পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] সিংহলে বাঙ্গালী কলাধ্যাপক শ্রীযুক্ত মণীন্দ্রভূষণ গুপ্ত ԳՆ Տ যুরোপীয়দের হুবহু নকল করিতে শিখিয়াছে, এবং বুঝিয়াছে যে, একজন ভদ্রলোকের (gentleman) হাট, কোট, টাই পরিধান করাই চাই । মণীন্দ্র-বাবু কলম্বোর প্রদর্শনীতে র্তাহার নিজের ও ছাত্রদের ছবি পাঠাইয়াছিলেন । কিন্তু ভারতে ও ভারতের বাহিরে তাহীদের চিত্র যেরূপ প্রশংসা ও স্থান লাভ করিয়াছে, এখানে তদ্রুপ হয় নাই । তিনি বলেন, এখানে আট, সঙ্গীত, সাহিত্য প্রভৃতির প্রতি লোকের বিশেষ interest নাই। সুতরাং এই অব - হ। ওয়ার মধ্যে থাকিয়া তিনি সিংহলীদের ভারতীয় চিত্রকলাকুরাগ কতদূর বৃদ্ধি করিতে এবং তাছার ভিতর দিয়া ভারতীয় culture এ দ্বীপবাসীদের কতটা অনুপ্রাণিত করিতে পরিবেন, তাহা ভবিষ্যতের গভে নিহিত । “মিউইণ্ডিয়৷” পত্র লিপিয়াছেন— “Babu P. K. Chatterjee is art, master in... Musalipatam and Babu M. B. (iupta in the Ananda ("ollege, Colouibo. They are helping to good clfect in the needed works of restoring and developing the truo Indian art instead of wasling time in shaddy imitation of foreign methods.” ( New India, 1st April, 1926.) তাৎপৰ্য্য—“বাবু প্রমোদকুমার চট্টোপাধ্যায় মছলিপত্তনের কলাধ্যাপক এবং বা মণীন্দ্রভূষণ গুপ্ত কলম্বের আনন্দ কলেজের কলধ্যাপক। উtহt? প্রকৃত ভারতশিল্পের পুনরাদ্ধার ও উন্নতির প্রয়োজনীয় কাঁধ্যে সকল সাহায্য কলিতেছেন ; বিদেশী প্রণালীর বাজে অনুকরণ করিয়া সময় নষ্ট ক{।তেছেন না।” মণীন্দ্র-বাবু সিংহলীদের উদ্বুদ্ধ করিবার জন্য কলা ও সাহিত্য এই উভয় ক্ষেত্রেই আত্মনিয়োগ করিয়াছেন ! তিনি আর্ট সম্বন্ধে মাসিক ও দৈনিক কাগজপত্রে ক্রমাগত প্রবন্ধ লিখিয়া তাঁহাদের মধ্যে এসকল বিষয়ে একটা অনুরাগ জাগাইয়। তুলিতে চেষ্টা করিতেছেন । got “The Librarian,” “Ananda Review” “The Ceylon Theosophical News,” “The Morning Leader” প্রভৃতি পত্রে তাহার প্রবন্ধাবলী প্রকাশিত &SCE “Buddhist Chronicle”g $ff: fsoশিল্প-নিদর্শন ও বাহির হইয়াছে । মণীন্দ্রবাবু লিখিয়াছেন—“ভারতবর্ষ যে র্তাহীদের ধৰ্ম্ম, - শিল্প, সাহিত্য, সভ্যত দান করেছে, তারা লে ভারতবর্যেরই লোক—সিংহলে এসে উপনিবেশ স্থাপন করেছেন, সে-কথা তার পরিষ্কার ভুলে গেছেন। আমাদের, বিশেষ ভাবে বাঙ্গালীদের কৰ্ত্তব্য, সে-সম্বন্ধ পুনরায় স্থাপন করা। কারণ, বাঙ্গালী রাজকুমার বিজয় সি হুই প্রথম লঙ্কাদ্বীপের সঙ্গে ভারতের যোগ স্থাপন করেন। লাইব্রেরিয়ান্‌ পত্রিকার সম্পাদক শ্ৰীযুক্ত বিজয়তুঙ্গ তার পত্রিকার ভিতর দিয়ে ভারতের সহিত যোগস্থাপন করতে চান। ‘লাইব্রেরিয়ান এধরণের একমাত্র মাসিক পত্রিকা । বাংলার যার সিংহলের সহিত যোগ রাখতে ইচ্ছুক, র্তাদের এই পত্রিকাকে প্রবন্ধাদি দিয়ে সাহায্য এবং উৎসাহিত করা উচিত। এখানে র্যার বয়স্ক তাদের কাছ থেকে কিছু আশা নেই। ছোট বালকের যারা এখনে তরুণ, তাদের ভিতর দিয়ে সিংহলের নতুন জীবনকে জাগিয়ে তুলতে হবে । একাজের পুরোহিত হবে বাঙ্গালী ।” গুপ্ত-মহাশয় সাত আট মাস পূৰ্ব্বে আমাদের এই পত্র লিথিয়াছেন। আজ তাহা এখানে উদ্ধত করিবার কালে সম্প্রতি “বঙ্গবাণীতে" অধ্যাপক বিনয়কুমার সরকার মহাশয় লিপিত “যৌবনের দিগ্বিজয়"প্রবন্ধের কথা মনে পড়িয়েছে। যৌবনের শক্তি লইয়। মণীন্দ্র-বাবু তাহার কৰ্ম্মক্ষেত্রে ঘেরূপ আশা ও উদেশ্য লইয়। তরুণ সিংহলকে জাগাইবাধ জন্য আপনাকে নিয়োগ করিয়াছেন, তাহাতে আমরা আশা করিতে পারি যে, যে-বীজ তিনি এক্ষণে বপন করিতেছেন, সময়ে তাহ অঙ্কুরিত হইবে এবং বৌদ্ধযুগের বাঙ্গালী বিজয় সিংহের রাজ্যে তিনি নব্য বঙ্গীয় কলা-শিল্পের “বিজয়কেতন উড়াইয়া” আসিয়া বঙ্গমাতার মুখ উজ্জল করিতে পরিবেন।

  • বঙ্গবাণী, আবাঢ়, ১৩৩৩ । ।