্গামা হইয়াছে, এবং বঙ্গেয় সৰ্ব্বত্র যে সাম্প্রদায়িক অশান্তি চলিতেছে, তাহার পরিচালকের বুদ্ধিমান ও শিক্ষিত শ্রেণীর লোক, অনেকে এই অনুমান করেন। কিন্তু কোন এক সম্প্রদায়ের এই লোকগুলার দোষে অন্য সব লোকের শাস্তি হওয়া কি উচিত ? আর-একটা অনিষ্টের আশঙ্ক বোধ হয় পণ্ডিতদ্বয় করেন নাই। যদি নেহরু মহাশয়ের বিরোধীরা তাহার جان سیستم هاه কৌন্সিল প্রবেশের সম্ভাবন পর্য্যন্ত নষ্ট করিতে চায়, তাহা হইলে তাহাদের পক্ষে এলাহাবাদে একটা দাঙ্গা মারামারি ঘটান কতক্ষণের কাজ ? প্রস্তাবগুলিকে বিপজ্জনক মনে করিবার ইহাও একটি কারণ। ডাক্তার কিচ লুর মত ও উদ্যম ডাক্তার সৈফুদিন কিচলু মুসলমানদের তাঞ্জিম প্রচেষ্টা দেশব্যাপী ও সুদৃঢ় করিবার জন্য বঙ্গে সফর করিতেছেন। তিনি বলেন, তাঞ্চিমের কোন রাজনৈতিক মন্দ উদ্দেশ্য নাই । শিক্ষ, নীতি, ধৰ্ম্ম প্রভৃতি বিষয়ে মুসলমান সমাজের উন্নতি করাই উহার উদ্দেশ্য । এরূপ উদ্দেশ্যের সহিত কাহার ও ঝগড়া থাকিতে পারে না । শিক্ষণ ধৰ্ম্ম নীতি প্রভৃতি বিষয়ে মুসলমানদের উন্নতি হইলে অন্যান্য সম্প্রদায়েরও পরোক্ষভাবে তাহার দ্বারা মঙ্গল ও সুবিধা হইবে। অবশ্য এরূপ উন্নতি হইলে তাহার পরোক্ষ প্রভাব দেশের রাজনীতি-ক্ষেত্রেও অনুভূত হইবে । আমরা সেরূপ প্রভাবের বিরোধী নহি । শিক্ষা ও চারিত্রিক গুণ দ্বারা মুসলমানের যত প্রভাবশালী হইতে পারেন, হউন। কেবলমাত্র সংখ্যাধিক্য বশতঃ সকল প্রকার ক্ষমতা, অধিকার ও সুবিধার সিংহের ভাগটা আলাদা করিয়া কোন সম্প্রদায় চাহিলে বা পাইলে আমরা তাহার সমর্থন করিতে পারি না । ডাঃ কিচ লু হিন্দু মহাসভার কার্য্যের, শুদ্ধি ও সংগঠনের বিরোধী নহেন। মহাসভার কার্য্যে এবং শুদ্ধি ও সংগঠনে যাহা হিতকর, তাহা তিনি উপলব্ধি করিয়া তাহার প্রশংসা করেন । বাংলা দেশে মহাসভার কাজ এবং শুদ্ধি ও সংগঠন বিশেষ কিছু হয় নাই, পঞ্চাবে হইয়াছে। এইজন্য এবিষয়ে পঞ্জাবী ডাক্তার সৈফুদিন কিচলুর মতই গ্রহণীয়, বাঙালী স্যার আবদার রহিমের শুদ্ধি ও সংগঠনের অবিমিশ্র নিন্দাবাদের কোন মূল্য নাই। ভারতে দেশী হিন্দু রাজ্য ও মুসলমান রাজ্য আমরা সকল সম্প্রদায়েরই অধিকার যথাসম্ভব অক্ষুন্ন রাখার পক্ষপাতী। কিন্তু ইহা মনে করি না, যে, প্রত্যেক সম্প্রদায়ের বাহ ক্রিয়াকলাপ ও বাহ ধৰ্ম্মাহুষ্ঠান এবং আচার পূর্ণ মাত্রায় অক্ষুণ্ণ থাকিলেই সেই সেই সম্প্রদায় উন্নতির চরম সীমায় উঠিবে। এই মতের সমর্থক দু একটা দৃষ্টান্ত দিতেছি। তোহার পূৰ্ব্বে, কোন-প্রকার অপক্ষপাতিত্বের ভাণ না করিয়া, দুএকটি কথা বলা আবশ্বক মনে করি । আমি ব্রাহ্মসমাজের লোক ; কিন্তু হিন্দুর দেবমন্দির ও মুসলমানের মসজিদ কোনটির সম্বন্ধেই আমার