পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] নবযুগের অর্থনৈতিক সমস্যা \ኃእዋስ কাহার ব্যথিত দীর্ঘশ্বাস । ছাদের টালির উপর বৃষ্টিপাতের এসো—দ্যাখে আমার আকাশ-বাসরে কেমন নিরিবিলি, শক ললিত কান পাতিয়া শুনিতে লাগিল—যেন কাহার কই তুমি এলে না ? বেশ ।” অবিশ্রাম পদশব্দ । ললিত ব্যাকুল-আগ্রহে উঠিয়া সে আবার নিঝুম স্তব্ধ হইয়া পড়িল। সে-স্তব্ধতা বসিতে গিয়া সজ্ঞাশুন্য হইল । আর ভাঙিল না। চিরন্তন মানবের চিরন্তন ইতিহাস প্রলাপের ঘোরে সে বলিয়া উঠিল—“অশোক, এসো, সমাপ্ত হইল।

E_

নবযুগের অর্থনৈতিক সমস্ত। g ঐ ফণীন্দ্রকুমার সান্তলি সমাজবদ্ধ হ’য়ে মানুষ যখন তার সভ্যতাকে বিস্তার করা হয়েছে । কিন্তু যখন যে-জিনিষই ব্যবহার করা করবার চেষ্টা করছিল সে-সময় তার অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান-কল্পে সে খুজে বার করলে এমন একটা জিনিষ ধাতে তার ব্যবহার্য্য জিনিষপত্রের কেনা-বেচার একটা পরিমাপ ঠিক করা যায় এবং পরস্পর আদান-প্রদানের একটা মূল ভিত্তি গড়া সম্ভবপর হয়। এই জিনিযটাকে মানুষ “অৰ্থ” নামে অভিহিত করলে ; সেই সময় থেকে “অর্থ” নিয়ে মানুষের প্রয়োজনীয় দ্রব্য-সমূহের মূল্য নিৰ্দ্ধারণ করা আরম্ভ হ’ল। অবশ্য “অৰ্থ” বলতে বৰ্ত্তমানে আমর যা বুঝি “অর্থের” স্বরূপ চিরকালই ঠিক এরকম ছিল না । মহিষের সভ্যতা-বৃদ্ধির স্তরে স্তরে এর রূপ বদলে গেছে । আজ যে “অৰ্থ” বলতে আমরা “টাক আন পয়সা” বুঝতে পারি চিরকালই লোকে তা বুঝত না। সভ্যতা অনেকখানি এগিয়ে যাবার পর “মুদ্রার” প্রচলন আরম্ভ হয়েছে। বৰ্ত্তমানে আমরা সভ্যতার যে-স্তরে এসে পৌছেছি এবং এখন “কাগজের মুদ্রার” যে-ভাবে প্রচলন আরম্ভ ইয়েছে তাতে অনেক অর্থনীতিবিৎ মনে করেন ধে-কালে কোনও প্রকার “মুদ্রারই” প্রচলন প্রয়োজন হবে না ; শুধু “হাওলাতি” বন্দোবস্তে ( credit system ) কাজ চলবে। কিন্তু পূর্বেই বলেছি, “অর্থের” এ স্বরূপ প্রথম থেকে বা একবারেই দেখা দেয়নি। এমন এক সময় ছিল ধখন বন্য পশুর চামড়া বা লোম ছিল সে-সময়কার “অৰ্থ”। ক্রম গৃহ-পালিত পশু, শস্ত প্রভৃতি“অৰ্থ” ভাবে ব্যবহার হোকু না কেন তাকে অন্য সমস্ত পদার্থ থেকে আলাদা ক’রে একটা বিশেষরূপ দেওয়া হয়েছে ; এবং দ্রব্যাদির মূল্যের মাপকাঠি হিসাবে তাকে ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু সভ্যতার আদিম যুগে যখন মানুষ এই ‘অর্থের” আবিষ্কার কবৃতে পারেনি তখন সে তার জীবন যাপন কবুত কি ক’রে তা ভেবে দেখ দরকার। “অৰ্থ” ব’লে কিছু না থাকায় মানুষ তখন ব্যবহায্য দ্রব্যাদির পরস্পর বিনিময়ের দ্বারা তাদের আদান-প্রদান চালাত । চিরদিনই ব্যবহারিক দিক্ দিয়ে একটি মানুষের দুইটি পৃথকৃ সত্ত্ব দেখা যায় । মাচুর্য এক দিকে উৎপাদক ও আরএক দিকে ভোগী। প্রত্যেকেই তার শক্তি-সামর্থ্যাচুযায়ী কিছু না কিছু উৎপাদন করছে এবং তার জীবন-ধারণের জন্যে নানা জিনিষ ভোগ করছে । বৰ্ত্তমানে “অর্থের” সাহায্যে সে তার উৎপন্ন জিনিষ বিক্ৰী করে ও এই “অর্থের’ সাহাধ্যেই তার ভোগের জিনিষ কেনে । যখন “অর্থ” ব’লে কিছু ছিল না তখন সে তার উৎপন্ন জিনিষের বিনিময়ে তার ভোগের জিনিষ সংগ্রহ করত। এই ভাবে তখনকার দিনে মানুষের চলছিল বেশ ; কিন্তু মানুষের তখন কিনা বেড়ে চলবার সময় । তাই এই ভাবে চলতে সে পদে পদে বড় বাধা পেতে লাগল। তার প্রথম অসুবিধা হ’ল এই যে, তার প্রয়োজনের দ্রব্য এমন লোকের কাছে পাওয়া চাই যে-লোক , তার উৎপন্ন দ্রব্য গ্রহণ