পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Qlye প্রবাসী - ভাদ্র, ১৩৩৩ [ २७* छां★, sथ थ● ইউনিভার্সিটাতে র্তার সহপাঠীদের নিকট আমাদের জন্য একখানি চিঠি লিখে দিলেন । রওনা হ’লাম ১২০ টায়। রোদ ও খিচুড়ী খাওয়ার জন্য তেষ্টায় অস্থির। মাইল দশ দূরে চৌপারণ থানায় নেমে কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিলাম। চৌপারণের কিছু পর থেকেই হাজারিবাগের জঙ্গল স্বরু হয়েছে। সাত আট মাইল জঙ্গলের মধ্য দিয়ে রাস্তাটি চ’লে গেছে । এই পথটুকু বেশীর ভাগই উৎরাই । কিন্তু রাস্তার অবস্থা বড় মন্দ ব’লে উৎরাইয়ের স্বথটুকু উপভোগ করা গেল न। । জঙ্গল খুব ঘন নয়। শাল পলাশ ও মহুয়া গাছই বেশী। জঙ্গলের সীমানায় একটা নদীর পুলের উপর এসে বসলাম । খানিক দূরে এক সাহেব মোটর সারাচ্ছে। আমরা নদীতে জল খেতে যাবার আয়োজন করছি এমন সময় সেই সাহেবের মেম ও তাদের মেয়ে এসে আমাদের সঙ্গে আলাপ সুরু করলে । এরা কুলটীতে থাকেন। মোটরে গয়া যাচ্ছেন। জঙ্গলে টায়ার ফেটে আটকে পড়েছেন। সাহেব টায়ার মেরামত করলে তবে যাওয়া হবে । আমাদের সঙ্গে অল্পক্ষণের মধ্যে বেশ আলাপ হ’য়ে গেল । প্রত্যেক জিনিস পত্র দেখাতে হ’ল । সাইকেলের সামনে বোর্ডে লেখা প্রোগ্রাম দেখে তারা খুব উৎসাহ প্রকাশ করলেন। ম্যাপ চেয়ে নিয়ে রাস্তা দেখলেন ও আমাদের অনেক লজেঞ্জু ও মুইট্‌স দিলেন। এখানে এসে জানতে পারলাম বাইনাকুলার গগলসূ ও রিং শুদ্ধ চাবি কোথায় পড়ে গেছে । বাইনাকুলার এর জন্য পরে বিশেষ অসুবিধ হয়েছিল। মাইল তিন চার পর থেকে গয়া জেলা আরম্ভ হ’ল । এখান থেকে সমান ও সুন্দর রাস্তা স্বরু হয়েছে । অনেক দিন পর সমতল রাস্তা পেয়ে আমরা মনের মুখে জোরে সাইকেল চালিয়ে বড়াচটীতে এসে পড়লাম । সন্ধ্যার ঠিক আগে ফন্তু নদীর ধারে এলাম। নদীর ওপরে পাথরের নীচু পুল। বর্ষার সময় পুলের ওপর দিয়ে জল যায়। পুলে কোন রেলিঙ নেই, কেবল মাঝে মাঝে এক ফুট উচু থাম। দূরে নদীর দু’পাশেই নীল পাহাড়ের সারি—মনে হয় যেন ফন্তু এক দিকের পাহাড় থেকে বেরিয়ে আর এক দিকের পাহাড়ের ভেতর দিয়ে চলে গেছে। বালীর চড়ার ওপর দিয়ে জলের শুধু একটি ক্ষীণ ধারা বয়ে যাচ্ছে। আর একটা ছোট পুলের পর ডান দিকে গয়া যাবার রাস্ত। ২০ মাইল । * সন্ধ্যার সময় সাইকেল আমাদের সেরঘাটীতে নামিয়ে দিলে। গ্রাগুট্রাঙ্ক রোড থেকে ডান দিকে একটু নী, জায়গায় সেরঘাট সহর। এখান থেকে ও গয়ায় যাবার রাস্ত আছে । এইখানেই খাবার জোগাড় করা হ’ল ! পাওয়া দাওয়ার পর ঠিক হ’ল আজ সমস্ত রাত্রিই চল। হ’বে । সেইজন্য ঘণ্ট। দুয়েক বিশ্রাম নিতে আমরা একট। কুয়ার ধারে আস্তান নিলাম। সেরঘাট থেকে ডানদিকে গয়া ও বাদিকে ডান্টনগঞ্জ যাবার রাস্ত আছে । আমরা র ওনা হ’ব এমন সময় থানা থেকে ডাক এল । মামুলি নাম ধাম দেওয়ার পর থানার দারোগা আমাদের রাত্রে চলার অভিপ্রায় শুনে পথের ধারে জঙ্গলে ভালুকের উপদ্রব আছে ব’লে নিরস্ত করতে চেষ্টা করলেন। কিন্তু হাজারিবাগ জেলার উচু নীচু রাস্তার জন্য এ ক'দিন আমাদের চলা বড়ই কম হচ্ছিল। আজকের সুন্দর সমান রাস্তা ও চাদনী রাতের আলো পেয়ে এ-সুযোগ ছাড়তে ইচ্ছা হ’ল না । সেইজন্য আমরা আর বাক্যব্যয় ন৷ ক’রে বেরিয়ে পড়লাম । মাইল দু’য়েক “ পর থেকে রাস্তা মেরামত হচ্ছিল । সেইজন্য মাঝে মাঝে হেঁটে যেতে হ’ল । ক্রমশঃ ভাল রাস্তায় এসে চলেছি। খুব জোরে ঘণ্টা বাজিয়ে যাচ্ছি, হঠাৎ পাশের গাছতলা থেকে এক বিকট চীৎকার শুনে আমরা হতভম্ব হ’য়ে ভাবলাম এ নিশ্চয়ই ভল্লুক ! টর্চ জেলে দেখি আমাদেরই মত হতভম্ব একটি লোক দাড়িয়ে আছে । ব্যাপারটা আর কিছু নয় বেচার চৌকিদার, পাহারা দিতে এসে ঘুমিয়ে পড়েছিল আমাদের চারজনের সাইকেলের ঘণ্টা শুনে চমকে চীৎকার ক’রে উঠেছে । ঘড়িতে দেখা গেল রাত ১ টা। আর দেরী না ক’রে সাইকেলে উঠলাম। মান জ্যোৎস্কার ভেতর দিয়ে দু’ধারে পাহাড় ও ঝোপঝাপ ছাড়া আর কিছু দেখা যাচ্ছে না। স্বমুখ থেকে একটা গরুর গাড়ী ধীর মন্থর গতিতে আসছিল ব’লে জোরে ঘণ্টা বাজাতে স্বরু করলাম। আলো, টুপি ও