পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা)। তাহার আলো গাছের পাতায় প্রাণের ধ্বনি ফুটায়, পাখীর বাসায় ভোরের প্রভাতী গান জাগায় । আবার :– তোমার অালো ভালোবেসে পড়েছে মোর গায়ে এসে হৃদয়ে মোর নির্মুল হাত বুলালে বুলালে! সাধনার দ্বারা মনের উন্নতি না হইলে স্থষ্টির আনন্দবহন্ত বোধগম্য হয় না । ক্ষুদ্র গণ্ডীর মধ্যে আবদ্ধ থাকিলেই স্থখ দুঃখ ও মৃত্যুর ছবি আমাদের চিত্তকে আচ্ছন্ন করিয়া ফেলে । বৃহতের সহিত আমাদের চিত্তের যোগ নাই, তাই আমরা পলে পলে আনন্দের স্বচ্ছ অনাবিল অমৃতধারা হইতে বঞ্চিত হইতেছি ! কবি গাহিতেছেন – তোমার অসীমে প্রাণমন লয়ে যতদূরে আমি যাই কোথাও মৃত্যু কোথাও দুঃখ কোথাও বিচ্ছেদ্ধ নাই । মৃত্যু সে ধরে মৃত্যুর রূপ দুঃখ হয়েছে দুঃখের কূপ তোমা হতে যবে হইয়ে বিমুখ আপনার পানে চাই । জীব অজ্ঞানতাবশতঃ আপনার দুঃখ আপনিই স্বষ্টি করে । সে পুর্ণ’ হইতে আপনাকে স্বতন্ত্র করিয়া রাখিয়াছে বলিয়া প্রতিনিয়ত শত শত অভাবের অনুভূতি তাহাকে বিচলিত করিতেছে। হে পুর্ণ তব চরণের কাছে যtহ। কিছু সব আছে আছে আছে, ন ই নাই ভয় সে শুধু আমারই নিশি দিন কাদি তাই ! "াহা কিছু যায় আর যাহা কিছু থাকে”—সবি যদি তাহাকে সমর্পণ করা যায়, তবে সকলে তাহার “মহামহিমায়” জাগিয়া রয়। এই বিশ্বে কিছুই ব্যর্থ মহে—“যে ফুল না ফুটিতে, ঝরেছে ধরণীতে, যে নদী মরু পথে হারাল ধারা”—কবি বলিতেছেন তাহারা কেহই ব্যর্থ হয় নাই ; জগৎ স্বামীর কাছে তাহণদের সার্থকতা আছে। আমার অনাগত— আমার অনাহত - তোমার বীণতারে বাজিছে তার|स्रiनिश् िखानि उt७ श्व नि दtद्र। এই বিশ্বের প্রতি অণুপরমাণুর মাঝে যে সেই অব্যয় পুরুষ বিরাজমান । দৃশ্য জগতের সমস্ত বস্তুই যে র্তাহাকে গীতাঞ্জলি ও অতীন্দ্রিয় তত্ত্ব ૧ઝક দিয়া “ভর” ! তবে আর কি করিয়া কোন জিনিস ব্যর্থ হয় । কবি বলিতেছেন "এই নিখিল আকাশ ধরা, এ যে তোমায় দিয়ে ভরা”—এই গভীর সত্যটি যেন তাহার হৃদয়ে স্বতঃই ফুরিত হয় ! আনন্দই জীবের চরম লক্ষ্য, জীব জ্ঞানে অজ্ঞানে আনন্দের পিপাসায় পিপাসাৰ্ত্ত । উপনিষদ বলেন, আনন্দ হইতে জীবের জন্ম, আননের মাঝেই জীবের পরিপুষ্টি ও আননেই তাহার শেষ পরিণতি । সুতরাং জীব যে আনন্দ চায়, ইহা স্বভাবিক । জ্যোতিৰ্ম্ময় আনন্দপুরুষ যে বহু হইয়া রূপের মধ্যে প্রকাশ পাইয়াছেন, উপনিষদ ও শ্রুতির মধ্যে এই যে তত্ত্ব নানা ভাবে গীত হইয়াছে, রবীন্দ্রনাথ কবিত্বের মাধুধ্যে সেই জটিল তত্ত্ব সরস করিয়া ফুটাইয়। তুলিলেন— আকাশ তলে উঠলে ফুটে আলোর শতদল ৷ পাপ-ড়িগুলি থরে থরে ছড়াল দিকৃ দিগস্তরে ঢেকে গেল অন্ধকারের নিবিড় কালে। জল । জ্যোতিতে জ্যোতিতে সমস্তই জ্যোতিৰ্ম্ময় হইয়া গেল। চতুর্দিকে প্রাণের প্রবাহ, চারিদিকে সঙ্গীতের অমৃত ধারা, অনন্ত আকাশ ব্যাপিয়া অমৃতপুরুষ বিরাজমান, তার “গগনভর। পরশপানি লইয়া সকল গায় ।” এই অনন্ত প্রাণসাগরে ডুব দিয়া কবি আপনার বক্ষ ভরিয়া লষ্টতেছেন, হৃদয় আনন্দে পুর্ণ হইয়। উঠিতেছে —“আমার ঘিরে আকাশ ফিরে, বাতাস বয়ে যায়।” আনন্দের আলোকময় পাপড়িগুলি দিক-দিগন্তরে ছড়াইল, কবি অনুভব করিতেছেন তিনি সেই জ্যোতিৰ্ম্ময় শতদুলের মাঝখানে “সোনার কোষে” পূর্ণানন্দে বিভোর রহিয়াছেন —“আমায় ঘিরে ছড়ায় ধীরে আলোর শতদল !” ইহাতে কবি জীব ও ব্রহ্মের অন্তরঙ্গ সম্বন্ধের আভাস দিলেন। জীব না থাকিলে ব্রহ্মকে বুঝিত কে, জীব না থাকিলে তাহার প্রেম, তাহার করুণা কোথায় কাহাকে আশ্রয় করিত ?—“আমায় নইলে, ত্রিভুবনেশ্বর, তোমার প্রেম হত যে মিছে।”—প্রেমের পুর্ণাহুভূতি না হইলে এত বড় কথা বলা যায় না । ভক্ত বলিতেছেন, হে পূর্ণ, তুমি আমাকে লইয়াই পূর্ণ, আমাকে ছাড়িয়া নহে।