পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

.৫ম সংখ্যা} মধ্যে একজন নিজের কাশ্মীর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা জানিয়ে দেখবার মতো জায়গার খোজ দিলে ও সকলে আমাদের কুতকার্য্যতা কামনা ক’রে বিদায় নিলে । মিটারে ২০০ মাইল উঠেছে। সুতরাং আজ আমরা মাত্র ৪২ মাইল এসেছি । ২৭শে সেপ্টেম্বর রবিবার—তোপচাচি বাংলোর এক মাইল দূর থেকে পরেশনাথ পাহাড় আরম্ভ হ’য়ে রাস্তার ডানদিক্ দিয়ে বরাবর সাত আট মাইল এসে ইন্ত্রি ষ্টেশনের কাছে শেষ হ’য়েছে । আজ তিন দিন পর আবার রেলের লাইনের সঙ্গে দেখা হ’ল । একটা ছোট নদী মহুয়া বনের ভেতর থেকে এসে একেবারে রাস্তার ওপর দিয়ে চলে গেছে। পাহাড়ী নদী-জল বেশী নেই, ছোট ছোট পাথরের ওপর দিয়ে জল যাওয়ার শুধু কুলকুল শব্দ। শরতের পরিষ্কার আকাশ, ভোরের মিঠে হাওয়া ও দূরের মহুয়া বনের নিস্তব্ধতায় চারদিকে বেশ একটা স্নিগ্ধ ভাব এনেছে । রাস্ত মন্দ নয়, তবে উচু নীচু । ছোট খাট পাহাড় জঙ্গল পিছনে ফেলে রেখে চলেছি । আজ বিজয়া দশমী । বিহারীদের দশহর। ; তারা দলে দলে পূজা ও মেলা দেখতে চলেছে। পথের দুপাশে ঘন গাছের সারি। ক্রমশঃ যাত্রীর দল বাড়তে লাগল। শুনলাম বাগোদরে মেলা বসেছে—উৎসববেশে সজ্জিত নরনারী দলে দলে বাগোদর অভিমুখে যাচ্ছে । এক এক করে তাদের সকলকে পিছনে রেখে আমরা বাগোদরে পৌঁছলাম। লোকে লোকারণ্য, রাস্তার দু’পাশে সারি সারি দোকান ব’সে গেছে, চার পাশে মাঠে তামাসা দেখান হচ্ছে। আমরা মেলার কাছে মাঠে একটা বড় গাছের তলায় দুপুরের জলযোগের জন্য নেমে পড়লাম । বাগোদর থেকে বাদিকের রাস্তায় হাজারিবাগ ও ডান দিকের রাস্তা দিয়ে গিরিডি যাওয়া যায়। ঐ দু’জায়গাতে ধাওয়ার জন্য মোটর সাভিস আছে । লোকেরা প্রথমে দূর থেকে কৌতুহল-দৃষ্টিতে আমাদের দেখছিল। ক্রমে বোধ হয় তাদের সাহস বেড়ে গেল। একে একে পুরুষ ও পরে তাদের সঙ্গিনীরাও কাছে এসে আমাদের ঘিরে দাড়াল। এদের অধিকাংশের মুখ চোখ দেখে ঠিক సెసె=సి সাইকেলে আর্য্যাবর্ত ও কাশ্মীর ዓፄ> খাটী বিহারী বা সাওতাল ব’লে মনে হয় না। তবে এরা সরল ও কৰ্ম্মঠ ব’লেই মনে হ’ল। এদের ভদ্রোচিত আচার ব্যবহার বেশ চোখে লাগে। গরুর গাড়ী থেকে এক বৃদ্ধ এসে মেলায় নামূল। কয়েকটি বালিকা ও তরুণী তাকে দেখে প্রত্যেকে মাথা নত ক’রে দু’বার তার পায়ে হাত ঠেকিয়ে নিজেদের মাথায় ছোয়ালে ও পরে গলায় আঁচল জড়িয়ে প্রণাম কবুলে । এদের শীলতা ও শিষ্টতা আমাদের চেয়ে কিছু কম নয়। আজ বিপরীত দিক্‌ থেকে হাওয়া বইছে ; স্বতরাং উচু নীচু রাস্তা দিয়ে যাওয়া একটু বেশ শক্ত হয়ে দাড়াল । মেলা হ’তে দলে দলে লোক ফিরছে। রাস্তায় বড় ভিড় । পুরুষরা গায়ে হলদে চাদর ও হাতে লাঠি নিয়ে গম্ভীর ভাবে চলেছে । মেয়ের রঙ-বেরঙের ছোপান কাপড় প’রে, মাথায় ফুল গুজে, মেলা থেকে পুথির মালা আরসি চিরুণী কিনে হাসি মুখে বাড়ী ফিরছে। ছোট ছেলেদের এক হাতে খাবার, আর এক হাতে তার মায়ের কাপড় ধ’রে যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করছে। বছরের পরবের দিন, সকলের মুখে চোখে যেন একটা হাসিখুলী ভাব লেগে রয়েছে। সন্ধ্যা ৬টার সময় আমরা বহিতে পেীছলাম। এটি একটি বেশ বড় চট । এখান থেকে রাস্তার ডান পাশে বজোলী যাবার পথ ও বাদিকের পথ দিয়া হাজারিবাগ যাওয়ার যায় । শ্ৰীযুত রাধিকানাথ গুইয়ের অনুগ্রহে থাকুবার জায়গা পাওয়া গেল। এখানেও পূজার ধূম কম নয়। প্রতিমা বিসর্জন দেখে ফিরতে অনেক রাত হ’য়ে গেল ব’লে দোকান বন্ধ-কোন খাবার যোগাড় করতে পারা গেল না । আজ মোট ৫৮ মাইল এসেছি । কলকাতা থেকে ২০৮ মাইল আসা হ’ল । ২৮শে সেপ্টেম্বর সোমবার— কাল রাত্রে কিছু খাওয়া হয় নাই ব’লে নিজের রাধবার ব্যবস্থা করলাম। বাজার থেকে চাল ডাল ইত্যাদি কিনে এনে খিচুড়ী রান্না হ'ল। এখানে শ্রযুক্ত অশ্বিনীকুমার দালালের সঙ্গে আলাপ হ’ল। ইনি বেনারস হিন্দু