পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

☾©o প্রঃ–কি রকম ? উঃ—আমি বিধবাদের কথা বিশেষ ভাবে বলছি। সধবীও অনেক আছে, আমাদের দেশে সকলেরই বিয়ে ইয়–অনেকে আছে, স্বামী পাগল, অনেকের স্বামী রেঞ্জগার করে না, ছেলেপুলে আছে। আমার কাছে ধার সাহায্য চাইতে এসেছিল তাদের কাছ থেকে যা জানি তা বলছি। একজন সাহায্যের জন্ত এসেছিল তার স্বামী পাগল, ২টি সস্তান এখন আছে ভাইয়ের কাছে ; ছেলেপিলে নিয়ে কতদিন তাদের কাছে থাকৃতে পারে ? স্ববিধ হয় না। বল্লে—তার জন্ত যেন একট-কিছু বন্দোবস্ত করে দিই। তথনে আমাদের বিধবা-অtশ্রম প্রতিষ্ঠিত হয় নি। আমি বলেছিলুম নালিং (রোগীসেবা ) শিখতে। সেখানে রাত্রিতে থাকৃতে হয়, স্বামীকে দেখবে কে ? সারাদিন থাকলে চলে এমন কোন কিছু করতে পারে কি না ? তাতে ভেবেছিলুম-ডাক্তার রেথে সে-রকম একটা ক্লাস খোলা যায় কি না । তার যোগাড় করেছিলুম, কিন্তু গাড়ীর বন্দোবস্ত করতে পারিনি বলে ছাড়তে হল । বাঙ্গালী মেয়ে হেঁটে কেহ যায় না। লাহোরে সুবিধ দেখ লুম। সেখানে পৰ্ব থাকলেও মেয়ের হেঁটে যায় । মুসলমানের ভিতর পর্দ আছে, আমাদের মহ নয়, ঘরের ভিতর পর্দ, বাইরে নয় । লাহোরে কর্পোরেশনের একটি মস্ত স্কুল আছে। দেখলুম ১০০টি মেয়ে বসে নানারকম শিল্প শিখছে । চুমকির কাজ, দরজির সেলাই, মোজা বোন —সব শিথছে । কর্পোরেশন থেকে লোক রেখে শিখাচ্ছে । কিছু মাইন দিতে হয় না। কলিকাতায় মেয়েদের জন্য কোন কাজ করতে আরম্ভ করলেই গাড়ী । সেজন্ত এটি হল না । গাড়ীর টাকা কোথায় পাই ? অসুবিধ। নইলে সব বন্দোবস্ত করেছিলুম । প্রঃ --আপনি বল্লেন—স্বামী পাগল । উঃ—ষ্ঠী, পাগল । স্বামী-পরিত্যক্তাও এত আছে, নিজে না দেখলে কেউ ভাব তে পারে না । বিয়ে করে স্ত্রীকে পরিত্যাগ করেছে । এইরকম অবস্থার মেয়ে কত আসছে । প্রঃ--স্বামী বেঁচে আছে ? উঃ—মপ্লে' গেছে এমন ত অীর পাইনি। প্রায়ই বিয়ে করে’ নিরদেশ হয়ে গেছে । কেহব। আবীর ২।৩টি বিয়ে করে” আগের স্ত্রীকে ত্যাগ করেছে। বিধবা ছাড়া এই শ্রেণীর সধবাদের জন্যও আমাদের বন্দোবস্ত ছিল । প্রঃ—বিধবাদের আর্থিক দুরবস্থা আপনার নজরে পড়েছে কি ? উঃ–এই আর্থিক দুৰ্গতির জন্যও অনেকে মুসলমান হয়ে গেছে। পল্লীগ্রামে এর সংখ্য কত বেশী আমরা ভাবি না। আমি নিজেও ভাব তুম না, কাজের সংস্পর্শে না আসলে এ জ্ঞান হত না । দেখেছি বিধবার শ্বশুর-বাড়ীর কেহ সাহায্য করে না, পড়ে রয়েছে, বীপের বাড়ীরও কেহ খোজ করে না। প্রতিবেশী আছে মুসলমান, সে এসে দেথল শুনল, অবস্থ খারাপ হলে অর্থ দিয়ে সাহায্য করে । ছোট ছেলেপিলে আছে, মেয়ে-মানুষ একল রয়েছে, ছেলে মানুষ করতে হবে সে ভাবনা রয়েছে, যে যত্ন দেখায় তার কাছেই যায়। এই ভাবে অনেকে মুসলমান হয়ে গেছে। আমাদের বিধবা-৩tশ্রমে এই যে ২০২২টি বিধবা রয়েছে, সকলের অবস্থাই এইরকম খারাপ। আমাদের সমস্ত খরচ নির্বাহ করতে হয়। জিজ্ঞাস করতে পারেন—এখন কেন এমন হয়, আগে কেন হত না। আগে যে খরচে চলত এখন তার চাইতে খরচ অনেক বেড়ে গেছে । আগে লোকে পাচ জনকে সাহায্য করতে পারত, এখন পারে ন! ৷ প্রঃ-যৌথ পরিবার বলে যা কিছু আছে, তাতে সাহায্য-হয় কতটা ? উঃ-ইচ্ছা থাকলেও তা সম্ভব হয় না, বিশেষতঃ বিধবাদের যদি প্রবাসী—আষাঢ়, ృలిలితి [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড ছেলেপুলে থাকে। আজকাল খরচ ডবলের বেশী হয়েছে। ধরুন যার ৪টি ছেলেপূলে আছে, তাদের স্কুলের খরচ, কলেজের খরচ, খাবার খরচ কত বেড়েছে। সে কি করে বোনের ছেলেমেয়েকে সাহায্য করবে ? আগে তা ছিল না। এথন বিধবাদের অবস্থা শোচনীয়। যাদের ছেলেপুলে আছে, এমন অনেক বিধবা আসে, যেন অর্থার্জন করে’ তাদের মানুষ করতে পারে। প্রঃ-তাহলে আপনি বলতে চান যে,—বিধবাদের ছেলে মেয়ে মানুষ করবার জন্তই দেশের ভিতর একটা আন্দোলন হওয়া দরকার। কেবল মাত্র বিধবার নয়, তাদের ছেলেমেয়েরও সাহায্য দরকার ? উঃ—ই, বলিবিধবা ত অনেক আছে, তা ছাড়া, যাদের ছেলেপিলে আছে তাদের ত কথাই নাই। আমাদের দেশে বাড়ী ছেড়ে আসূবর সাহস মেয়েদের কখনই ছিল না, কিন্তু এখন না ছেড়ে উপায় নাই । অধিকাংশই পূর্ববঙ্গ থেকে আসে। পশ্চিম বঙ্গের সমাজ ভয়ানক গোড় । এর কিছুতেই বাড়ী ছেড়ে অস্েিত চায় না, না খেয়ে মরূৰে তবু অসূবে না । তার শুনে সবাই আশ্চৰ্য্য হয়—এত মেয়ে বাড়ী ছেড়ে এখানে এসেছে । প্রঃ—-এর কোথা থেকে এসেছে ? উঃ—বিধব-আশ্রমে যার অাছে তাদের অধিকাংশই কলকাতার যাইরের অম্বাস্থ্য জেল থেকে এসেছে । কলকাতার যে ২৪টি আছে তার সধব, স্বামী-পরিত্যক্ত। প্রঃ–অধিকাংশ মধ্যবিত্ত, গোড় হিন্দু, ব্রাহ্ম নাই ? উঃ—ব্রাহ্মদের এখানে নিই না । তাদের দরকার হয় না । আগেই অর্থকরী একটা কিছু শেখে, এটা খালি সনাতনীদের জন্য। প্রঃ—আপনি বলেছেন, ব্রাহ্মদের মেয়ের এমন কিছু শেথে যাতে তার কিছু রোজগার করতে পারে। কি উপায়ে রোজগার করে ? উঃ—বাড়ীতে গিয়ে মেয়েদের শিখায়, শিক্ষয়িত্রীর কাজ করে, ছেলে-মেয়েদের অভিভাবিকার কাজ করে । আজকাল দোকান পয্যন্ত করতে আরম্ভ করেছে। প্রঃ–কিসের দোকান ? উ—সব জিনিষের—যাকে মনিহারী দোকান বলে। যে মেয়েটির কথা বলছি সেটি খুব করিৎকৰ্ম্ম । এই মেয়েটি স্বামী-পরিত্যক্ত । ব্ৰহ্ম সমাজের মেয়ে, বিয়ে করেছিল একজন পাঞ্জাবীকে—আর্য্য সমাজের আইন অনুসারে । প্রঃ–আচ্ছ, যদি সমাজের আরও নিম্ন স্তরে যাই, তাদের আর্থিক অবস্থা কি রকম মনে করেন ? উঃ—তাদের অবস্থাও খারাপ । প্রত্যেক সমাজের অসহায় বিধবা ও অন্যান্য অসহায় লোকদের রক্ষণাবেক্ষণ করা সেই সমাজের কৰ্ত্তব্য। এইজন্য, কোনো কারণে অসহায় হিন্দুবিধবাদের স্বধৰ্ম্ম ত্যাগের সম্ভাবনা না থাকিলেও তাহাদের অবস্থার উন্নতির চেষ্টা করা উচিত। কিন্তু যখন দেখা যাইতেছে, যে, নানা কারণে প্রতিকুল অবস্থা বশতঃ অনেক হিন্দু-বিধবা সমাজ ত্যাগ করিতে বাধ্য হন, তখন এদিকে হিন্দুসমাজের বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া আবশ্বক হইয়াছে। যাহার। হিন্দুসমাজ ত্যাগ করিয়৷ খৃষ্টয়ান বা মুসলমান হইয়া গিয়াছে, তাহাদিগকে আবার হিন্দু করিবার চেষ্টা আজকাল হইতেছে । অন্তধৰ্ম্মাবলম্বীকে নিজ ধৰ্ম্মে তারা