পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] আনিবার চেষ্টা করিবার অধিকার সকলেরই আছে । সুতরাং ইহাতে কাহারও আপত্তি হওয়া উচিত নহে। কিন্তু যেমন অহিন্দুকে হিন্দু করিবার চেষ্ট হইতেছে, তেমনি যাহাতে কেহ আর্থিক বা সামাজিক কারণে হিন্দুসমাজ ত্যাগ না করে, তাহার চেষ্টা করাও উচিত । লেডী বস্থ যেরূপ কারণে হিন্দুবিধবাদের মুসলমান হইয়া যাইবার কথা বলিয়াছেন, তাহা আমাদের জানা ছিল না। সম্ভবতঃ অন্য অনেকেরও জানা নাই। কিন্তু জানিবার পর হিন্দুসমাজ ও হিন্দুসভা নিজের কৰ্ত্তব্য করিবেন, আশা করা যাইতে পারে। নিজ সম্প্রদায়ের লোকসংখ্যা বৃদ্ধির দিকে মুসলমানদের বিশেষ দৃষ্টি আছে। পূর্ববঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি মুসলমানপ্রধান। মধ্যবঙ্গেও মুসলমানের সংখ্যা বড় কম নয়। এইসকল অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ, জলপ্লাবন, ঝটিকাদি কারণে লোকের অন্নকষ্ট হইলে সাহায্যদান দ্বারা ধৰ্ম্মনির্বিশেষে বিপন্ন লোকদের প্রাণরক্ষা করেন প্রধানতঃ হিন্দুরা ; এবিষয়ে মুসলমানরা মুসলমানদের প্রতি কৰ্ত্তব্য সামান্তই করেন । কিন্তু যদি কোন অভাবগ্রস্ত হিন্দুবিধবাকে সাহায্য করিয়া মুসলমান করিবার সম্ভাবনা থাকে, তখন মুসলমানরা মুক্তহস্ত হন। হিন্দুদের অহঙ্কার আছে, যে, মুসলমানদের চেয়ে তাহদের বুদ্ধি বেশী । কিন্তু লোকসংখ্যা বৃদ্ধির উপায় অবলম্বন সম্বন্ধে মুসলমানদিগকেই বেশী বুদ্ধিমান বলিয়া মনে হয়। বিধবাদের প্রতি এবং নিম্নশ্রেণীর লোকদেৱ প্রতি যেরূপ ব্যবহার করিলে তাহাদের খৃষ্টিয়ান বা মুসলমান হইবার কোন কারণ থাকে না, সেরূপ ব্যবহার করিলে হিন্দুদের বুদ্ধিমত্তা প্রমাণিত হইবে ; নতুবা নহে । পল্লীগ্রামে জলকষ্ট ও স্বাবলম্বন বহুসংখ্যক পল্লীগ্রামের লোকদের জলকষ্টের কথা প্রতি বৎসরই খবরের কাগজে লিখিত হয়, কিন্তু তাহার যথেষ্ট প্রতিকার হয় না। এবিষয়ে গবন্মেণ্টের, ডিষ্ট্রিক্ট ও লোক্যাল বোর্ড সকলের এবং গ্রাম্য ইউনিয়নগুলির কৰ্ত্তব্য আছে। কিন্তু গ্রামের লোকেরাও স্বাবলম্বন দ্বারা নিজেদের জলকষ্ট কতকটা দূর করিতে পারেন। যত কষ্ট হয়, তাহার অধিকাংশ স্ত্রীলোকদিগকে সহ করিতে হয় বলিয়াই গ্রামের লোকদের এবিষয়ে বিশেষ সচেষ্ট হওয়া উচিত। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই কারণেই ইহার বিপরীত ভাবই অনেক জায়গায় লক্ষিত হয়। পুরাতন পুকুরের বহুসংখ্যক অংশীদারদের মধ্যে মতভেদ, বিবিধ প্রসঙ্গ—-বঙ্গে শিক্ষার বিস্তার 6:6:3 গ্রাম্য দলাদলি, এবং প্রতিবেশীদের মধ্যে ঈর্য্যাও অনেক সময় জলকষ্ট দূর না-হওয়ার কারণ। আইন অনুসারে বহু মালিকের পুকুর খনন করাইবার বন্দোবস্ত গ্রামবাসীরা সচেষ্ট হইলেই করাইতে পারেন। এরূপ বন্দোবস্তে মালিকদের স্বত্বলোপও হয় না । আমরা এরূপ দৃষ্টান্ত জানি, যে, বাহিরের কোন সদাশয় লোকের টাকায় গ্রামে কুণ খনিত হইয়াছে, কিন্তু তাহার পর টাকা ফুরাইয়া যাওয়ায় গ্রামের লোকেরা চাদ করিয়া বাকী সামান্ত কাজটুকু সম্পন্ন করান নাই । অথচ কুপ পাকা ও স্থায়ী হইলে তাহারাই সকলে উপকৃত হইবেন । ইহা বড় দুঃখের বিষয় । “অদ্ভুত চুরি।” গত ১৩৩২ সালের চৈত্র মাসের প্রবাসীতে “জৈন বাগদেবী” শীর্ষক একটি সচিত্র প্রবন্ধ বাহির হয়। উহা বিমলকান্তি মুখোপাধ্যায় কর্তৃক লিখিত বলিয়া প্রবন্ধের নামের নীচে লেখা ছিল । উহা প্রকাশিত হইবার পর অধ্যাপক শ্ৰীযুক্ত বৃন্দাবনচন্দ্র ভট্টাচাৰ্য্য, এম্-এ আমাদিগকে লেখেন, যে, উহ। তাহার লেখা, এবং তিনি উহা ফোটোগ্রাফগুলি সমেত “মানসী ও মৰ্ম্মবাণী"তে ছাপিবার জন্য পাঠাইয়াছিলেন । ইহা আমাদের জানিবার কোন সম্ভাবন ছিল না । বৈশাখের “মানসী ও মৰ্ম্মবাণী’তে উহার সম্পাদক সমুদয় রহস্য ভেদ করিয়া দিয়াছেন। তাহাতে এইরূপ লিখিত হইয়াছে, যে, বিমলকান্তি-বাবু ঐ মাসিকের আফিসে বন্ধুভাবে যাতায়াত করিতেন, ও তিনি এই প্রবন্ধটি আত্মসাৎ করিয়া নিজের বলিয়া চালাইয়াছেন, এবং ইহাই তাহার এইরূপ একমাত্র কীৰ্ত্তি নহে । এরূপ ব্যবহার সাতিশয় নিন্দনীয় । প্রবাসীর গ্রাহক ও ক্রেতাগণকে চৈত্র মাসের প্রবাসীর ৭৫৬ পৃষ্ঠায় এবং মাসিক ও ষান্মাসিক স্বচীতে বিমলকান্তি মুখোপাধ্যায়ের নাম কাটিয়া দিয়া তাহার জায়গায় অধ্যাপক শ্ৰী বৃন্দাবনচন্দ্র ভট্টাচাৰ্য্য, এম্-এর নাম লিখিয়া লইতে অনুরোধ করিতেছি । বঙ্গে শিক্ষার বিস্তার ১৯২৪-২৫ সালে বঙ্গের সকল শ্রেণীর শিক্ষালয়-সকলে ১৭,৭৫,৪৭২ জন ছাত্র ও ৩,৮০,৪৭০ জন ছাত্রী পড়িত । স্ত্রীশিক্ষার বিস্তার যে কত কম, ইহা হইতে তাহা বুঝা